ইন্টারের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বার্সার জন্য সুখবর
Published: 2nd, May 2025 GMT
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ইন্টার মিলানের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করেছে বার্সেলোনা। ফিরতি লেগের আগে কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিল দলটি। কারণ, ইনজুরিতে পড়েছেন তাদের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার জুলেস কুন্ডে। তবে সেই দুশ্চিন্তার মাঝে আশার আলো দেখিয়েছেন বার্সা কোচ হান্সি ফ্লিক।
দীর্ঘদিন পর দলের নিয়মিত গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান ফিরছেন মাঠে। হাঁটুর ইনজুরির কারণে গত সেপ্টেম্বর থেকে বাইরে থাকা এই জার্মান গোলরক্ষক লা লিগায় রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ম্যাচে খেলবেন বলে জানিয়েছেন ফ্লিক। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি চ্যাম্পিয়নস লিগে ইন্টারের বিপক্ষেও মাঠে নামবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কোচ ফ্লিক বলেন, “মার্ক ফিরছে। সে খুব ভালো অবস্থায় আছে। অনুশীলনে তার পারফরম্যান্স দারুণ। এখন আমাদের দ্বিতীয় লেগের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।”
আরো পড়ুন:
রোনালদোর দল লা লিগা থেকে অবনমিত
বার্সার সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান কমাল রিয়াল
এদিকে বার্সা কিছুটা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দল সাজাবে ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ম্যাচে। তবে প্রতিপক্ষ দ্বিতীয় বিভাগে নেমে গেলেও, ম্যাচটি হালকাভাবে নিচ্ছেন না ফ্লিক। তিনি বলেন, “লা লিগা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা। এটা সত্যিকারের পরিশ্রমের ফল। ভায়াদোলিদ এখনো লা লিগার দল। তাদের যথাযথ সম্মান জানিয়ে আমরা মনোযোগ ধরে রাখছি। এমন ম্যাচেই লিগ শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।”
এই মুহূর্তে বার্সেলোনা লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে রয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে চার পয়েন্ট এগিয়ে। আগামী রোববার ( ১১ মে) এল ক্লাসিকো। তার আগে পাঁচ ম্যাচ বাকি থাকায় ফ্লিক শিরোপা দৌড়ে সামান্য ভুলেরও সুযোগ রাখতে চান না।
তবে কিছু ইনজুরি সমস্যা এখনও বার্সার চিন্তার কারণ। আলেহান্দ্রো বালদে, রবার্ট লেভানডভস্কি ও মার্ক কাসাদো এখনও মাঠে ফিরতে পারেননি। তবে তারা ইন্টারের বিপক্ষে ফিরতি লেগে খেলার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ইন ট র
এছাড়াও পড়ুন:
গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও
রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।
গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।
পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।”
আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”
গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।”
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।
ঢাকা/আমিরুল/ইভা