‘বলিউড বাদশা’ তকমা নিয়ে ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন শাহরুখ খান। তার খ্যাতি ছড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী। ৬০ বছর বয়সি এই তারকার সংগ্রামের গল্প অনেকেরই জানা। কিন্তু অতীত ভুলেননি শাহরুখ। তাই গর্ব করেই বলেন— “আমি খুবই দরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছি।”

শাহরুখের বিনয়-ধৈর্যে মুগ্ধ ভক্ত-অনুরাগীরা। যা হোক, করন জোহর সঞ্চালিত একটি অনুষ্ঠানে দীপিকা পাড়ুকোনকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন শাহরুখ। এ আলাপচারিতায় তরুণদের যেমন পরামর্শ দিয়েছেন, তেমনি আত্ম উপলদ্ধির কথাও শেয়ার করেছেন।

তরুণদের পরামর্শ দিয়ে শাহরুখ খান বলেন, “আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন সাহসী ছিলাম, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আমার মনে হয়, আমি একটু বেপরোয়া ছিলাম। এ রকমটা থাকার জন্য আমি নিজেকে ধন্যবাদ জানাই।”

বয়সের সঙ্গে মানসিক পরিবর্তনের প্রসঙ্গে শাহরুখ খান বলেন, “আপনার যখন তরুণ বয়স, তখন অনুভব করবেন— আপনি সব জানেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আপনি তা জানেন না। আপনি দ্বিধা-দ্বন্দ্বহীন। আমাদের যত বয়স বাড়ে, ভয়, উদ্বিগ্নতা এবং চিন্তাশীলতা ততটাই দখল করে নেয়।”

শাহরুখ খানের পরবর্তী সিনেমা ‘কিং’। এতে তার সহশিল্পী দীপিকা পাড়ুকোন। মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকার কারণে সিনেমাটির কাজ পিছিয়ে নেন শাহরুখ। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ‘কিং’ সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নেবেন দীপিকা পাড়ুকোন।

সিনেমাটির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আরো অভিনয় করবেন— অভিষেক বচ্চন, জয়দীপ আহলাওয়াত। আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা। এটি পরিচালনা করছেন সিদ্ধার্থ আনন্দ।

১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা।

দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী।

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।

একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গেয়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা।

অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। এ ছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেন মোট পাঁচবার।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ক র

এছাড়াও পড়ুন:

পাথরঘাটায় কোস্টগার্ড স্টেশনে জেলেদের হামলা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি

বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলায় কোস্টগার্ড স্টেশনে হামলা চালিয়েছে জেলেরা। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জেলেরা কোস্টগার্ডের একটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ড ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করে। এতে ১২ জন আহত হয়েছেন। 

মঙ্গলবার রাত ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলেরা কোস্টগার্ড স্টেশন ঘিরে রেখেছেন। ভেতরে অবরুদ্ধ কোস্টগার্ড সদস্যরা। নৌ-বাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে অবৈধ দুটি ট্রলার আটক করে কোস্টগার্ড। এর প্রতিবাদে পাঁচ শতাধিক জেলে সন্ধ্যা থেকে কোস্টগার্ড  স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ করেন। রাত ৯টার দিকে তারা কোস্টগার্ডের দুটি যানবাহন ভাঙচুর করে। এ সময় কোস্টগার্ড সদস্যরা লাঠিচার্জ শুরু করেন। পরে জেলেদের সঙ্গে মৎস্য ব্যবসায়ীরা অংশ নিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

আটক দুটি ট্রলারের মালিক ও জেলা টলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম কোম্পানি বলেন, ‘সাগরে ৫৮ দিন মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ১১ জুন। নিষেধাজ্ঞার সময়ে মাছ ধরার জন্য ট্রলার প্রতি ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে কোস্টগার্ডকে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর আবারও টাকা চাওয়া হচ্ছে। যেসব টলার মালিক টাকা দেয়নি তাদের তালিকা চাচ্ছিল মাসুম কোম্পানির কাছে।  তিনি রাজি না হওয়ায় তার বৈধ চলার অবৈধ আখ্যা করে আটক করেছে।’

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদি হাসান বলেন, হামলার বিষয়টি দুঃখজনক। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। ঘটনাস্থলে  নৌ-বাহিনী পৌঁছেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ