ভারতে কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এ নিয়ে প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে নতুন সব তথ্য। পেহেলগামের সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে এবার উঠে এলো পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরের নাম।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ অভিনেত্রীর একটি পোষ্ট রীতিমতো ভাইরাল হয়ে উঠেছে। যে পোষ্টে হানিয়া আমির দাবি করেছেন- 'কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী দায়ী।' শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় সাহায্য চেয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে নালিশও জানান তিনি।

যেখানে তিনি লিখেছেন, 'আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে অনুরোধ করছি, আমরা পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ, আমরা ভারতীয়দের কোনো ক্ষতি করিনি। কিছু জঙ্গি ও পাকিস্তানি সেনা রয়েছে কাশ্মীরের ঘটনার নেপথ্যে, যার জন্য পাকিস্তানের বিনোদন জগতের বাসিন্দাদেরও ভুগতে হচ্ছে। তাই যা পদক্ষেপ করার, তা জঙ্গি ও পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে করুন। এখানকার সাধারণ মানুষকে ছেড়ে দিন।'

পোস্টটি এখন ভাইরাল। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন পাকিস্তানের এই অভিনেত্রী। কারণ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। সামাজিক মাধ্যমের ওই পোস্ট হানিয়ার কিনা, তা জানতে নেট দুনিয়ার বাসিন্দারা ক্রমাগত প্রশ্ন করে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রীকে। শেষমেশ তাই নীরবতা ভাঙতে বাধ্য হয়েছেন হানিয়া। এ নিয়ে এক বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, 'সম্প্রতি আমার নাম করে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভুয়ো মন্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। 

এ বিষয়ে আমি সরাসরি বলছি, আমি মোটেই এ মন্তব্য করিনি। পোস্টে এ রকম কোনো শব্দ আমি ব্যবহারও করিনি। এই মনোভাবও সমর্থন করি না। এর পুরোটাই নকল ও মিথ্যে। আমার ব্যক্তিত্ব ও বিশ্বাসকে এ মন্তব্য ভুলভাবে তুলে ধরছে।'

এ নিয়ে হানিয়া আরও বলেছেন, 'বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর ও আবেগপ্রবণ। এ ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন ও তাদের পরিবারের প্রতি আমি সমব্যথী। এ ধরনের যন্ত্রণায় সহানুভূতি প্রয়োজন। রাজনীতি নয়। মৌলবাদীদের কাজকর্ম দিয়ে কখনোই একটি দেশ ও সেই দেশের মানুষকে বিচার করবেন না।'

এ খবরের পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার ও সংবাদ প্রতিদিন জানিয়েছে, হানিয়ার পোষ্ট নিয়ে শুরুতে বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। পোস্টটি যে ভুয়া, তা বুঝতে খুব একটা সময় লাগেনি। কারণ, পেহেলগাম হামলার পর ভারতীয় সামাজিক মাধ্যমে পাকিস্তানি শিল্পীদের নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 
হানিয়া আমির

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ ন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

আমরা ফিলিস্তিন টাইম জোনে ঢুকেছি: শেষ জাহাজ আটকের আগে ভিডিও বার্তায় শহিদুল

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র কাছ থেকে আলাদা অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। আজ শুক্রবার দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেছেন।

তবে শহিদুল আলমের এই ভিডিওবার্তা ফেসবুকে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আজ সুমুদ ফ্লোটিলা’র সর্বশেষ জাহাজও আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

জাহাজ আটক হওয়ার আগে গাজামুখী নৌযান থেকে দেওয়া ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, ‘আজ ৩ অক্টোবর ২০২৫। দেখতেই পাচ্ছেন, ঝকঝকা রোদ। আজ আমরা ফিলিস্তিন টাইম জোনে এসেছি। সুমুদ ফ্লোটিলায় যারা গিয়েছিলেন, তাঁরা ভিন্নভাবে গিয়েছিলেন। আমরা আলাদাভাবে যাচ্ছি। এভাবেই আমাদের পরিকল্পনা ছিল যে, ওদের ওপর কিছু হলেও আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি। জানতে পেরেছি, ইসরায়েল তাদের (সুমুদ ফ্লোটিলা) সব জাহাজ আটক করেছে।’

অনেক বড় জাহাজ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে শহিদুল আলম বলেন, ‘আমাদেরটা সবচেয়ে বড় জাহাজ। আমাদের সঙ্গে আরও আটটি ছোট নৌকা পাড়ি দিয়েছিল। তারা আমাদের একটু আগে পাড়ি দিয়েছিল। আমরাসহ এই মুহুর্তে এই নয়টি যানবাহন মুক্ত আছে। আমরা আজকে ফিলিস্তিনি টাইম জোনে এসেছি। এখনো দূরত্ব আছে। তবে আজ আমরা এই আটটি ছোট নৌকাকে পার হয়ে যাব। এরপর থেকে আমাদের এই জাহাজটিই সবচেয়ে আগে থাকবে। এতে বোঝাই যাচ্ছে, আক্রোশটা আমাদের ওপরই পড়বে। কিন্তু আমরা একেবারেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আমরা একেবারেই গাজা পর্যন্ত যাব এবং কোনো বাধাই গ্রহণ করব না।’

ত্রাণ নয়, অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্য নিয়ে গাজার দিকে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন শহিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘এটা বলা প্রয়োজন, সুমুদ ফ্লোটিলায় যে নৌকাগুলো ছিল, তাদের কিন্তু দায়িত্ব ছিল ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার। আমরা কিন্তু ত্রাণের জন্য যাচ্ছি না। আমরা একটা অবৈধ অবরোধকে ভাঙব, সেই উদ্দেশ্য নিয়ে যাচ্ছি।’

শহিদুল আলম বলেন, ‘এই নৌকাতে অনেক সাংবাদিক আছেন, চিকিৎসক আছেন। সঙ্গে অন্য কর্মীরাও আছেন। কিন্তু আমরা ত্রাণ দেওয়ার অজুহাতে যাচ্ছি তা না। আমরা লড়াই করতে যাচ্ছি, ফিলিস্তিনে আমাদের থাকার–যাওয়ার অধিকার আছে। ইসরায়েল যত মানুষ খুন করেছে এবং যত সাংবাদিক ও যত চিকিৎসক খুন করেছে, সেটার প্রতিবাদ আমরা জানাব।’

শহিদুল আলম আরও বলেন, ‘গত রাতেই মেডিসিন সান ফ্রন্টিয়ার্সের (এমএএফ) ১৪ জন চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে। আমরা দেখব, ফ্রান্স সেটার ক্ষেত্রে কী করে। এ পর্যন্ত তারা তেমন কিছুই করেনি, মিষ্টি কথা বলা ছাড়া। এখন কথার সময় পেরিয়ে গেছে। এখন লড়াইয়ের সময়, এখন কাজ করার সময়। আমরা সেটাই করছি নাগরিক হিসেবে।’

বাংলাদেশি এই আলোকচিত্রী বলেন, ‘আমরা যেটা করতে পারি, যেহেতু এই দেশগুলোর নেতা–নেত্রীরা অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সে ক্ষেত্রে নাগরিক হিসেবে আমরা যেটা করতে পারি, সেটাই আমরা করতে চাইব। আপনাদের ভালোবাসাই আমাদের অনুপ্রেরণা।’

শহিদুল আলম বলেন, ‘যেমনটা দেখা যাচ্ছে, আজ সকালে সমুদ্র বেশ শান্ত। এটা অপ্রত্যাশিত, কারণ মুহূর্তের মধ্যেই এটা বদলে যেতে পারে। গতকাল খুব খারাপ অবস্থা ছিল। আমি একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তবে এখন পুরো চাঙা, লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।’

‘আমরা জয়ী হব, ফিলিস্তিন মুক্ত হবে’ জানিয়ে ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, তাঁদের জাহাজে ৯৬ জন মানুষ আছেন। এরঁ মধ্যে ৮২ জন গণমাধ্যম  ও চিকিৎসা পেশাজীবী। এ ছাড়া আয়োজক, ফ্লোটিলা কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য ও জাহাজের ক্রুরা আছেন।

আরও পড়ুনফ্লোটিলা আটক আন্তর্জাতিক ‘জলদস্যুতা’, বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ: দেখুন ছবিতে২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ