হবিগঞ্জ শহরের টাউন মডেল স্কুল পুকুরকে আগের রূপে ফিরিয়ে দিতে খননকাজ শুরু করেছে হবিগঞ্জ পৌরসভা। পুকুরটিতে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার পর এলাকাবাসীর বাধা এবং হাইকোর্টের রুল জারির পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই কাজ শুরু করেছে।

হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যালয়ের সামনে টাউন মডেল স্কুল পুকুরটি অবস্থিত। সাঁতার কাটা, গোসলসহ আশপাশের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণ হতো প্রায় ৭৫ শতক আয়তনের শহরের ঐতিহ্যবাহী এ পুকুর থেকেই।

আজ শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে পুকুরের খননকাজ চলছে। পুকুর পুনরুদ্ধারের খননকাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীও বেশ খুশি। খননকাজ দেখতে সেখানে অনেকেই এসেছিলেন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ময়লা–আবর্জনা ফেলে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছিল। পাশাপাশি হবিগঞ্জ পৌরসভা এ পুকুরে অননুমোদিতভাবে একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এর প্রতিবাদে শহরের অধিবাসী ও পরিবেশবাদীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। একপর্যায়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সম্প্রতি হাইকোর্টে হাইকোর্টে একটি মামলা করে। গত ২৭ জানুয়ারি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের দ্বৈত বেঞ্চ রুল জারি করেন। পাশাপাশি আদালত পুকুর দুটি ভরাটের এবং সেখানে সব ধরনের নির্মাণকাজের ওপর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এরপর পৌরসভা দুটি পুকুরের মধ্যে হবিগঞ্জ টাউন মডেল স্কুল পুকুরটির খনন কাজ শুরু করে।

বেলার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ সাহেদা আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ রুল জারির পাশাপাশি আদালত পুকুর দুটি ভরাটের এবং সেখানে সব ধরনের নির্মাণকাজ এর ওপর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। আমরা এ আদেশের বিপরীতে টাউন মডেল স্কুল পুকুরটি খনন করতে দেখতে পেলেও অপর (চন্দ্রনাথ) পুকুর পুনরুদ্ধারে দৃশ্যমান কোনো কাজ এখনো দেখতে পাচ্ছি না। আশা করছি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’

হবিগঞ্জ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী জাবেদ ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী শহরের টাউন মডেল স্কুল পুকুরটি খনন কাজ শুরু করেছি। চন্দ্রনাথের বিষয়ে সময় প্রার্থনা করা হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: খননক জ প রসভ শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ