সোশ্যাল মিডিয়ার এই তুমুল সময়েও টুকটাক লেখালেখি করে তানিম। প্রথম সারির একটি পত্রিকায় প্রকাশিতও হয় তার লেখা। সেই লেখার নিচে প্রকাশিত হয় লেখকের মেইল অ্যাড্রেস। এই মেইল টুকে নিয়ে ঢাকার তানিমকে মেইল করেন প্রিয়ন্তি; সুদূর রাজশাহী থেকে। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে তানিম আর প্রিয়ন্তির মধ্যে। দু’জনের সঙ্গে একসময় যোগ দেন তিনা। বছরখানেক পর প্রিয়ন্তির পড়ালেখা এবং পরিবারের অজুহাতে দূরে সরে গেলেও তানিম আর তিনার বন্ধুত্ব হয় আরও গাঢ়। একসময় তিনা রাজশাহীর পড়ালেখা শেষ করে এসে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাদের বন্ধুত্বের রূপরেখা ছড়িয়ে পড়ে আরও সুন্দরের দিকে। তিনার ছোঁয়ায় তানিম যেমন নিজেকে গুছিয়ে নেন, তেমনি তিনাও অপরিচিত ইট-কাঠ-পাথরের ঢাকা শহরে তানিমকে পেয়ে দুদণ্ড শান্তি পান। ফলে তাদের বন্ধুত্ব রূপ নেয় নতুন দিকে। ভালো বন্ধু হয়ে ওঠেন জীবনসঙ্গী। তানিম আর তিনা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লেও সেই বন্ধুত্বের
সময়টুকুই তাদের কাছে আজ সোনালি অতীত। খুব মনে পড়ে সেই হারানো দিনগুলোর কথা। কেন?
কারণ, তাদের সেই বন্ধুত্বে ছিল না কোনো চাওয়া-পাওয়ার বাধ্যবাধকতা। নেই কোনো স্বার্থ। কঠিন বাস্তবতার ভেতরও বন্ধু কখনও বন্ধুর স্বার্থপরতার কারণ হয় না। নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই যুগ যুগ ধরে বন্ধুত্বকে করেছে মহান।
বন্ধুত্বের যোগ্যতা
আপাদমস্তক কথাটা কেউ মানতে না পারলেও বন্ধুত্ব করতেও যোগ্যতা লাগে। লাগবে না কেন? সবার কি উদার মানসিকতা থাকে? জানেনই তো, বন্ধুত্ব মানেই নিঃস্বার্থ ত্যাগ। চলুন বন্ধুত্বের যোগ্যতা নিয়ে তাত্ত্বিকরা কী বলেন, তা জেনে নিই–
- পরের ভালো করার মানসিকতা থাকা চাই।
- সহানুভূতিটাকেও প্রাধান্য দিতে হবে।
- কঠিন সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও নিজের সততার প্রমাণ দেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।
- পারস্পরিক চিন্তা-ভাবনা ও মূল্যবোধের গুরুত্ব দেওয়াটা লালন করতে হবে।
- কম্প্রোমাইজ করার ক্ষমতা থাকা এবং বিপদে বন্ধুকে মানসিক সমর্থন দিতে হবে।
- বিশ্বস্ততার সঙ্গে পরস্পরের সঙ্গ উপভোগ করা।
- প্রয়োজনে সবার জন্য ইতিবাচক, গভীর কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করতে হবে।
- এবং আপনার কাজ নিয়ে বন্ধুদের ভেতর কোনো সংশয় থাকবে না ইত্যাদি।
এবার নিজের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখুন তো, এই গুণাবলি আছে কিনা আপনার ভেতর। যদি থাকে তাহলে বুঝতে হবে, আপনি চমৎকার ক্ষমতাবান বটে! আপনার সঙ্গ পাওয়ার জন্য বসে আছে অনেক আকাঙ্ক্ষিত বন্ধুপাগল মানুষ।
ছেলে বন্ধু নাকি মেয়ে বন্ধু
বন্ধু যে শুধুই বন্ধু তা এখন সবাই জানে। ছেলেমেয়ের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই আধুনিক বন্ধুত্বে। আর গার্লফ্রেন্ড শব্দটাও কেমন বেমানান মনে হয় এখন। এতে তো আপনার বন্ধুকে খাটো করাই হয়; নাকি?
অনলাইন বন্ধুত্ব
সময়ের পরিক্রমায় আমরা হয়েছি ডিজিটাল। সেই সময়ের পত্রমিতালী, কলমবন্ধু বা পেনপাল এখন সময় অপচয়ের মতো। এত ধৈর্যইবা কোথায় আমাদের? সেই অফলাইন বন্ধুত্ব এখন অচল। এখন আমরা সেসব ভাবতেই পারি না। আমাদের জন্য এখন আছে ফেসবুক, এক্স, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, হাই ফাইভ, গুগল প্লাস, নেটলগ, বেবু, ট্যাগড, বাডু, ঝিং, নিং, অরকুট এবং আরও কত কত অনলাইন মাধ্যম। যদিও আমাদের দেশে ফেসবুকই সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন ফ্রেন্ডশিপ ওয়েবসাইট। ফেসবুকের মাধ্যমে খুব সহজেই বন্ধুত্ব গড়া যায় একজন আরেকজনের সঙ্গে। খুব সহজেই পাঁচ হাজার জনের বিশাল জগৎ গড়ে তোলা যায় ফেসবুকের মাধ্যমে।
বন্ধুত্বের প্রকারভেদ
যেভাবে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে আমাদের সমাজে–
- সেই এটুকু বয়স থেকে বেড়ে ওঠার মাধ্যমে।
- স্কুল-কলেজে সহপাঠীর মাধ্যমে।
- একই পেশায় কাজ করার কল্যাণে।
- সমবয়সী ছেলেদের মা-বাবার সঙ্গে।
- একই ব্যাপারে আগ্রহী মা-বাবার সঙ্গে।
- একই বয়সী এবং একই লিঙ্গেও গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব।
এবার আপনার বন্ধুত্বের কোন ক্যাটেগরিটা পাকাপোক্ত, সেটি নিজেই ভেবে দেখুন তো! u
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বন ধ ত ব র বন ধ ত ব বন ধ ত ব র ই বন ধ ফ সব ক আম দ র আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
ইতিহাসের দ্রুততম মানবের এখন সিঁড়ি ভাঙতে দম ফুরিয়ে আসে
হঠাৎ মনে হতে পারে, কথাবার্তায় লোকটা এখন তো বেশ সাদামাটা। তা-ই কি?
মোটেও না। চেনা সেই ক্যারিশমা যে চলে যায়নি, সেটা বোঝা গেল ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে উসাইন বোল্ট যখন সোজা বলে দিলেন, কেন তাঁর রেকর্ড আজও কেউ ভাঙতে পারেননি। মনে হবে, এই তো সেই বোল্ট। আবার একটু ধাক্কাও লাগবে পরের কথাগুলো শুনলে। একসময়ের সুপারম্যান এখন তাহলে এমন আটপৌরে জীবন কাটাচ্ছেন! যে জীবনে নাকি সিঁড়ি ভেঙে ওঠার সময় তাঁর দম ফুরিয়ে আসে! অথচ এই লোকটাই একসময় ১০০ মিটার দৌড়েছেন ৯.৫৮ সেকেন্ডে।
আরও পড়ুনআকাশছোঁয়ার অভিযানে ডুপ্লান্টিসের আবারও বিশ্ব রেকর্ড১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫টেলিগ্রাফের সঙ্গে সাক্ষাৎকারটা বোল্ট দিয়েছেন টোকিওতে। বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ দেখতে গেছেন সেখানে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ২০১৭ সালে অবসরের পর এই প্রথম অ্যাথলেটিকসের কোনো বড় আসর দেখতে গেলেন আটবারের এই অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন। জাপানি দর্শকেরা অবশ্য তাঁকে দেখে ঠিকই উল্লাসে ফেটে পড়েছে। তবে বোল্ট এখন বদলে গেছেন অনেকটাই। জ্যামাইকায় এখন তাঁর ঘরোয়া জীবনটা আলোয় থাকার সময়ের সেই জীবনের সঙ্গে একেবারেই মেলে না।
অবসর নেওয়ার পর এই প্রথম অ্যাথলেটিকসের কোনো বড় আসরে এলেন বোল্ট। টোকিওতে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে