Samakal:
2025-12-13@15:25:14 GMT

বন্ধু মানে খোলা আকাশ

Published: 3rd, May 2025 GMT

বন্ধু মানে খোলা আকাশ

সোশ্যাল মিডিয়ার এই তুমুল সময়েও টুকটাক লেখালেখি করে তানিম। প্রথম সারির একটি পত্রিকায় প্রকাশিতও হয় তার লেখা। সেই লেখার নিচে প্রকাশিত হয় লেখকের মেইল অ্যাড্রেস। এই মেইল টুকে নিয়ে ঢাকার তানিমকে মেইল করেন প্রিয়ন্তি; সুদূর রাজশাহী থেকে। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে তানিম আর প্রিয়ন্তির মধ্যে। দু’জনের সঙ্গে একসময় যোগ দেন তিনা। বছরখানেক পর প্রিয়ন্তির পড়ালেখা এবং পরিবারের অজুহাতে দূরে সরে গেলেও তানিম আর তিনার বন্ধুত্ব হয় আরও গাঢ়। একসময় তিনা রাজশাহীর পড়ালেখা শেষ করে এসে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাদের বন্ধুত্বের রূপরেখা ছড়িয়ে পড়ে আরও সুন্দরের দিকে। তিনার ছোঁয়ায় তানিম যেমন নিজেকে গুছিয়ে নেন, তেমনি তিনাও অপরিচিত ইট-কাঠ-পাথরের ঢাকা শহরে তানিমকে পেয়ে দুদণ্ড শান্তি পান। ফলে তাদের বন্ধুত্ব রূপ নেয় নতুন দিকে। ভালো বন্ধু হয়ে ওঠেন জীবনসঙ্গী। তানিম আর তিনা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লেও সেই বন্ধুত্বের 
সময়টুকুই তাদের কাছে আজ সোনালি অতীত। খুব মনে পড়ে সেই হারানো দিনগুলোর কথা। কেন? 
কারণ, তাদের সেই বন্ধুত্বে ছিল না কোনো চাওয়া-পাওয়ার বাধ্যবাধকতা। নেই কোনো স্বার্থ। কঠিন বাস্তবতার ভেতরও বন্ধু কখনও বন্ধুর স্বার্থপরতার কারণ হয় না। নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই যুগ যুগ ধরে বন্ধুত্বকে করেছে মহান।
বন্ধুত্বের যোগ্যতা
আপাদমস্তক কথাটা কেউ মানতে না পারলেও বন্ধুত্ব করতেও যোগ্যতা লাগে। লাগবে না কেন? সবার কি উদার মানসিকতা থাকে? জানেনই তো, বন্ধুত্ব মানেই নিঃস্বার্থ ত্যাগ। চলুন বন্ধুত্বের যোগ্যতা নিয়ে তাত্ত্বিকরা কী বলেন, তা জেনে নিই–
- পরের ভালো করার মানসিকতা থাকা চাই।
- সহানুভূতিটাকেও প্রাধান্য দিতে হবে।
- কঠিন সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও নিজের সততার প্রমাণ দেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।
- পারস্পরিক চিন্তা-ভাবনা ও মূল্যবোধের গুরুত্ব দেওয়াটা লালন করতে হবে।
- কম্প্রোমাইজ করার ক্ষমতা থাকা এবং বিপদে বন্ধুকে মানসিক সমর্থন দিতে হবে।
- বিশ্বস্ততার সঙ্গে পরস্পরের সঙ্গ উপভোগ করা।
- প্রয়োজনে সবার জন্য ইতিবাচক, গভীর কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করতে হবে।
- এবং আপনার কাজ নিয়ে বন্ধুদের ভেতর কোনো সংশয় থাকবে না ইত্যাদি।
এবার নিজের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখুন তো, এই গুণাবলি আছে কিনা আপনার ভেতর। যদি থাকে তাহলে বুঝতে হবে, আপনি চমৎকার ক্ষমতাবান বটে! আপনার সঙ্গ পাওয়ার জন্য বসে আছে অনেক আকাঙ্ক্ষিত বন্ধুপাগল মানুষ।
 ছেলে বন্ধু নাকি মেয়ে বন্ধু 
বন্ধু যে শুধুই বন্ধু তা এখন সবাই জানে। ছেলেমেয়ের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই আধুনিক বন্ধুত্বে। আর গার্লফ্রেন্ড শব্দটাও কেমন বেমানান মনে হয় এখন। এতে তো আপনার বন্ধুকে খাটো করাই হয়; নাকি?
অনলাইন বন্ধুত্ব 
সময়ের পরিক্রমায় আমরা হয়েছি ডিজিটাল। সেই সময়ের পত্রমিতালী, কলমবন্ধু বা পেনপাল এখন সময় অপচয়ের মতো। এত ধৈর্যইবা কোথায় আমাদের? সেই অফলাইন বন্ধুত্ব এখন অচল। এখন আমরা সেসব ভাবতেই পারি না। আমাদের জন্য এখন আছে ফেসবুক, এক্স, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, হাই ফাইভ, গুগল প্লাস, নেটলগ, বেবু, ট্যাগড, বাডু, ঝিং, নিং, অরকুট এবং আরও কত কত অনলাইন মাধ্যম। যদিও আমাদের দেশে ফেসবুকই সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন ফ্রেন্ডশিপ ওয়েবসাইট। ফেসবুকের মাধ্যমে খুব সহজেই বন্ধুত্ব গড়া যায় একজন আরেকজনের সঙ্গে। খুব সহজেই পাঁচ হাজার জনের বিশাল জগৎ গড়ে তোলা যায় ফেসবুকের মাধ্যমে।
বন্ধুত্বের প্রকারভেদ
যেভাবে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে আমাদের সমাজে–
- সেই এটুকু বয়স থেকে বেড়ে ওঠার মাধ্যমে।
- স্কুল-কলেজে সহপাঠীর মাধ্যমে।
- একই পেশায় কাজ করার কল্যাণে।
- সমবয়সী ছেলেদের মা-বাবার সঙ্গে।
- একই ব্যাপারে আগ্রহী মা-বাবার সঙ্গে।
- একই বয়সী এবং একই লিঙ্গেও গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব।
এবার আপনার বন্ধুত্বের কোন ক্যাটেগরিটা পাকাপোক্ত, সেটি নিজেই ভেবে দেখুন তো! u

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন ধ ত ব র বন ধ ত ব বন ধ ত ব র ই বন ধ ফ সব ক আম দ র আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

তুরস্কের যে কৌশলে ‘জিহাদি’ শারা হয়ে উঠলেন সিরিয়ার ‘আমির’

২০১৯ সালের বসন্ত। রুশ বিমানবাহিনীর সহায়তায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ইদলিবের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। তৈরি হয় জরুরি পরিস্থিতি।

হায়াত তাহরির আল–শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল–জোলানি (আহমেদ আল–শারা নামে বেশি পরিচিত) তখন ইদলিবের কেন্দ্রস্থলে একটি নিরাপদ বাড়িতে তাঁর সহযোগী ও কয়েকজন বিদেশি অতিথির সঙ্গে বসেছিলেন। অতিথিদের মধ্যে তুর্কিও ছিল।

রাত বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে আল–শারা মন খুলে নিজের ব্যক্তিগত কিছু গল্প বলতে শুরু করলেন। ‘আমি ছোটবেলায় একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম’, ধীরে, গভীর মনোযোগ নিয়ে বলতে থাকেন তিনি। ‘স্বপ্নে দেখেছিলাম, আমি দামেস্কের আমির হয়েছি।’

আশ–শারা বলেছিলেন, সেই স্বপ্ন ছিল শুভ ইঙ্গিত, নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্রষ্টার একধরনের বার্তা। তাঁর বিশ্বাস ছিল, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধটা কঠিন হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেতা সম্ভব। তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা, যাঁদের মধ্যে সালাফি পটভূমির লোকও ছিলেন। বলেছিলেন, সেই স্বপ্ন সত্যি তিনি বিশ্বাস করতেন।

ওই গল্প বলার প্রায় পাঁচ বছর পর আহমেদ আল–শারা তাঁর বিদ্রোহী খেতাব কাটিয়ে সিরিয়ান আরব রিপাবলিকের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট, অর্থাৎ সেই ‘আমির’ হন, যার স্বপ্ন তিনি একসময় দেখেছিলেন।

রাত বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে আল-শারা মন খুলে নিজের ব্যক্তিগত কিছু গল্প বলতে শুরু করলেন। ‘আমি ছোটবেলায় একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম’, ধীরে, গভীর মনোযোগ নিয়ে বলতে থাকেন তিনি। ‘স্বপ্নে দেখেছিলাম, আমি দামেস্কের আমির হয়েছি।’

এখন জোলানি নিজের জন্মনাম আহমেদ আল–শারা নামে পরিচিত। ৪৩ বছরের শারা খুব দ্রুতই নিজের পরিচয় পাল্টে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। একসময়ের ‘জিহাদি সন্ত্রাসী’ (যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কথায়) থেকে এখন রাষ্ট্রনেতা তিনি। ইরাক থেকে সিরিয়া। দীর্ঘ সময় আল–কায়েদা ঘরানার বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীতে সক্রিয় থাকার পর এমন পরিবর্তন বিস্ময়করই বলা যায়।

আসাদ পরিবারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর শারা এখন সেসব বিশ্বনেতার সঙ্গেও মিশছেন, যাঁদের তিনি একসময় এড়িয়ে চলতেন। তিনি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জনসমক্ষে উপস্থিত হন, শ্মশ্রু ছোট করেছেন, পাগড়ি ও থোব (ঐতিহ্যবাহী দীর্ঘ ঢিলেঢালা পোশাক) ছেড়ে স্যুট–টাই পরছেন। সব মিলিয়ে এমন একটি নতুন রাষ্ট্র গড়ার চেষ্টা করছেন, যেখানে স্পষ্ট ইসলামি প্রভাব নেই।

কিন্তু এ রূপান্তর কীভাবে সম্ভব হলো

তুরস্কসহ আঞ্চলিক কর্মকর্তারা, সিরীয় সূত্র, বিশেষজ্ঞ, এমনকি সিরিয়ার সরকারি শাসনব্যবস্থার ভেতরের লোকেরাও মনে করেন, ইদলিবে শারার শাসনামলেই ধীরে ধীরে তাঁর ব্যক্তিত্ব ও ভূমিকার এ পাল্টে যাওয়া শুরু হয়। ইদলিব মূলত একধরনের অনানুষ্ঠানিক ‘ক্ষুদ্র রাষ্ট্র’ হয়ে উঠেছিল, যা শারার ভাবমূর্তিকে পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

‘তাঁর (আল–শারা) রূপান্তরে তুরস্ক খুবই বাস্তব ভূমিকা রেখেছে’, এইচটিএসের নেতা থাকাকালীন শারার সঙ্গে দেখা করা একজন তুর্কি কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেন।

তুরস্কের সঙ্গে প্রথম বড় যোগাযোগ

তুর্কি কর্মকর্তার মতে, শারার নিজেরও বদলে যাওয়ার কারণ ছিল। সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে টিকে থাকতে হতো, আর তুরস্কই ছিল তাঁর একমাত্র ভরসা। কারণ, তিনি এমন এক এলাকায় আটকে ছিলেন, যেখানে আঙ্কারা ছিল তাঁর জীবনসঞ্চারণী রেখার মতো।

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে, ১৪ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যারিয়ারের শুরুতে কত টাকা পারিশ্রমিক পেতেন তৌকীর?
  • ভারতীয় সেনাবাহিনীর হিন্দুধর্মের প্রতি আনুগত্য আর গোপন নেই, কেমন এমন সমালোচনা হচ্ছে
  • একাত্তরের পর আবারও যেভাবে বিপর্যয়ের মুখে পাকিস্তান
  • তুরস্কের যে কৌশলে ‘জিহাদি’ শারা হয়ে উঠলেন সিরিয়ার ‘আমির’