ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বিপক্ষীয় কোনো সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ ২০১৩ সালে দুই দেশের মধ্যে একটি সিরিজ হয়েছিল, এরপর থেকে শুধুই আইসিসি বা এসিসি আয়োজিত টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হচ্ছে এই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে এবার সেই সুযোগও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার সুনীল গাভাস্কার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ২০২৫ সালের এশিয়া কাপে হয়তো পাকিস্তান অংশ নাও নিতে পারে। স্পোর্টস টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গাভাস্কার বলেন, ‘বিসিসিআই সবসময় ভারতের সরকারের নির্দেশ মেনে চলে। তাই এশিয়া কাপের ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু হবে বলে মনে করছি না। যেহেতু এবারের আয়োজক ভারত ও শ্রীলঙ্কা, তাই সরকারের সিদ্ধান্তে পাকিস্তানকে বাদ দিয়েই টুর্নামেন্ট হতে পারে।’

সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়। ভারত সরকার এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনেছে, যার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডসহ সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা পাকিস্তানের বিপক্ষে না খেলার অবস্থান নিয়েছেন।

টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম ১০ হাজার রান করা ব্যাটার বলেছেন, ‘জানি না, সামনে কি হবে। তবে মনে হচ্ছে সামনে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ভেঙে যেতে পারে। টুর্নামেন্টটা তিন বা চার দলের হতে পারে। সেক্ষেত্রে হংকং বা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। তাই এসিসি ভেঙে যেতে পারে বলে মনে হচ্ছে। তবে সব কিছু নির্ভর করবে আগামী কয়েক মাস কি ঘটতে যাচ্ছে।’

ভারত আয়োজক না হয়ে যদি এককভাবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা কিংবা অন্য কোনো দেশে হতো তাহলে ভিন্ন কিছু হওয়ারও সুযোগ থাকত বলে জানান গাভাস্কার। সেই ভিন্ন কিছুর ব্যাখ্যায় সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার বলেছেন, ‘এমনও হতে পারে এসিসি থেকে ভারত বেরিয়া আসার সিদ্ধান্ত নিল। ৪ বা ৫ দল নিয়ে টুর্নামেন্ট হলো। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানের সঙ্গে অন্য কোনো দলকে আমন্ত্রণ জানানো হলো। বাংলাদেশ কিংবা শ্রীলঙ্কা এবারের আয়োজক হলে ভিন্ন কিছু হতে পারত। কিন্তু এবারের আয়োজক যেহেতু ভারত তাই ভারতই আয়োজন করবে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার খেজুরবাগানের এখন যে অবস্থা, তাতে চৌদ্দ পুরুষ বসে খেতে পারবে’

সৌদি আরবে খেজুরবাগানে কাজ করতে গিয়ে কিছু বীজ দেশে আনেন আবদুল মোতালেব নামের এক ব্যক্তি। এরপর নিজের একটি খেজুরবাগান তৈরির কাজ শুরু করেন। হতাশা কাটিয়ে কয়েক বছর পর সফলতার দেখা পান। বর্তমানে তাঁর খেজুরবাগান থেকে বছরে ৫০ লাখ টাকার বেশি আয় হচ্ছে বলে দাবি করেছেন। মোতালেবের দেখাদেখি স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন খেজুর চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।

আবদুল মোতালেব ময়মনসিংহের ভালুকার উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের পাড়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিন বছর খেজুরবাগানে কাজ করেছেন। ২০০১ সালের শেষ দিকে নিজে খেজুর চাষের পরিকল্পনা দেশে ফেরেন। এ সময় উন্নত জাতের খেজুরের প্রায় ৩৫ কেজি বীজ নিয়ে আসেন। বাড়ির আঙিনায় ৭০ শতাংশ জমিতে রোপণ করে ২৭৫টি চারা। বর্তমানে মোতালেবের ৭ বিঘা খেজুরবাগানে প্রায় ৩ হাজারের বেশি খেজুরগাছ আছে। এগুলোর মধ্যে সৌদি আরবের আজোয়া, শুক্কারি, আম্বার, লিপজেল ও মরিয়ম জাতের দেখা মেলে।

গত বুধবার মোতালেবের খেজুরবাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের গাছে গাছে ঝুলছে নানা জাতের খেজুর। মোতালেব জানান, আজোয়া খেজুর ৩ হাজার টাকা, শুক্কারি এক হাজার, আম্বার আড়াই হাজার, লিপজেল সাড়ে ৪ হাজার ও মরিয়ম খেজুর ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এ ছাড়া বিক্রি হয় খেজুরের চারাও। কাটিং করা প্রতিটি চারা ১৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এ ছাড়া বীজ থেকে তৈরি চারা ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন।

আবদুল মোতালেব বলেন, ‘আমি পড়ালেখা করি নাই। দেশেও কৃষিকাজ করি এবং সৌদি আরবে গিয়ে আমি কৃষিকাজ পাই। সেখানে খেজুরবাগানে কাজ করে খেজুর খেয়ে মনে হলো, যদি দেশে একবার এই খেজুর চাষ করতে পারি তাহলে জীবন সার্থক, আর বিদেশে যেতে হবে না। ২০০১ সালে বাড়িতে আসার সময় ৩৫ কেজি বীজ নিয়ে আসি, সেখান থেকে মাত্র ২৭৫টি গাছ তৈরি করা হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর গবেষণা করে ৭টি মাতৃগাছ পাই, বাকিগুলো সব পুরুষ গাছ। পুরুষ গাছগুলো কেটে মাতৃগাছগুলো থেকে কাটিং করে চারা উৎপাদন শুরু করি। এখন আমার বাগানের যে অবস্থা, তাতে আমার পরবর্তী চৌদ্দ পুরুষ বসে খাবে, আমার সন্তানদের আর কষ্ট করতে হবে না। বাগানে এখন শুধু মাতৃ গাছ আছে। আমাদের বাগানে উৎপাদিত খেজুর পুরোপুরি সৌদি আরবের সঙ্গে স্বাদে-গন্ধে মেলে।’

বাগানটিতে সৌদি আরবের আজোয়া, শুক্কারি, আম্বার, লিপজেল ও মরিয়ম জাতের দেখা মেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ