ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে দুলাভাই ইসাহাক আলী মন্ডলকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় চাচাতো শ্যালক সারজন মন্ডলকে (৬৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক।
রবিবার (৪ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয়) আদালতের বিচারক উৎপল ভট্টাচার্য মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রতন কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ৫ এপ্রিল হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামে ইসাহাক আলী মন্ডলকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় ৭ এপ্রিল নিহত ইসাহাকের বাবা আনজের মন্ডল বাদী হয়ে হরিণাকুণ্ডু থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে দিনমজুরের মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা
গোপালগঞ্জে মহাজনী সুদের চাপে শ্রমিকের মৃত্যু, দাবি পরিবারের
তদন্ত প্রতিবেদন ও এজাহারে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন বাড়ির পাশে রাস্তার ওপর ফেলে চরমপন্থী নেতা হানিফের নেতৃত্বে ইসাহাক আলী মন্ডলকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। নাম না জানা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ইসাহাকের বাবা আনজের মন্ডল। ওই মামলায় তদন্ত শেষে ইসাহাকের চাচা শ্বশুর মোকসেদ আলীর ছেলে সারজন মন্ডলকে আসামি করে পুলিশ।
এজাহারে দাবি করা হয়, চরমপন্থী নেতা হানিফ ও তার লোকজনকে দিয়ে ইসাহাক আলী মন্ডলকে হত্যা করান চাচাতো শ্যালক সারজন আলী। ইসাহাক আলীর সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। সাক্ষ্য গ্রহণ ও তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ শেষে আজ বিচারক রায় ঘোষণা করেন।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১০ টার দিকে শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের শশ্মানঘাট এলাকা থেকে চরমপন্থী নেতা হানিফ, ৎতার শ্যালক লিটন হোসেন এবং রাইসুল ইসলাম নামে তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত হানিফ পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) আঞ্চলিক কমান্ডার ছিলেন। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া গত ২২ ফেব্রুয়ারি এ তথ্য জানিয়েছিলেন।
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আস ম শ য লক
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের মন্দির
মানুষের মন্দির
এটি ছিল এক বিষণ্ন রাত
ফ্যাকাশে আলোর সঙ্গে,
হৈমন্তী চাঁদের আলোয়
আলোকসজ্জিত আকাশ।
আমরা আনন্দে একত্র হয়েছিলাম
শরতের রোদে রাঙা দুপুরে
আমাদের ঘামের ফসল হাতে
. . . . . . . . . . .
আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি
আমাদের বপনের ঋতুতে
আমাদের যত্নের ঋতুতে,
আমরা ছিলাম অধ্যবসায়ী
আমরা ছিলাম নিবেদিত
আমাদের প্রচেষ্টা প্রতি,
এখন সময় এসেছে ফসল তোলার।
এই সব দিনে
আমরা ভোগ করি পরিশ্রমের ফসল
আমাদের আগে ছিল যারা,
বুঝি না আত্মত্যাগের মানে
যা জন্ম নিয়েছে
নিজের গড়া গৌরবের ছায়া হতে।
আমারও লোভার্ত হাত পৌঁছেছিল সেই আলমারিতে
একটি নিরবচ্ছিন্ন চেতনা নিয়ে,
প্রাচুর্যের মানে বুঝতে অপারগ,
এক নিঃশব্দ অস্বীকৃতির ভারে।
. . . . . . . . . . . .
এই সময়ে
কিছু মানুষ আছে,
আমার প্রতিবেশীরা,
আমার সহপথিক মানবেরা
অক্লান্ত পরিশ্রম করে, তবু ভোগে যন্ত্রণায়।
এদিকে আমার কঠিন চেতনা
আসে আর যায়
সহানুভূতির প্রাঙ্গণ দিয়ে,
ফেলে রেখে যায়
আমার জন্মগত ও ঈশ্বরপ্রদত্ত করুণা,
আমার অসংবেদনশীলতার দ্বারে।
.. . . . . . . . . . .
দশমাংশ কী,
এ কি শুধু এইটুকুই...
আমাদের সীমিত পকেট আর পার্স খালি করা
চাঁদার ঝুড়িতে ফেলার জন্য?
. . . . . . . .
আমি আমার দশম ভেড়া কোথায় দেব,
আমার দশম ছাগল,
আর কোন মন্দিরে...?
এ কি মানুষের তৈরি মন্দির,
ইট, চুনসুরকি আর কাঠ দিয়ে গড়া,
যেখানে আমরা জমায়েত হই
আমাদের স্বেচ্ছায় জমানো অস্থিরতা উজাড় করতে,
নাকি এটা তার চেয়ে বড় কিছু,
একটি মন্দির যা বিরাট কোনো চেতনার জগতে বিরাজমান,
যা আমাদের সকলকে আপন করে জড়িয়ে ধরে?
যখনযখন সবকিছু ধসে পড়বে,
তখন তুমি কোথায় দাঁড়িয়ে থাকবে?
যখন আকাশ নিজেকে গুটিয়ে নেবে,
তখন তুমি কীভাবে নিশ্বাস নেবে?
যখন তারারা তাদের আলো নিভিয়ে দেবে,
তখন কি আমাদের স্বপ্ন দেখার ক্ষমতাটাও
অদৃশ্য হয়ে যাবে?
যখন হাসি ব্যথার জন্ম দেবে,
তখন কি আমরা
অর্থবোধক অনুভূতি থেকে
সম্পূর্ণ শূন্য হয়ে যাব?
যখন আমরা আর আহারের জন্য ক্ষুধার্ত থাকব না,
তখন কি আমরা সময়ের মৃত্যুযাত্রায়
নীরবে আত্মসমর্পণ করব?
যখন দিগন্তের শেষ
আমাদের সামনে দাঁড়াবে,
তখন কি আমরা ছুটে বেড়াব
সবকিছু মনে করতে, ফিরে পেতে
যা আমরা অবহেলা করেছি,
ধ্বংস করেছি, ভুলে গেছি?
যখন সব ‘কেন’র উত্তর মিলবে,
তখন কি আমরা অবশেষে বুঝতে পারব?
যেমন মি. স্মিথ বলেছিল নিওকে,
আমরা একধরনের ভাইরাস,
একটা বিপজ্জনক জাত
যাদের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হলো
ধ্বংস করার দক্ষতা।
এই আত্মনির্মিত দুঃস্বপ্ন
কবে শেষ হবে?
কবে?