সোনারগাঁয়ের আতঙ্ক জঙ্গি সোহান ও তার বাহিনী
Published: 4th, May 2025 GMT
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ উপজেলার ব্যস্ততম মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় ভয়ংকর আতঙ্কের নাম সন্ত্রাসী জঙ্গি সোহান ও তার বাহিনী।
এ বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিন এলাকায় অস্ত্র নিয়ে মহড়া, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, মাদক সেবন ও সাধারণ মানুষকে কুপিয়ে আহত করাসহ বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করলেও তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এদিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোহান বাহিনীর অন্যতম সহযোগী সন্ত্রাসী হাতকাটা আমজাদকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করলেও অধরা রয়ে গেছে সোহান ও তার অন্য সহযোগীরা।
অভিযোগ উঠেছে, সন্ত্রাসী সোহান বাহিনীর সদস্যরা মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, ডিলার ব্যবসায়ীদের গ্রাহকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা ছিনতাই, রাতের আঁধারে দোকানের শাটার ভেঙে মালামাল লুট, মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহনে ছিনতাই ও ডাকাতি অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
কেউ তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করছে। সন্ত্রাসী সোহান ও তার বাহিনীর সদস্যদের অত্যাচারে এলাকার অনেক ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। অনেকে এ বাহিনীর সদস্যদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের আপন ভাতিজা সন্ত্রাসী সোহান দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সন্ত্রাসী সোহান ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সোহান ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করলেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি।
এ বাহিনীর অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বক্তব্য দেন সোনারগাঁ পণ্য পরিবেশক সমিতির সম্পাদক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহমেদ, প্রচার সম্পাদক আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে সোনারগাঁ উপজেলা পরিবেশক সমিতির সভাপতি রেজাউল হক রাজার নেতৃত্বে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী সোহান বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোনারগাঁ থানাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এতে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। পুলিশ তাৎক্ষণিক বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী সোহান বাহিনীর অন্যতম সহযোগী সন্ত্রাসী হাতকাটা আমজাদকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, স্থানীয় মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ব্যবসায়ীরা সন্ত্রাসী সোহান ও তার বাহিনীর সদস্যের গ্রেফতারের দাবিতে থানায় স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী সোহানের অন্যতম সহযোগী ভয়ংকর সন্ত্রাসী হাতকাটা আমজাদকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
সোহান ও তার বাহিনীর অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুলিশ এ বাহিনীর সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ স হ ন ও ত র ব হ ন র সদস য হ ন র অন য ত র করত ব যবস য় ত র কর স ন রগ এল ক য় সহয গ
এছাড়াও পড়ুন:
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে শত্রুঘ্ন–মমতা–সৌরভ এক মঞ্চে
চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এবারও কলকাতা পরিণত হয়েছে সিনেমার শহরে—এক উৎসবের নগরে। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধনধান্য অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদীপ প্রজ্বালন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন বলিউড তারকা শত্রুঘ্ন সিনহা, পরিচালক রমেশ সিপ্পি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী ও বর্ষীয়ান সংগীতশিল্পী আরতি মুখোপাধ্যায়।
উদ্বোধনী মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গবিভূষণ সম্মান প্রদান করেন দুই বরেণ্য শিল্পী—শত্রুঘ্ন সিনহা ও আরতি মুখোপাধ্যায়কে। এরপর প্রদর্শিত হয় উৎসবের উদ্বোধনী ছবি—উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত ক্লাসিক চলচ্চিত্র ‘সপ্তপদী’।
এ বছর উৎসবের আয়োজন কিছুটা সংযত হলেও গাম্ভীর্য ও ঐতিহ্যে ছিল পূর্ণ। বলিউডের বড় তারকাদের উপস্থিতি না থাকলেও দেশ–বিদেশের সিনেমাপ্রেমী, চলচ্চিত্রকার ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ভিড়ে জমে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল। উৎসবের আমেজ ছিল স্পষ্ট।