ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ উপজেলার ব্যস্ততম মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় ভয়ংকর আতঙ্কের নাম সন্ত্রাসী জঙ্গি সোহান ও তার বাহিনী।

এ বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিন এলাকায় অস্ত্র নিয়ে মহড়া, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, মাদক সেবন ও সাধারণ মানুষকে কুপিয়ে আহত করাসহ বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করলেও তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

এদিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোহান বাহিনীর অন্যতম সহযোগী সন্ত্রাসী হাতকাটা আমজাদকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করলেও অধরা রয়ে গেছে সোহান ও তার অন্য সহযোগীরা।

অভিযোগ উঠেছে, সন্ত্রাসী সোহান বাহিনীর সদস্যরা মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, ডিলার ব্যবসায়ীদের গ্রাহকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা ছিনতাই, রাতের আঁধারে দোকানের শাটার ভেঙে মালামাল লুট, মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহনে ছিনতাই ও ডাকাতি অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। 

কেউ তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করছে। সন্ত্রাসী সোহান ও তার বাহিনীর সদস্যদের অত্যাচারে এলাকার অনেক ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। অনেকে এ বাহিনীর সদস্যদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের আপন ভাতিজা সন্ত্রাসী সোহান দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সন্ত্রাসী সোহান ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সোহান ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করলেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি।

এ বাহিনীর অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বক্তব্য দেন সোনারগাঁ পণ্য পরিবেশক সমিতির সম্পাদক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহমেদ, প্রচার সম্পাদক আজিজুল ইসলাম প্রমুখ। 

মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে সোনারগাঁ উপজেলা পরিবেশক সমিতির সভাপতি রেজাউল হক রাজার নেতৃত্বে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী সোহান বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোনারগাঁ থানাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। 

এতে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। পুলিশ তাৎক্ষণিক বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী সোহান বাহিনীর অন্যতম সহযোগী সন্ত্রাসী হাতকাটা আমজাদকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, স্থানীয় মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ব্যবসায়ীরা সন্ত্রাসী সোহান ও তার বাহিনীর সদস্যের গ্রেফতারের দাবিতে থানায় স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী সোহানের অন্যতম সহযোগী ভয়ংকর সন্ত্রাসী হাতকাটা আমজাদকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।

সোহান ও তার বাহিনীর অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুলিশ এ বাহিনীর সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ স হ ন ও ত র ব হ ন র সদস য হ ন র অন য ত র করত ব যবস য় ত র কর স ন রগ এল ক য় সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোণায় এনসিপি নেতাসহ ৩ জনকে মারধরের ঘটনায় মামলা 

নেত্রকোণার কলমাকান্দায় জমির আইল নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান (১৯), তার বাবা এবং বড় ভাইকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে মামলাটি হয়। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে কলমাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আহতরা হলেন- কৈলাটী ইউনিয়নের সেহড়াউন্দ গ্রামের মেহেদী হাসান, তার বাবা মানিক মিয়া (৬৩) ও বড় ভাই আকাশ মিয়া (২৮)।

আরো পড়ুন:

চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২

সড়কের কাজে অনিয়ম, অস্বীকার করায় এলজিইডি কর্মচারীকে মারধর

মামলার আসামিরা হলেন- আজগড়া গ্রামের মো. মোন্তাজ মিয়া (৭০), তার তিন ছেলে জুয়েল মিয়া (৩৫), সোহেল মিয়া (৪০) ও মনির মিয়া (২৮), একই গ্রামের মো. ইছা মিয়া (৩২), রাকিব মিয়া (২২), আদম আলী (১৯) ও মামুন মিয়া (২৭)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বুধবার দুপুরে মানিক মিয়া ও মনির মিয়ার মধ্যে ধান ক্ষেতের আইল নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করলেও পরে মনির মিয়াসহ ৭-৮ জনের একটি দল মেহেদী, তার বাবা ও ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। মেহেদীর অবস্থা অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার মেহেদী হাসান বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
 
ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

কলমাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, ‍‍“ঘটনার পর আসামির গা ঢাকা দিয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ