ঐকমত্যে পৌঁছাতে নাগরিক ঐক্য ছাড় দেবে
Published: 7th, May 2025 GMT
সংস্কার কমিশনগুলোর ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১১৮টির বিষয়ে একমত হয়েছে নাগরিক ঐক্য। ঐকমত্যে পৌঁছাতে নাগরিক ঐক্য ছাড় দেবে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে করা ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়। সংস্কার প্রশ্নের ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা করছে কমিশন। এর অংশ হিসেবে আজ নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, তাঁরা আগে ১১৪টি বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। আজ তাঁরা ১১৮টি বিষয়ে একমত হয়েছেন। ৩৮টি বিষয়ে তাঁদের দ্বিমত থাকলেও মতপার্থক্য অনেকখানি নিরসন হয়েছে। আর বাকি ১০টির বিষয়ে তাঁরা আংশিক একমত।
নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষের ১০০ প্রতিনিধির মধ্যে ৫০ শতাংশ নাগরিক সমাজ ও বাকিটা রাজনৈতিক দল থেকে নির্ধারণের বিষয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে তারা দ্বিমত পোষণ করেছে।
নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার বলেন, যেহেতু এটা (উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব) রাজনৈতিক মনোনয়ন থেকেই আসবে, ফলে আলাদা করে ৫০ শতাংশ সিভিল সোসাইটির জন্য বরাদ্দ করলে বাংলাদেশ একটা শক্তিশালী সিভিল সোসাইটি হারাবে। তখন সিভিল সোসাইটির সদস্যরাও চিন্তা করবেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে পরবর্তী সময়ে নির্বাচনের পর উচ্চকক্ষে যাওয়া যাবে। কারণ, মনোনয়ন রাজনৈতিক দল থেকেই আসবে। এ কারণে তাঁরা বাংলাদেশের একটি স্ট্রং সিভিল সোসাইটি, যারা নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করবে, সেটা চান।
নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব মোতাবেক কোনো দল এক শতাংশ ভোট পেলে তারা উচ্চকক্ষে আসন পাবে—এটির সঙ্গে তারা একমত।
সাকিব আনোয়ার বলেন, উচ্চকক্ষে প্রতিনিধি নির্বাচনে একটি দলের ন্যূনতম ৩ শতাংশ ভোট পেতে হবে—তাঁরা এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। সংবিধান সংস্কার কমিশন এ ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটের কথা বলেছে। তাঁরা এটা সমর্থন করেন। তাঁরা বলেছেন, কোনো একটা দল যদি ১ শতাংশ ভোটও পায়, তাদের একজন প্রতিনিধি উচ্চকক্ষে থাকবেন।
ঐকমত্যে পৌঁছাতে নাগরিক ঐক্য ছাড় দেবে বলে জানান সাকিব আনোয়ার। তিনি বলেন, তাঁদের অবস্থান হলো, ছাড় দিয়ে হলেও যত বেশি বিষয়ে ঐকমত্যে আসা যায়। তাঁরা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের বিপক্ষে নন। আস্থা ভোট ও অর্থবিল—এ দুটো ছাড়া সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন—এভাবে ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের কথা বলেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুনরাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যেকে কিছু কিছু ছাড় দেবে, প্রত্যাশা আলী রীয়াজের৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ভ ল স স ইট ঐকমত য
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশন বলছে, শরিয়াহ নিয়ে প্রশ্ন ছিল না, মামুনুল হক বললেন অসতর্কতায় অন্য জরিপের কথা বলেছেন
প্রথম আলোয় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে শরিয়াহ আইন নিয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকের একটি মন্তব্য নিয়ে বক্তব্য দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত সোমবার মামুনুল হকের সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
‘আফগানিস্তানে যেতে আইনি বাধা নেই’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারের একটি অংশে মামুনুল হক উল্লেখ করেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিষয়ে জরিপ চালানো হয়েছিল। সেখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ শরিয়াহ শাসন চেয়েছে।’
এ বিষয়ে প্রথম আলোকে দেওয়া বক্তব্যে ঐকমত্য কমিশন বলেছে, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে যে কমিশনের পক্ষ থেকে যে জরিপ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল, সেখানে শরিয়াহ আইন বা শরিয়াহ শাসনসংক্রান্ত কোনো প্রশ্নই অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ফলে উক্ত জরিপ থেকে এ ধরনের মতামত বা ফলাফল পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
অন্যদিকে এ বিষয়ে মামুনুল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, ২০১৭ সালে ‘রিজলভ নেটওয়ার্ক’ পরিচালিত একটি জরিপকে তিনি অসতর্কতাবশত ঐকমত্য কমিশনের জরিপ বলে উল্লেখ করেছেন। ‘ডেমোক্রেসি অ্যান্ড শরিয়াহ ইন বাংলাদেশ: সার্ভেয়িং সাপোর্ট’ শীর্ষক ওই জরিপ প্রতিবেদন লিখেছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও সৈয়দা সেলিনা আজিজ। ওই জরিপে ৯১ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের একটি মর্মবস্তু হচ্ছে নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব। তবে ৮০ শতাংশের বেশি মনে করেন, শরিয়াহ আইন মৌলিক সেবা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দুর্নীতিকে নিরুৎসাহিত করে।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে তিনটি বিষয় নজর কেড়েছে, নারী শিক্ষার বিষয় আপত্তিকর ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫