চট্টগ্রামে একই মালিকের দুইটি পোশাক কারখানায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ’ শ্রমিক। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর ইপিজেড ও নগরের খুলশী বেবি সুপার মার্কেট এলাকায় এ বিক্ষোভ করেন তারা। সকাল পৌনে ৯টার দিকে নগরীর দুই নম্বর গেট-অক্সিজেন সড়কের ফ্লাইওভারের মুখে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে রহিমা গার্মেন্টেসের শ্রমিকরা। এতে অফিস-গামী লোকজন ও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা আটকা পড়েন। 

দুই নম্বর গেট থেকে শুরু করে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত যানজট শুরু হয়ে যায়। এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ইপিজেডের প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করে থিআনিস অ্যাপারেলস লিমিটেডের কয়েক শ’ শ্রমিক। তবে তারা সড়ক অবরোধ করেনি। পোশাক কারখানা দুইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান খান। রহিমা গার্মেন্টস নগরীর ষোলশহর হালকা শিল্প এলাকায় অবস্থিত। থিআনিস অ্যাপারেলস নগরীর ইপিজেডে অবস্থিত।

নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী সড়কে অবস্থান নেওয়া রহিমা গার্মেন্টসের শ্রমিকরা জানান, তাদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বারবার বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরিশোধ করা হচ্ছে না। বুধবার রাতে তারা জানতে পারেন; কারখানা থেকে মালামাল সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে তারা রাস্তায় নেমেছেন।

জানতে চাইলে খুলশী থানার এসআই এনামুল হক বলেন, ‘সকালে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল শ্রমিকরা। তাদেরকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে তারা কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।’ 

এদিকে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে চট্টগ্রাম ইপিজেডের মূল ফটক বন্ধ করে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন থিআনিস অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা। তবে তারা মূল সড়ক অবরোধ করেনি।  
চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, ‘থিআনিস অ্যাপারেলসের কয়েকশ’ শ্রমিক মার্চ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আগামী সোমবার নাগাদ বকেয়া বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’ 

ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিকরা ইপিজেডের ভেতরে মূল ফটকে কাছে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছে। তারা মূল সড়কে আসেনি। তাই যান চলাচলে কোনো ধরণের ব্যাঘাত ঘটেনি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ কর ছ ন অবস থ ন ন নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ