‘সর্বদলীয় কনভেনশন’ ডেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি এবি পার্টির
Published: 10th, May 2025 GMT
‘সর্বদলীয় কনভেনশন’ ডেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (মঞ্জু)। তিনি বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সামাজিক, রাজনৈতিক, আইনি ও সাংবিধানিকভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন মজিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘গুম, খুন, গণহত্যা ও সীমাহীন লুটপাটসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ। তারা নির্বাচনব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে হত্যা করে জনগণের বাক্স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.
৫ আগস্টের পর দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে সামাজিকভাবে ‘বয়কট’ করেছে দাবি করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে প্রথমে বিএনপি ও জামায়াতের মতো বড় দলগুলো নীতিগতভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক চায়নি। দেশে পতিত স্বৈরাচার গুম, খুন ও ধর্ষণ করেছে। তবুও আমরা আওয়ামী প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না কেন?’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, নাসরিন সুলতানা মিলি, সানি আবদুল হক, আলতাফ হোসাইন, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহ আবদুর রহমান, সড়ক ও জনকল্যাণ সহসম্পাদক মতিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) শাহজাহান বেপারী, স্বেচ্ছাসেবক ও জনকল্যাণবিষয়ক সহসম্পাদক তোফাজ্জল হোসাইন রমিজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমাদ, নারী উন্নয়নবিষয়ক সহসম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, আমেনা বেগম, শিক্ষাবিষয়ক সহসম্পাদক ফয়সাল মনির, সহপ্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, রিপন মাহমুদ, সহদপ্তর সম্পাদক শরন চৌধুরী, মশিউর রহমান মিলু, যুব পার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, যুবনেতা মাহমুদ আজাদ, রাশেদ, পল্টন থানার আহ্বায়ক আবদুল কাদের মুন্সী, যাত্রাবাড়ী থানার আহ্বায়ক আরিফ সুলতান রাফিউর রহমান ফাত্তাহ, মাহমুদুল হাসান আসিফ, সোলাইমান আল হাবিব, ফারহানুল ইসলাম ইফতি, সায়েমুল ইসলাম, জাওয়াদ হামিম, মাশরুর ইসলাম মাহিন, মেহরাজুল ইসলাম আদরসহ কেন্দ্রীয়, মহানগরী, যুব পার্টি ও ছাত্রপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন ল ইসল ম ব ষয়ক আওয় ম আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গান-গল্পে কিশোর আলোর কৈশোর উদ্যাপন
শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্কুলে পড়ার সময় তাঁদের একজন প্রধান শিক্ষককে আড়ালে ডাকতেন ‘ওইখানেই নিলডাউন’ নামে। কারণ, একটু এদিক–ওদিক হলেই যে যেখানে থাকে, তাকে সেখানেই নিলডাউন করিয়ে রাখতেন। ছাদের কার্নিশে, গাছের ডালে, ক্লাসের বেঞ্চে, দরজার মুখে—সবখানেই দেখা যেত কেউ না কেউ নিলডাউনরত অবস্থায়। এমনকি ৬ ফুটের বিশালদেহী স্কুলের দারোয়ানও বাদ যাননি।
এই গল্পের শেষটায় এসে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বললেন, ‘আমাদের সবকিছু কিন্তু ওইখানেই নিলডাউন হয়ে গেছে। এখন আশা হচ্ছ তোমরা। তোমরা যদি নিলডাউন থেকে উঠে দাঁড়াতে পারো, যদি হাঁটতে পারো, দৌড়াতে পারো, দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারো, তাহলে আমরা ওই প্রধান শিক্ষকের কবল থেকে মুক্তি পাব।
তা না হলে বাংলাদেশের অবস্থা ওইখানেই নিলডাউন হয়ে থাকবে।’ গতকাল বুধবার ছিল কিশোর আলোর ১২তম জন্মবার্ষিকী। অর্থাৎ শিশুকাল থেকে এবার কিশোর আলো নিজেই কৈশোরে পা দিয়েছে। আর এদিনেই দেশের তরুণতম মানুষটি কিশোর আলোকে শুভেচ্ছা জানাতে এসে একঝাঁক শিশু–কিশোর–তরুণকে নিজের ছোটবেলার গল্প শোনান আর ভবিষ্যতের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। গতকাল ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ের সভাকক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি বই পড়ায় এগিয়ে, তারা প্রযুক্তিগতভাবেও অনেক এগিয়ে। এমনকি এই পাঠকদের বেশির ভাগই তরুণ। অর্থাৎ বই না পড়লে এগোনো যায় না। তাই সবাইকে বই পড়ার, সিনেমা দেখার ও গান শোনার আহ্বান জানান প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ।
ছাড়াকার ও চিকিৎসক রোমেন রায়হান কিছুটা আফসোসের সুরেই বলেন, সবাই কবি হতে চায়, কিন্তু ছড়াকার হতে চায় না। এরপর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে একটি ছড়া শোনান, ‘কিশোর আলোর বয়স হলো বারো, সামনে তোমরা আরও বাড়ো।’
কমিকস আঁকার নিয়মকানুন তুলে ধরেন উন্মাদ সম্পাদক আহসান হাবীব। উপস্থিত খুদে পাঠকদের উদ্দেশে বলেন, বিদেশি কার্টুন, কমিকস থেকে ধারণা নেওয়া যাবে। কিন্তু নিজস্ব সংস্কৃতির চরিত্র দাঁড় করাতে হবে।
কার্টুনিস্ট মেহেদী হক বলেন, সৃষ্টিশীল কিছু করতেই হবে, বিষয়টি এমন নয়। যা ভালো লাগে, যেটা আনন্দ দেয়, সেটাই করতে হবে।
মেয়েদের কার্টুন আঁকা দরকার বলে মত দিলেন কার্টুনিস্ট নাসরিন সুলতানা মিতু। তাঁর কথায়, প্রতিদিন মেয়েরা যেসব ঘটনার মুখোমুখি হয়, তা কার্টুনে প্রকাশ করা যায়।
নানাজনের কথা বলার মধ্যে ফাঁকে ফাঁকে গানও ছিল। গায়ক ঈশান মজুমদার তাঁর জনপ্রিয় দুটি গান ‘গুলবাহার’ ও ‘নিঠুর মনোহর’ গেয়ে শোনান। লোকসংগীতভিত্তিক ব্যান্ড আপনঘরও কয়েকটি গান শোনায়। প্রথম আলো ট্রাস্টের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানার সঙ্গে গলা মিলিয়ে কিশোরেরা গায় ‘আমরা সবাই রাজা’। এ ছাড়া কিশোর আলোর পাঠক আরিফা দেওয়ানও গান শোনান।
নিজের লেখা রহস্যগল্পের মতো করেই কিশোর আলোর পাঠকদের পাঁচটি গল্প খুঁজে বের করার মিশন দেন কথাসাহিত্যিক শিবব্রত বর্মন।
বয়স যখন তিন কি চার, তখন থেকেই আরিয়েত্তি ইসলাম রোবোটিকস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে। যার ফল আট বছর বয়সেই সে ২৬তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক জিতে নেয়। তৃতীয় শ্রেণির এই শিক্ষার্থী কিশোর আলোর পাঠকদের কাছে নিজের রোবট অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের গল্প শোনায়।
কিশোর আলোর প্রথম কি–আড্ডার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন কিশোর আলোর সহসম্পাদক আহমাদ মুদ্দাসসের।
কিশোর আলোর সহকারী সম্পাদক আদনান মুকিত নবম শ্রেণিতে থাকতেই তিন বন্ধুসহ পত্রিকা বের করতেন। কারণ, তাঁদের কথা তো কেউ শুনবে না, লিখবে না। তাই নিজেদের সেই খুদে পত্রিকায় আবার উন্মাদ–এর মতো জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের সম্পাদক আহসান হাবীবের লেখাও চেয়ে বসেন। আহসান হাবীব লেখা দিলে সেই লেখা ওইটুকু বয়সে সম্পাদনা করারও সাহস করেছিলেন তাঁরা। আদনান জানান, কিশোর আলো বের করতে গিয়ে এখনো তিনি আহসান হাবীবের কাছে লেখা চান।
নিজের গল্প বলতে গিয়ে কিশোর আলোর পাঠকদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের যা ভালো লাগে করো। তাহলে “যত দূর যেতে চাও, তত দূর তোমার” কিশোর আলোর এই স্লোগানের মতো তোমরাও তত দূর যাবে।’
জন্মদিনের আয়োজনে কিশোর আলোকে শুভেচ্ছা জানান শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন, চিকিৎসক ও কার্টুনিস্ট নাইমুর রহমান, বন্ধুসভার নির্বাহী সভাপতি মৌসুমী মৌ, বিজ্ঞানচিন্তার সহসম্পাদক উচ্ছ্বাস তৌফিক। আয়োজনটি উপস্থাপনা করেন জাহিন যাঈমাহ্ কবির ও আবু তালেব রাফি। সবাইকে নিয়ে কেক কাটার মধ্য দিয়ে শেষ হয় কিশোর আলোর ১২তম জন্মবার্ষিকীর আয়োজন।