‘সর্বদলীয় কনভেনশন’ ডেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (মঞ্জু)। তিনি বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সামাজিক, রাজনৈতিক, আইনি ও সাংবিধানিকভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন মজিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘গুম, খুন, গণহত্যা ও সীমাহীন লুটপাটসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ। তারা নির্বাচনব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে হত্যা করে জনগণের বাক্‌স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.

আবদুল হামিদকে বিদেশে যেতে সহায়তাকারী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, সব নাগরিককে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে ইমিগ্রেশন পার হতে দেওয়া হয়। তাহলে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বেলায় শৈথিল্য কেন? তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫ আগস্টের পর দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে সামাজিকভাবে ‘বয়কট’ করেছে দাবি করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে প্রথমে বিএনপি ও জামায়াতের মতো বড় দলগুলো নীতিগতভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক চায়নি। দেশে পতিত স্বৈরাচার গুম, খুন ও ধর্ষণ করেছে। তবুও আমরা আওয়ামী প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না কেন?’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, নাসরিন সুলতানা মিলি, সানি আবদুল হক, আলতাফ হোসাইন, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহ আবদুর রহমান, সড়ক ও জনকল্যাণ সহসম্পাদক মতিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) শাহজাহান বেপারী, স্বেচ্ছাসেবক ও জনকল্যাণবিষয়ক সহসম্পাদক তোফাজ্জল হোসাইন রমিজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমাদ, নারী উন্নয়নবিষয়ক সহসম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, আমেনা বেগম, শিক্ষাবিষয়ক সহসম্পাদক ফয়সাল মনির, সহপ্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, রিপন মাহমুদ, সহদপ্তর সম্পাদক শরন চৌধুরী, মশিউর রহমান মিলু, যুব পার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, যুবনেতা মাহমুদ আজাদ, রাশেদ, পল্টন থানার আহ্বায়ক আবদুল কাদের মুন্সী, যাত্রাবাড়ী থানার আহ্বায়ক আরিফ সুলতান রাফিউর রহমান ফাত্তাহ, মাহমুদুল হাসান আসিফ, সোলাইমান আল হাবিব, ফারহানুল ইসলাম ইফতি, সায়েমুল ইসলাম, জাওয়াদ হামিম, মাশরুর ইসলাম মাহিন, মেহরাজুল ইসলাম আদরসহ কেন্দ্রীয়, মহানগরী, যুব পার্টি ও ছাত্রপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন ল ইসল ম ব ষয়ক আওয় ম আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই: বাম গণতান্ত্রিক জোট

চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা বলেছে, জনগণের মতামত ছাড়া বন্দর পরিচালনার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নির্বাচিত বা অনির্বাচিত কোনো সরকারই নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। সরকার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে দেশের সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সারা দেশে আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে।

আজ সোমবার বিকেলে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। জোটের অস্থায়ী কার্যালয় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ২৭ ও ২৮ জুন দেশপ্রেমিক জনগণের ব্যানারে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চে চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশবাসী অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছে। দেশের সচেতন মানুষ সরকারের যেকোনো গণবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এখনো পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। আমরা আশা করেছিলাম, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সরকার বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার বন্দর ইজারা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা থেকে সরে আসবে। কিন্তু সরকার জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বন্দর বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। যা নৌপরিবহন উপদেষ্টার বক্তব্যে ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে।’

দেশের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই। দেশের স্বার্থবিরোধী এ ধরনের সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। ইতিমধ্যে নির্বাচনের সময় ঘোষিত হয়েছে। জনগণের মতামত ছাড়া বন্দর পরিচালনার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নির্বাচিত বা অনির্বাচিত কোনো সরকারই নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না।’

জাতীয় স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পাদিত সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিল করার দাবি জানানো যাচ্ছে। একই সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু সরকার ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণ–আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সব বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো যাচ্ছে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শামীম ইমাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ