আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে গণজমায়েত শুরু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর ৩টার পর গণজমায়েত কর্মসূচি শুরু হয়। এতে যোগ দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির, প্ল্যাটফর্ম ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশসহ (আপ বাংলাদেশ) বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে শাহবাগ মোড়ের বিজ্ঞাপন বোর্ডের নিচে সিঁড়ির ওপর অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সিবগাতুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন।
এদিকে শাহবাগের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৩টার দিকে ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ ব্লকেডে যোগ দেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘হলে হলে খবর দে, আওয়ামী লীগের কবর দে’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’- ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর আহ্বানে গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেয় ছাত্র-জনতা৷ রাতভর চলে এই কর্মসূচি। পরদিন সকালে সেখান থেকে মিন্টু রোডের মোড়ে ফোয়ারার সামনে ‘জমায়েত মঞ্চ’ তৈরি করা হয়।
শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ করা হয়৷ সেখানে এনসিপির নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন ইসলামপন্থী দল ও সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন৷ বিভিন্ন ইসলামপন্থি ছাত্রসংগঠনের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের নেতারাও সেখানে বক্তব্য দেন৷
বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে হাসনাত আবদুল্লাহ ওই মঞ্চ থেকে ‘শাহবাগ ব্লকেডের’ ঘোষণা দেন৷ এরপর মিছিল নিয়ে শাহবাগ অবরোধ করা হয়।
গতকাল রাত ১১টার দিকে শাহবাগের অবরোধ কর্মসূচিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা এবং জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা- এই তিন দফা দাবিতে শাহবাগে তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে৷ পাশাপাশি শনিবার (আজ) বেলা ৩টার দিকে শাহবাগে গণজমায়েতের ঘোষণা দেন তিনি।
হাসনাত বলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ হব গ এনস প আওয় ম ল গ সম ব শ গণজম য় ত অবস থ ন শ হব গ স গঠন আওয় ম এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষকদের কর্ম: ঝিনাইদহে ৪৬২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হ
ঝিনাইদহে ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কমপ্লিট শাটডাউন চলছে। জেলার ৯০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৬২টিতে বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। পরীক্ষা না দিয়ে বাড়িতে ফিরে যায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
গত ৮ নভেম্বর তিন দফা দাবিতে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সমবেত হয়। সেখানে তাদের প্রধান দাবি ছিল ১১ গ্রেড কিন্তু প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় তারা এই আন্দোলন করছেন।
আরো পড়ুন:
জবিতে ভর্তির আবেদন ৫ ডিসেম্বর ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বৃদ্ধি
জাবিতে আইএইজির ১৫তম এশিয়ান আঞ্চলিক সম্মেলন
কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে স্কুলে যায় কিন্তু শিক্ষকরা পরীক্ষা না নেওয়ায় তারা বাড়িতে ফিরে যায়। শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করছে।
ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক অফিস সুত্রে জানা গেছে, জেলার মোট ৯০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৪৬টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়েছে। বাকি ৪৬২ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়নি। এরমধ্যে শৈলকুপা উপজেলায় ১৮১টি ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ১৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিও পরীক্ষা হয়নি। মহেশপুর উপজেলার ১৫২টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৫০টির মধ্যে মাত্র ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়েছে। কোটচাঁদপুরে ৭৪টির মধ্যে ৬৮টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়েছে ও ঝিনাইদহ সদরে ২১৬টির মধ্যে ৭টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেয়নি শিক্ষকরা।
অভিভাবকরা পরীক্ষা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, ‘‘এই শাটডাউনটা পরীক্ষার পরে করলেও তো সমস্যা ছিল না।’’
কালীগঞ্জ উপজেলার হেলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশানুর রহমান জানায়, পরীক্ষা দিতে সে বিদ্যালয়ে আসে। স্যারেরা বলে আজকে পরীক্ষা হবে না। তোমরা হার্ডবোর্ড রেখে খেলা করো।
কালীগঞ্জ উপজেলার এসবিজিএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশফাকুল কবীর বলেন, ‘‘আমাদের দাবি না মানার কারণে আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।’’
কালীগঞ্জ উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিহার সুলতানা বলেন, ‘‘আমরা গত ৮ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১১তম গ্রেডের জন্য সমাবেশ করেছিলাম। তথন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম জানিয়েছিলেন, আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারি না হলে আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় আমরা কমপ্লিট শাটডাউন করছি।’’
ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘জেলার ৬ উপজেলার মধ্যে শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কোনো বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়নি। বাকি ৪ উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয় ছাড়া পরীক্ষা হয়েছে। জেলার ৪৬২ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।’’
ঢাকা/বকুল