নারীবিদ্বেষী অপপ্রচার থেকে রোকেয়াকেও বাদ দেওয়া হচ্ছে না
Published: 8th, December 2025 GMT
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের কাজ এত বিস্তৃত যে তাঁকে এক গণ্ডিতে বেঁধে রাখা যায় না। বর্তমানে নারীবিদ্বেষী যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, সেখানে রোকেয়াকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে রোকেয়াকে নিয়ে পুনরায় আলোচনা হওয়া জরুরি। এটি তরুণদের যুক্তিবাদী সমাজ গঠনে সহায়তা করবে।
‘শুধু সমাজসংস্কারক নয়, বরং রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতা–পরবর্তী আলোচনায় এসব কথা উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন–২০২৫ উপলক্ষে সোমবার এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
রাজধানীর বেইলি রোডে সংগঠনের কার্যালয়ে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় তরুণ বিতার্কিকেরা অংশ নেন।
বিতর্ক প্রতিযোগিতার মডারেটরের বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের কাজ এত বিস্তৃত যে তাঁকে এক গণ্ডিতে বেঁধে রাখা যায় না। রোকেয়া পাঁচটি কাজ আমাদের জন্য করে গেছেন—প্রথা ভাঙা, সামাজিক কাঠামোয় নারী–পুরুষের মধ্যে থাকা অসমতা চিহ্নিত করা, চিন্তাশক্তির বিকাশ, নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও স্বাবলম্বী হওয়া এবং নারীকে সংগঠিত করা। এগুলো নারীকে শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে অর্জনের কথা বলেছেন। উনি যা বলেছেন, তা কাজের মাধ্যমেও দেখিয়েছেন।’
মহিলা পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘তিনি (রোকেয়া) আরও বলতেন, সাম্প্রদায়িকতা ও তথাকথিত ধর্মাচরণ নারীর অগ্রগতিতে বাধা দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা এখনো ঘটছে। সুতরাং যাঁরা নারীকে বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে পথ দেখিয়েছেন, তাঁদের চর্চা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।’
প্রতিযোগিতার বিচারকের বক্তব্যে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, যুক্তিবাদী সমাজ গঠনে বিতর্ক প্রতিযোগিতার এই বাগ্যুদ্ধ বড় ভূমিকা রাখে। এর মধ্য দিয়েই যুক্তিবাদী সমাজ গঠনের সঙ্গে সঙ্গে অন্যের মতামত শোনা ও তার মতামতকে শ্রদ্ধা করার দিকটিও ফুটে ওঠে।
এ সময় মালেকা বানু বলেন, রোকেয়ার জীবন ছিল অল্প সময়ের। কিন্তু এর মধ্যে যেসব কাজ তিনি নারীর অগ্রযাত্রার লক্ষ্যে করে গেছেন, সেসব বিষয়ে জানা-বোঝার চেষ্টায় যথাযথ সময়ের প্রয়োজন। এটি তরুণদের যুক্তিবাদী সমাজ গঠনে সহায়তা করবে বলেও মনে করেন তিনি।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় পক্ষ দল বিজয়ী হয়। পক্ষ দলের মধ্যে প্রথম শ্রেষ্ঠ বক্তা হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহামুদ খালিদ, দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ বক্তা হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ণব রায় পার্থ আর তৃতীয় শ্রেষ্ঠ বক্তা হন বিপক্ষ দলের দলনেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী সরকার।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রথম হন আইডিয়াল কলেজ, ধানমন্ডির শিক্ষার্থী মারওয়া জান্নাত মাইশা, দ্বিতীয় হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুবিনা আক্তার মুন, তৃতীয় হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে ফাতেমাতুজ যোহরা।
বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে ইপোস্টার প্রতিযোগিতায় জয়ী ৯ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। তাঁরা হলেন হুমায়রা তাবাসসুম, মাহি বিনতে মাসুদ, কৃষ্ণপদ সরকার, সাবরিনা, সৈয়দ রাশিদ আসিফ, মহুয়া চক্রবর্তী, আমানুর রহমান, আনোয়ার রহমান ও মারওয়া জান্নাত মায়শা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সারাবান তহুরা; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা আফরোজ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হন ঢ ক
এছাড়াও পড়ুন:
জকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট মঙ্গল ও বুধবার, অংশ না নিলে প্রার্থিতা বাতিল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট (মাদক পরীক্ষা) মঙ্গল ও বুধবার করানো হবে। সোমবার জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রথম দিন মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সংসদের ১২৯ জন প্রার্থী এবং দ্বিতীয় দিন বুধবার কেন্দ্রীয় সংসদের ৭১ জন প্রার্থী ও নবাব ফয়েজুন্নেসা চৌধুরাণী হল সংসদের ৩৮ জন প্রার্থীসহ মোট ১০৯ জন প্রার্থীর ডোপ টেস্ট করানো হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে (নতুন ভবন, ২০৪ নম্বর কক্ষ) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই টেস্ট হবে। ডোপ টেস্টের খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জকসু নির্বাচনী আচরণবিধির ৩ নম্বর শর্ত অনুযায়ী ডোপ টেস্টে অংশ না নিলে প্রার্থীর প্রার্থিতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। টেস্টের সময় প্রার্থীদের পাসপোর্ট আকারের এক কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে।
প্রার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে দুটি করে বাস ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। বাসগুলো দুপুর সাড়ে ১২টায় আবার ক্যাম্পাসের উদ্দেশে রওনা হবে।
জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, ‘প্রার্থীদের অবশ্যই এনআইডি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে উপস্থিত হতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘টেস্টের সময় চিকিৎসকদের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন।’
জালিয়াতির বিষয়ে সতর্ক করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘প্রত্যেক প্রার্থীকে নিজ হাতে স্বাক্ষর দিতে হবে। এখানে জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘কারও স্বাক্ষর জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁর প্রার্থিতা সরাসরি বাতিল বলে গণ্য করা হবে।’
৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শেষে নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিলে বলা হয়, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ১১ ও ১২ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৪ ডিসেম্বর। প্রার্থীরা ১৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন। ভোট গ্রহণ হবে ৩০ ডিসেম্বর।