ফতুল্লায় মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় ছেলেকে তুলে নিয়ে ছুরিকাঘাত
Published: 8th, December 2025 GMT
ফতুল্লায় মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলেকে তুলে নিয়ে ছুরিকাঘাত করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় ৪ দিন অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা পুলিশ।
এরআগে গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টায় ফতুল্লার পূর্ব লামাপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। একই দিন রাতে ভিকটিম গোলাম রহমান জিসান (২১) এর মাতা নুরুন্নাহার বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযুক্তরা হলো, পূর্ব লামাপাড়া এলাকার সিরাজ উদ্দিনের ছেলে মামুন (৩৫) ও কামাল (৩৭) এবং কুতুবপুর এলাকার মৃত সামাদের ছেলে সুবুজ (৪০) সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন।
অভিযোগে নুরুন্নাহার উল্লেখ করেন, বিবাদীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তারা ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন মানুষদের হুমকি প্রদান করে। উক্ত বিবাদীরা আমার বাড়ী সংলগ্ন রাস্তার উপর এসে প্রায় সময় মাদক ক্রয়-বিক্রয় করে।
আমি গত ৭/৮ দিন পূর্বে উক্ত বিবাদীদের আমার বাড়ী সংলগ্ন মাদক ক্রয়-বিক্রয়ে বাধা নিষেধ করি এবং অন্যত্র চলিয়া যেতে বলি। এসময় তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব বলে জানাই। তখন তারা আমার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে আমার বড় ধরণের ক্ষতি করার হুমকি প্রদান করে।
তারই জের ধরে গত বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১ টার দিকে উক্ত বিবাদীরা সহ অজ্ঞাত ৮/১০ জন আমার বাড়ির সামনে এসে আমার ছোট ছেলে মো: গোলাম রহমান জিসানকে ফতুল্লা থানার কোবা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যায়।
এসময় আমার ছেলে চিৎকার করিলে বিবাদী মামুনের হাতে থাকা সুইচ গিয়ার দ্বারা আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘাই মারলে উহা লক্ষ ভ্রষ্ট হয়ে বাম হাতে লাগলে আমার ছেলে রক্তাক্ত জখম হয়।
পরবর্তীতে আমার ছেলে দৌড় দিলে তারা আমার ছেলেকে রাস্তায় ফেলিয়া মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। আমার ছেলের চিৎকারে স্থানীয় হানিফ ও লিটন এগিয়ে আসলে বিবাদীরা তাদেরকে মারধর করে নিলাফোলা জখম করে।
এসময় পর্যাপ্ত লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে বিবাদীরা আমাকেসহ আমার ছেলেদের জীবনে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
বিবাদীদের হুমকিতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। পরবর্তীতে আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল খানপুর নিয়ে যাই।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু রায়হান জানান, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ আম র ছ ল আম র ব
এছাড়াও পড়ুন:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ভবন সংস্কারের সুপারিশ মূল্যায়ন কমিটির
সংস্কার না করলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের অংশবিশেষ এবং অবকাশ ভবনসহ মোট পাঁচটি ভবন ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুঁকি মূল্যায়নসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি। ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতিতে গঠিত এ কমিটি ভবনগুলোকে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি—এই দুই ভাগে ভাগ করে রেট্রোফিটিংয়ের সুপারিশ করেছে।
রেট্রোফিটিং এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে পুরোনো ভবনকে শক্তিশালী করার জন্য সংস্কার করা হয় ও আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়। ভূমিকম্পের সময় ভবনকে সুরক্ষা দিতে ভবনে আলাদাভাবে স্টিলের কাঠামো যুক্ত করা কিংবা নতুন করে আস্তরণ দেওয়ার মাধ্যমে ভবনের আয়ু বাড়ানো হয়। সাধারণত ভবনের মূল কাঠামোতে বড় ধরনের সমস্যা না থাকলেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
ভূমিকম্প–পরবর্তী পরিস্থিতিতে গত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবন পরীক্ষা করে ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে ২৩ নভেম্বর একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিজ্ঞান ভবনের দক্ষিণ–পূর্ব, দক্ষিণ, উত্তর ও পশ্চিম অংশ এবং অবকাশ ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ বেশি। তাই রেট্রোফিটিং সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এসব ভবন ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
কমিটি গত বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া তাদের প্রতিবেদনে সাতটি সুপারিশ করেছে। সেগুলো হলো ক্লাস বা অফিস সময়ে সব সিঁড়ি ও কলাপসিবল গেট উন্মুক্ত রাখা; ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি—এই দুই ভাগে ভাগ করে রেট্রোফিটিং করা; স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে অতি ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলোর সংস্কারকাজ তাৎক্ষণিকভাবে শুরু করা; দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর ‘বিস্তারিত প্রকৌশল মূল্যায়ন (ডিইএ)’ করানো।
সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে ইতিমধ্যে ডিইএ সম্পন্ন হওয়া বিজ্ঞান ভবনের রেট্রোফিটিংয়ের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করা; ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে নতুন করে ফলস সিলিং করার অনুমতি না দেওয়া এবং পুরোনো ফলস সিলিংগুলোর ওপরে কোনো ফাটল বা ঝুঁকিপূর্ণ অংশ থাকলে তা পরীক্ষা করে রেট্রোফিটিংয়ের ব্যবস্থা করা।
কমিটির প্রতিবেদনে বিজ্ঞান ভবন ও অবকাশ ভবন ছাড়া সামাজিক বিজ্ঞান ভবন-১, ভাষাশহীদ রফিক ভবন, আইইআর ইনস্টিটিউট ভবন এবং পাঁচতলা কলাভবনকে তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে সেগুলোকেও সংস্কারের আওতায় আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঝুঁকি মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক মল্লিক আকরাম হোসেন আর সদস্যসচিব ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী। আট সদস্যের এই কমিটিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ।
কমিটির সদস্যসচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে প্রতিটি ভবনে সরেজমিনে কাজ করে এসব সুপারিশ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে আরও একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হচ্ছে, যাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিস্তারিত প্রকৌশল মূল্যায়ন করবে।’