কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়া পাঁচ নেতা ও দলীয় মনোনীত প্রার্থী পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছেন। দুই পক্ষের কর্মসূচির ফলে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

আজ সোমবার বেলা একটার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোডে মনোনয়ন না পাওয়া জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রেজাউল করিম খানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে দলের পাঁচ নেতা একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করেন। তাঁরা বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলামের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানান। অন্যদিকে বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা শহরের রথখলা মাঠ থেকে মাজহারুল ইসলামের পক্ষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবারও রথখলা মাঠে এসে জড়ো হয়। সেখানে মাজহারুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে মাজহারুল ইসলাম ছাড়াও বিএনপি থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ হিলালী, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রেজাউল করিম খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ালীউল্লাহ্ রাব্বানী, সাবেক সহসভাপতি রুহুল হোসাইন, সাবেক সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ।

মনোনয়নবঞ্চিত এই নেতাদের মধ্যে ওয়ালীউল্লাহ রাব্বানী ছাড়া বাকি পাঁচজন মাজহারুলের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। তাঁরা প্রতিবাদ সভা, সংবাদ সম্মেলন, মশাল মিছিলসহ নানা কর্মসূচির পাশাপাশি মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করে আসছেন।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পাঁচ নেতা বলেন, মাজহারুল ইসলাম ১৭ বছর ধরে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না। তিনি দুর্দিনে কোনো নেতা-কর্মীর খোঁজখবর নেননি। গত স্বৈরাচার সরকারের সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেখানে শত শত মামলা–মোকদ্দমায় জর্জরিত ছিলেন, সে সময়ে মাজহারুল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। তিনি আওয়ামী লীগের দালালি করেছেন। তাঁর মতো অযোগ্য লোককে মনোনয়ন দেওয়ায় তাঁরা হতাশ।

বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়া পাঁচ নেতার সংবাদ সম্মেলন। আজ সোমবার বেলা একটার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের স্টেশন রোডে বিএনপি নেতা রেজাউল করিমের দলীয় কার্যালয়ে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ব এনপ র শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

৭ বছর পর জাতীয় নির্বাচনে ফিরছে জেএসএস

পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম বড় আঞ্চলিক দল জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) জাতীয় নির্বাচনের রাজনীতিতে ফিরছে। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও আগামী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে দলটি।

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি—তিন আসনেই প্রার্থী দেবে দলটি। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার কথা জানিয়েছে জেএসএস।

২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন জেএসএসের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। তিনি বলেন, নির্বাচন হলে জেএসএস অংশ নেবে। নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রথমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ঊষাতন তালুকদার। তবে দেশের ওই সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছিলেন তিনি।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) প্রার্থী দীপংকর তালুকদারকে হারিয়ে জিতেছিলেন জেএসএসের সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার।

জেএসএস সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল ২০১৮ সালে। ওই বছর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে দ্বিতীয় হয়েছিলেন জেএসএসের সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার।

জাতীয় নির্বাচনে জেএসএসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণায় পার্বত্য চট্টগ্রামের নির্বাচনী রাজনীতির হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রগুলো। কেননা, ৫০ বছরের বেশি পুরোনো পাহাড়ের এই রাজনৈতিক দলের স্থানীয় রাজনীতিতে বেশ প্রভাব রয়েছে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাবনা কার্যত নেই। এতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে মূল লড়াই হওয়ার কথা থাকলেও পাহাড়ে তা হচ্ছে না। এখানে অন্যতম মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকবে জেএসএস। ইউপিডিএফও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রথমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ঊষাতন তালুকদার। তবে দেশের ওই সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছিলেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা জানান, পাহাড়ের স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে ভূমিকা রাখে আঞ্চলিক দলগুলো। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) না থাকায় এই দলগুলোর গুরুত্ব আরও বাড়বে।

রাজনৈতিক দল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৭২ সালে। সক্রিয় রাজনৈতিক দল না হলেও ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম উপজাতি কল্যাণ পরিষদের’ ব্যানারে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমা। যিনি জেএসএসের প্রতিষ্ঠাতা।

পার্বত্য চুক্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে গঠিত হয় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। ২০০৭ সালে জেএসএস ভেঙে তৈরি হয় জেএসএস (এম এন লারমা)। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ইউপিডিএফ ভেঙে তৈরি হয় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)।

জেএসএসের সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌনমিছিল
  • হবিগঞ্জে বিলের দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ৩০ আহত
  • কিশোরগঞ্জ-১: বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত চার নেতা এক মঞ্চে, একসঙ্গে বিক্ষোভ
  • ফিকির নতুন সভাপতি হচ্ছেন রুপালী হক চৌধুরী
  • গোপালগঞ্জে জামায়াতের হিন্দু শাখা থেকে ৯ নেতার পদত্যাগ
  • ৭ বছর পর জাতীয় নির্বাচনে ফিরছে জেএসএস