রাজশাহীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই নেতাসহ তিনজনকে মাইক্রোবাসচাপায় হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহীর মতিহার থানাধীন চৌদ্দপাই এলাকায় ওই তিনজনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ঘটনার পর মাইক্রোবাসটি পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় আহত তিনজন হলেন—এনসিপির রাজশাহী জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম সাজু, সদস্য আব্দুল বারী ও সাংবাদিক সোহানুর রহমান সোহান। সাংবাদিক সোহান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার মিডিয়া সেলের সদস্য। তারা তিনজন একই মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন।

ঘটনার পর তিনজনকেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে নাহিদুল ইসলাম সাজু ও সোহান প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিয়ে চলে গেছেন। আব্দুল বারীর একটি পা ভেঙেছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সাজু দুই পা ও হাতের কবজিতে আঘাত পেয়েছেন। সোহানের হাতে জখম হয়েছে। সন্ধ্যায় তারা দুজন নগরের মতিহার থানায় ছিলেন।

সাজু জানিয়েছেন, রাজশাহী জেলা এনসিপিতে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে বিকেলে তারা একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেটি শেষ করে তারা কাটাখালীতে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় উল্টোপথে আসা একটি মাইক্রোবাস তাদেরকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। 

তিনি জানান, রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের ওই স্থানটি ফোর লেন। উল্টোপথে গাড়ি আসার কারণ নেই। তারপরও ওই মাইক্রোবাসটি উল্টোপথে এসে তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। মাইক্রোবাসের পেছনে চারটি মোটরসাইকেল ছিল। ধাক্কা দেওয়ার পর সবাই পালিয়েছে।

সাজু বলেন, “এটি অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা। এ ঘটনায় অভিযোগ দিতে আমরা থানায় এসেছি।”

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বলেছেন, “বিষয়টা আমি এখনো জানি না। ওসির সঙ্গে কথা বলে জানার পরে বলতে পারব। এমন ঘটনা ঘটলে পুলিশ অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।”

ঢাকা/কেয়া/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য র চ ষ ট ত নজনক এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

মতলবে দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন যুবদল নেতা 

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. হোসেন মিয়া হঠাৎ করেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। 

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি এ ঘোষণা দেন। ভিডিওতে তাকে দুধ দিয়ে গোসল করতে দেখা যায়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ভিডিওর সাথে দেওয়া স্ট্যাটাসে ক্ষোভ, হতাশা ও বঞ্চনার কথা প্রকাশ করেছেন হোসেন মিয়া। তিনি লিখেছেন: আমার এই ভিডিওটা দেখার পর সবার কাছে আমি হাসির পাত্র হিসেবে থাকবো, এমনিতেই আমি আজ সবার হাসির পাত্র। আমি ধ্বংস হইনি। আমাকে ধ্বংস করা হয়েছে, আর সেটা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সিস্টেমের কাছে যে সিস্টেমটার নাম হচ্ছে টাকা আর ষড়যন্ত্র।

তিনি আরও লেখেন, আমার কাছের মানুষগুলো আমার সাথে ষড়যন্ত্র করেছে। আমার মতো মানুষের রাজনীতিতে দুই-চারটা না থাকলে কিছুই হবে না। কিন্তু একটা প্রশ্ন রেখে যাই আমার লড়াইটা কিসের জন্য ছিল? আমার লড়াইটা ছিল বিএনপির জন্য, যুবদলের জন্য, চাঁদপুর-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী জালাল সাহেবের জন্য।

হোসেন মিয়া দাবি করেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ‘দোসরদের যোগসাজশে’ তাকে রাজনীতি থেকে সরানো হয়েছে। আজ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের দোসররা মিলেমিশে ষড়যন্ত্র করে, টাকার পাওয়ারে, ক্ষমতার পাওয়ারে আমার মত ক্ষুদ্র কর্মীকে ধ্বংস করেছে- লেখেন তিনি।

পোস্টে তিনি আরো উল্লেখ করেন, সকল প্রকার রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। বলার মতো অনেক কথা আছে কিন্তু ভাষা নেই। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

হোসেন মিয়ার ভিডিও ও বক্তব্য ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, অনেকে এ ঘটনাকে ‘আবেগী সিদ্ধান্ত’ বা ‘অতিরঞ্জন’ হিসেবে দেখছেন।

কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. মহসিন ও সাধারণ সম্পাদক রফিক তাতী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের অন্যতম সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ হোসেনের প্রতি গ্রাম্য সালিশে অপমানজনক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা শুধু তার প্রতি নয় কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলসহ সংগঠনের মর্যাদা ও আত্মসম্মানের ওপর প্রকাশ্য আঘাত।

তারা আরও বলেন, রাজনৈতিক কর্মীদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপমান ও অসম্মান করার এই আচরণ অগ্রহণযোগ্য, নিন্দনীয় এবং পরিকল্পিত। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

যুবদল নেতারা দাবি করেন, এই সালিশ বিচারের মাধ্যমে যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত এবং যারা অপমানজনক রায় প্রদান করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ জামান টিপু বলেন, ‘‘আমরা হোসেন মিয়ার ভিডিওটি দেখেছি। রাজনীতি হচ্ছে আদর্শ ও সংগঠনের জন্য কাজ করার জায়গা। ব্যক্তিগত হতাশা বা চাপের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া দুঃখজনক। তিনি আমাদের কর্মী ছিলেন, ভুল বোঝাবুঝি বা অভিমান থাকলে আলোচনা ও সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যেই সমাধান হতে পারত। আমরা তাকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘যুবদলে কাউকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কখনো ব্যক্তিগতভাবে নেয় না। দলের নিয়ম, কমিটি ও মূল্যায়নের ভিত্তিতেই সব সিদ্ধান্ত হয়। যদি তিনি মনে করেন কেউ অন্যায় করেছে সংগঠন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।’’

ঢাকা/অমরেশ//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মতলবে দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন যুবদল নেতা 
  • রামুতে জমি নিয়ে বিরোধে বৌদ্ধ বিহারে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ৩