অচল জাহাজে ছিল না বিদ্যুৎ। ফুরিয়ে যায় খাবারও। তীব্র শীত ও বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া ছিল বিরূপ। এমন আবহওয়ায় এক কক্ষে গাদাগাদি করে অনিশ্চয়তায় দিন কাটছিল বাংলাদেশি একজনসহ ১০ নাবিকের। এর মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন দুজন নাবিক। প্রায় এক সপ্তাহের অনিশ্চয়তার পর গতকাল রোববার ও আজ সোমবার তাঁদের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বুলগেরিয়ান কোস্টগার্ড রোববার হেলিকপ্টার পাঠিয়ে কৃষ্ণসাগরে ভাসতে থাকা জাহাজটিতে প্রথমে খাবার পাঠায়। ফিরতি পথে অসুস্থ হয়ে পড়া দুই নাবিককে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসে। আজ সোমবার দ্বিতীয় দফায় আটজনকে জাহাজ থেকে হেলিকপ্টারে তুলে আনা হয়।

উদ্ধার হওয়া জাহাজটির চতুর্থ প্রকৌশলী মাহফুজুল ইসলামের পাঠানো এক ভিডিওতে দেখা যায়, হেলিকপ্টার থেকে ফেলা রশি বেয়ে নাবিকদের জাহাজ থেকে টেনে তোলা হচ্ছে। বর্তমানে তিনিসহ উদ্ধার হওয়া নাবিকেরা বুলগেরিয়ায় অবস্থান করছেন।

মাহফুজুল ইসলাম বুলগেরিয়া থেকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে বিরূপ আবহাওয়া ও নিয়ন্ত্রণহীন অচল জাহাজে ভাসছিলাম। বিদ্যুৎ ও খাবার না থাকায় জীবনের শঙ্কা ছিল। দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত বুলগেরিয়ান কোস্টগার্ড হেলিকপ্টার দিয়ে আমাদের উদ্ধার করল।’

কৃষ্ণসাগরে গত ২৮ নভেম্বর তেল পরিবহনকারী এমটি কায়রোস জাহাজে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা হয়। এ হামলায় প্রাণে বেঁচে যান জাহাজটিতে থাকা বাংলাদেশের ৪ জনসহ ২৫ নাবিক। জ্বালানি তেলবাহী জাহাজটি রাশিয়ার ‘ছায়া নৌবহরের’ অংশ বলে বিবিসি জানায়।

হামলার দুই দিন পর জাহাজটিতে থাকা বাংলাদেশের তিনজন নাবিক তুরস্ক থেকে দেশে ফিরে আসেন। এই তিনজন হলেন কুষ্টিয়ার আল আমিন, ঢাকার ধামরাইয়ের হাবিবুর রহমান এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার আজগর হোসাইন।

তবে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি তীরের কাছে আনতে জাহাজের মালিকপক্ষ গত ৩০ নভেম্বর কৃষ্ণসাগরে পাঠায় মাহফুজুল ইসলামসহ ১০ নাবিককে। তারা জাহাজটি তুরস্কের কোস্টগার্ডের টাগবোটের সহায়তায় তুরস্কের উপকূলে নিয়ে আসে। কিন্তু অচল হয়ে পড়া জাহাজটি নোঙর ফেলতে না পারায় তুরস্কের উপকূল ছেড়ে ঢেউয়ে ভাসতে ভাসতে বুলগেরিয়ার জলসীমায় চলে যায়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেখানে আটকা পড়েছিলেন নাবিকেরা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে আটকে পড়া নাবিকেরা জীবন-মৃত্যুর শঙ্কায় পড়ে যান। তাঁদের উদ্ধারে আকুতি জানান বুলগেরিয়ার কোস্টগার্ডকে।

নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খবর জানার পরই বুলগেরিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, যাতে সেখানকার কোস্টগার্ড নাবিকদের দ্রুত উদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়। বুলগেরিয়ার কোস্টগার্ড নিরাপদে নাবিকদের উদ্ধার করেছে। বাংলাদেশের মাহফুজুল ইসলাম নিরাপদে আছেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ল কপ ট র ত রস ক উদ ধ র জ হ জট

এছাড়াও পড়ুন:

কম্পিউটার সিটির মেলা শুরু, কমদামে প্রযুক্তিপণ্য কেনাসহ পুরস্কারও পাওয়া যাচ্ছে

বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর হালনাগাদ প্রযুক্তিপণ্য নিয়ে আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে দেশের সবচেয়ে বড় কম্পিউটার বাজার বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে শুরু হয়েছে ‘সিটি আইটি মেগা ফেয়ার ২০২৫’ নামের কম্পিউটার মেলা। ছয় দিনের এই মেলায় মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ক্রেতাদের নানা ধরনের উপহার দিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ফলে কমদামে সর্বশেষ প্রযুক্তির পণ্য কিনতে উদ্বোধনের পরপরই মেলায় এসেছেন অনেকে। দুপুরে মেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এক্সেল টেকনোলজিস লিমিটেডর ব্যবস্থাপনা পরচালক গৌতম সাহা এবং গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন খোন্দকার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকার প্রতিবছর শতকোটি টাকার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কিনে স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করে। কিন্তু বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, সেই ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ডাস্ট কাভার দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বলা হয়, খুব বেশি ধরা যাবে না, নষ্ট হয়ে যাবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে কম্পিউটার পৌঁছাতে পারলে এই দেশ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে পিছিয়ে থাকবে না, বরং আগামী দিনগুলোতে প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির দিকে দ্রুত এগিয়ে যাবে। আর তাই প্রতিটি শিশুর কাছে কম্পিউটার পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস কম্পিউটার সিটির সভাপতি আকতার হোসেন। তিনি বলেন, প্রযুক্তিপণ্যের গ্রাহক ও বিক্রেতাদের মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি করাই এই মেলার লক্ষ্য। মেলায় দেশের বাজারে থাকা নতুন সব প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জানা যাবে। প্রতিবছরের মতো এবারও মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য নানা ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।

মেলার প্রধান ফটক

সম্পর্কিত নিবন্ধ