গাইবান্ধায় তরুণের হাত থেকে কব্জি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ
Published: 8th, December 2025 GMT
গাইবান্ধায় প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে রুবেল মিয়া (২৭) নামে এক তরুণের কব্জি হাত থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে গাইবান্ধা পৌর এলাকার শাপলা মিল এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহত রুবেল মিয়া গাইবান্ধা পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোকাব্বর আলীর ছেলে।
আরো পড়ুন:
বগুড়ার জুলাই শহীদ কমর উদ্দিনের বাড়িতে হামলা
নোয়াখালীতে বুলুর নির্বাচন কমিটি গঠনের সভায় হামলা-ভাঙচুর
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন এসব তথ্য দিয়েছেন।
গুরুতর আহত রুবেল মিয়াকে প্রথমে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানোর কথা।
ওসি জানান, রুবেল মিয়া তার বন্ধু মোশারফ রহমানের সঙ্গে শাপলা মিল এলাকার সুখনগরে দেখা করতে যান। তখন জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মোশারফের প্রতিপক্ষ একই এলাকার বাবুসহ পাঁচজন রুবেলের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রুবেলের ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে দেয়। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেন।
গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মুত্তাজুল ইসলাম বলেন, “জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এই সংঘাতে উভয় পক্ষের তিনজন আহত হয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবু গ্রুপের পাঁচজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুজন নারী। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
ঢাকা/মাসুম/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে আওয়ামী লীগের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (মানি লন্ডারিং-১) আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় সিলেটে মামলাটি করেন।
সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির পরও হিসাব দাখিল না করার পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা হয়েছে বলে দুদক দূত্রে জানা গেছে। মামলায় সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। দুদক সিলেটের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস্ সা’দাৎ আজ সোমবার রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাফী মো. নাজমুস্ সা’দাৎ জানান, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে। এ জন্য তাঁকে নিজের সম্পদ ঘোষণার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে সম্পদের তথ্য না দেওয়ায় কিংবা সময় বাড়ানোর আবেদন না করায় কমিশনের অনুমোদনের ভিত্তিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটি (নন-সাবমিশন) দায়ের করেছেন। বিধি অনুযায়ী তদন্ত ও পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আনোয়ারুজ্জামান ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রায় আট মাস দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি নির্বাচনী হলফনামায় লন্ডনে তাঁর নিজ নামে থাকা ৪ হাজার বর্গফুটের একটি বাড়ি, ১ হাজার ৮০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট এবং একটি রেস্টুরেন্টের তথ্য উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া ঢাকার পূর্বাচলে রাজউক বরাদ্দ করা পাঁচ কাঠা জমির তথ্যও গোপন করেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২৪-২০২৫ সালে দাখিল করা আয়কর রিটার্ন অনুসারে আনোয়ারুজ্জামানের মোট ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকার সম্পদ রয়েছে। তবে এ সম্পদ তিনি কীভাবে অর্জন করেন, এর কোনো সঠিক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি ৯৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকার অগ্রহণযোগ্য নিট সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করেছেন বলে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছে। তবে এ নিট সম্পদের হিসাবে যুক্তরাজ্যে থাকা ফ্ল্যাট, বাড়ি ও রেস্তোরাঁর মূল্য আনা হয়নি।
দুদক বলছে, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আয়কর রিটার্নে বা নির্বাচনী হলফনামায় তাঁর সম্পদের উৎস, ধরন, সময় ও মূল্য উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া দুদক সম্পদ বিবরণী আদেশ জারির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে দাখিল না করায় তিনি দুদক আইন অনুযাযী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এদিকে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী লন্ডনে চলে যান। মামলার বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুদকের আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়া। জীবনে কখনো একটি পয়সাও আমি অবৈধভাবে অর্জন করিনি। রাষ্ট্রীয় মদদে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার সম্পর্কে মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে।’
আনোয়ারুজ্জামান দাবি করেন, ‘হলফনামায় বিদেশের সম্পদ দেখানোর কোনো অপশন ছিল না, তাই বিদেশের সম্পদ দেখাতে পারিনি। এসব আমার বহু আগে অর্জিত সম্পদ। এ ছাড়া রাজউকের প্লটটি বৈধভাবে বরাদ্দ পেলেও সেটি আমাকে এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রারি করে দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। তাই সেটি সম্পদ হিসেবে দেখানোর সুযোগও ছিল না। আর আইএফআইসি ব্যাংকে আমি স্বাধীন পরিচালক ছিলাম।’
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২০২৩ সালের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ১৯ আগস্ট সিলেটসহ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার।