সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় আ.লীগ নেতা বুলবুল গ্রেপ্তার
Published: 24th, November 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের মামলার প্রধান আসামি এবং আলগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান বুলবুলকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার আলগী ইউনিয়নের হরিরহাট বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভাঙ্গা থানা ভাঙচুরের অভিযোগে তার নামে মামলা রয়েছে।
আরো পড়ুন:
যশোরে চাচাত ভাইকে হত্যার দায়ে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রামে থানায় পুলিশ কর্মকর্তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের হওয়া মামলার আসামি হিসেবে বুলবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভাঙ্গা থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর উপপরিদর্শক আফজাল হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ভাঙ্গা থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় মোট ৬০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া তৌহিদুর রহমান বুলবুল ওই মামলার ১ নম্বর আসামি।
গত ১৩ নভেম্বর ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক ও ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের একাধিক স্থানে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৬ নভেম্বর পুলিশ বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় চারটি মামলা করা হয়। ওই চারটি মামলায় আওয়ামী লীগের ১৭৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত অনেককে আসামি করা হয়।
ঢাকা/তামিম/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আসামি ধরতে মধ্যরাতে বাড়িতে পুলিশ, আতঙ্কে প্রবাসীর মৃত্যু
ফেনীর ফুলগাজীতে প্রতিবেশীর করা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের আতঙ্কে প্রবাসী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ব্যক্তির নাম নুর হোসেন (৫৪)। তিনি উত্তর শ্রীপুর গ্রামের মৃত মীর হোসেনের ছেলে। নুর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সৌদিপ্রবাসী। পরিবারে তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর গ্রামে কয়েকজনের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মর্জিনা আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূর মাথা ফেটে যায়। আহত গৃহবধূ ওই রাতেই বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে ফুলগাজী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী তাঁর প্রতিবেশী প্রবাসী নুর হোসেনকে আসামি করেন। মামলার পর রোববার রাত দুইটার দিকে ফুলগাজী থানা-পুলিশের সদস্যরা আসামি নুর হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাড়িতে যান।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নুর হোসেন ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়েরের সহযোগিতায় নুর হোসেনের ঘরের দরজা খোলে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে নুর হোসেন জ্ঞান হারান। রাতেই তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি থেকে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক নুর হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মরদেহ সোমবার সকাল পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিল।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়ের জানান, রাত দুইটার দিকে পুলিশ তাঁকে ডেকে নুর হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যায়। তিনি নুর হোসেনকে দরজা খুলতে বললে তিনি দরজা খোলেন। এ সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গেলে নুর হোসেন জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাতে নুর হোসেনকে হাসপাতালে আনা হলেও তার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ফুলগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নুর হোসেনের বোন রাজিয়া সুলতানা অভিযোগ করে বলেন, ‘দিনে মারামারির ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। রাতে মামলা হয়েছে, মধ্যরাতে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ বাড়ি এসেছে। আমার ভাই কি খুনি না দাগি আসামি যে পালিয়ে যাবে। রাতের বেলা কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে হবে।’
নুর হোসের স্ত্রী রিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিবেশীদের মারামারি মধ্যে আমার স্বামী উপস্থিত ছিলেন না। তবু কেন আমার স্বামীকে আসামি করা হয়েছে? পুলিশ দিনের বেলা আসামি ধরতে না এসে রাতের বেলা কেন এল? আমার স্বামী তো প্রায় এক বছর ধরে বাড়িতেই রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুম বলেন, কী কারণে প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে তা জানতে মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রয়োজন। তাতে পরবর্তী সময়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইনগত জটিলতা থাকবে না।