রায়পুরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে কুয়েতপ্রবাসী যুবক নিহত
Published: 8th, December 2025 GMT
নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রবাসী এক যুবক নিহত হয়েছেন। কুয়েতপ্রবাসী ওই যুবক ১৫ দিন আগে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। এ ছাড়া আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে রায়পুরার চরাঞ্চল নিলক্ষার দড়িগাঁও এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মামুন মিয়া (২৫)। রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নের দড়িগাঁও এলাকায় আবদুল আউয়ালের ছেলে তিনি। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রয়াত ইউপি সদস্য শহীদের দলের সঙ্গে ফেলু মিয়ার দলের দ্বন্দ্ব চলছিল। আজ সকালে স্থানীয় বাজারে ফেলু মিয়ার মেয়ের জামাই মামুন মিয়ার সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয় প্রতিপক্ষের লোকজনের। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় তাঁদের মধ্যে হামলা ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে মামুন মিয়াসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।
আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আউয়াল মিয়া ও পরশ মিয়া নামে গুলিবিদ্ধ দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সৈয়দা গুলশানারা কবীর বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হচ্ছে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একজনের মৃত্যুর খবর শুনেছি। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ধানের শীষের ভোট চেয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন প্রধান শিক্ষক
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ধানের শীষে পক্ষে ভোট চেয়েছেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষীকুন্ডা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে ঈশ্বরদী উপজেলার চররূপপুর এলাকায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এই স্লোগান দেন। তার দেওয়া বক্তব্যের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আরো পড়ুন:
বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘর বিক্রির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারী ৭ শিক্ষককে শোকজ
দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় না থেকেই যে উন্নয়ন করছে, ক্ষমতায় আসলে আরো বেশি উন্নয়ন করতে পারবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছিলেন। তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ পাসেন্ট ইনক্রিমেন্ট চালু করেছিলেন। আগামীতে যদি ধানের শীষকে নির্বাচিত করেন তাহলে আরো বেশি উন্নয়ন হবে।”
তিনি বলেন, “আপনারা সবাই দোয়া করবেন, বেগম খালেদা জিয়া যেন আবার সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন। ধানের শীষের বিজয় অর্জনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে, এই আশা ব্যক্ত করে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি, জয় বাংলা, জয়...।” কথা শেষ না করেই তিনি মাইক্রোফোন অন্যজনের হাতে দিয়ে দেন।
একজন প্রধান শিক্ষকের সরাসরি রাজনৈতিক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ এবং দলীয় ভোট চাওয়া নিয়ে ইতোমধ্যে উপজেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে শাস্তির দাবিও করেছেন অনেকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয় ফান্ডের টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম আড়াল করতে ৫ আগস্টের আগে সিরাজুল ইসলাম কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সান্নিধ্যে চলতেন। সরকার পতনের পর হঠাৎ বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছেন। রীতিমতো সভা-সমাবেশ ও মিছিল মিটিংয়ে যোগদান করে বক্তব্যও দিতে দেখা যাচ্ছে তাকে। তিনি যে আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট তা তার বক্তব্যে পরিষ্কার।
এ বিষয়ে লক্ষীকুন্ডা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল বলেন, “আমি রাজনীতি করি না, পূর্বেও কখনো করিনি। শিক্ষক হিসেবে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে একটি দলের পক্ষে বক্তব্য দেওয়া আমার ঠিক হয়নি। জয় বাংলা ভুলে বলে ফেলেছি। এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃক্ষিত।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজমল হোসেন সুজন। তিনি বলেন, “স্থানীয় যুবসমাজের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিলো। এটি দলীয় আয়োজন ছিল না। সিরাজুল ইসলাম বক্তব্যের শেষে জয় বাংলা বলে ফেলেছেন এবং তাৎক্ষণিক ক্ষমাও চেয়েছেন। যেহেতু তিনি শিক্ষক এবং আমাদের দলের কেউ না, তাই এ বিষয়ে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই।”
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষকদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। সিরাজুল ইসলামের বক্তব্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “একজন শিক্ষক হিসেবে, সরকারি কর্মচারী হিসেবে রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ