জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আজ সোমবার প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। ‘ক্যামেরা ট্রায়ালের’ মাধ্যমে এ জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এটিই প্রথম কোনো জবানবন্দি, যা ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে সম্পন্ন হলো।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ এই মামলার বিচার চলছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো.

মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আজ এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ক্যামেরা ট্রায়ালে শুধু আইনজীবী, আসামি ও সাক্ষী ছাড়া কেউ উপস্থিত থাকেন না। সেভাবেই আজ এই সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।

তাজুল ইসলাম বলেন, যাঁরা এই ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী হবেন, তাঁদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করার দায়িত্ব রাষ্ট্র ও আদালতের। সেই আঙ্গিকে কোনো সাক্ষীকে ভয়ভীতি যাতে না দেখানো যায়, তাঁর পরিচিতি যাতে উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, ভবিষ্যতে যাতে অন্য কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে হুমকি বোধ না করেন; সে জন্যই এভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।

হানিফ ছাড়াও এ মামলার আসামি কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী ও কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।

গত ২ নভেম্বর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়। গণ-অভ্যুত্থানের সময় কুষ্টিয়া শহরে ছয়জনকে হত্যাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৫ নভেম্বর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। আজ এ মামলায় ‘ক্যামেরা ট্রায়ালের’ মাধ্যমে প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হলো।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহণ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এনইআইআর বাস্তবায়ন ও কর–কাঠামোর দাবি এমআইওবির

১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) বাস্তবায়ন এবং মোবাইল হ্যান্ডসেট খাতের সুষ্ঠু বিকাশে সুষম কর–কাঠামো প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। আজ সোমবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় মোবাইলশিল্পের বর্তমান চিত্র ও প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরেন এমআইওবির সভাপতি জাকারিয়া শহীদ। তিনি জানান, বর্তমানে দেশে ১৮টি মোবাইল সংযোজন ও উৎপাদন কারখানা গড়ে উঠেছে, যেখানে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। এই খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী শ্রমিক। কারখানাগুলো ১৫ লাখ স্মার্টফোন ও ২৫ লাখ ফিচার ফোন প্রতি মাসে উৎপাদন করতে পারে। অবৈধ বা গ্রে মার্কেটের কারণে সরকার বছরে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে। গ্রে মার্কেটের আকার প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা, যা স্থানীয় শিল্পের ৩০-৪০ শতাংশ উৎপাদন সক্ষমতাকে অব্যবহৃত রাখছে। এনইআইআর বাস্তবায়িত হলে এই অবৈধ বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এবং সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে।

এমআইওবির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, এনইআইআর চালু হলে ফোনের দাম বাড়বে—এমন প্রচার একটি বিশেষ মহলের স্বার্থরক্ষার জন্য ছড়ানো হচ্ছে। বরং গ্রে মার্কেট বন্ধ হলে দেশে হাই-এন্ড ফোন উৎপাদন সম্ভব হবে এবং গ্রাহকেরা বর্তমানের চেয়ে কম দামে ভালো মানের ফোন পাবেন।

মোবাইলশিল্পে সিন্ডিকেট ও নতুন করে কর আরোপের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলেও দাবি করেছে এমআইওবি। তাদের দাবি, ১৮টি প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি প্রমাণ করে এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার, এখানে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই। এ ছাড়া মোবাইল আমদানিতে ৫৭ শতাংশ শুল্ক ২০১৯ সাল থেকেই চালু রয়েছে, বর্তমান সরকার নতুন কোনো কর আরোপ করেনি।

এমআইওবির মতে, এনইআইআর সিস্টেম চালু হলে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া বৈধ রিফারবিশ বা পুরোনো ফোন বেচাকেনায় কোনো বাধা থাকবে না। ফলে এনইআইআর দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য একটি জাতীয় ঢাল হিসেবে কাজ করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী ও মোবাইল ডিস্ট্রিবিউশন অ‍্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাহুল কাপুড়িয়া।

সম্পর্কিত নিবন্ধ