‘গণহারে অভিবাসন যুক্তরাষ্ট্রের স্বপ্ন চুরির শামিল’—যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের এমন মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবারও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিকদের কাছ থেকে সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে।

এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘গণহারে অভিবাসন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের স্বপ্ন চুরির শামিল। এর বিরোধিতা করে যেসব চিন্তক প্রতিষ্ঠানের লেখা ও অর্থনৈতিক গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলোর পেছনে অর্থ ঢেলেছে পুরোনো ব্যবস্থার মাধ্যমে ধনী হয়ে ওঠা কিছু মানুষ।’

লুইজিয়ানার একটি আবাসন কোম্পানির মালিকের ভিডিওর প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেডি ভ্যান্স এ পোস্ট দেন। ওই মালিক দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) রাজ্যে অভিযান শুরুর পর থেকে তিনি নাটকীয় পরিবর্তন দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো অভিবাসী এখন আর কাজে যেতে চায় না। বিষয়টি সত্যি অবাক করার মতো।’

অভিবাসীদের নিয়ে ভ্যান্সের এমন মন্তব্য নিয়ে অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। অনেকেই তাঁকে নিজের পরিবারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তাঁর স্ত্রী উষার মা-বাবা ভারতীয় অভিবাসী। আর ভ্যান্স-উষা দম্পতির তিন সন্তানও রয়েছে। তাঁর ছেলেদের নাম ইউয়ান ও বিবেক এবং এক মেয়ের নাম মিরাবেল।

ভ্যান্সের পোস্টের নিচে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আপনার স্ত্রী কি ভারতীয় অভিবাসী পরিবারের সদস্য নন?’

আরেকজন লিখেছেন, ‘তাহলে আপনাকে উষা, তাঁর ভারতীয় পরিবার এবং আপনার সন্তানদের ভারতে ফেরত পাঠাতে হবে। উড়োজাহাজের টিকিট কখন কিনছেন, তা আমাদের জানাবেন। আপনাকে নেতৃত্ব দিয়ে উদাহরণ তৈরি করতে হবে।’

বেশ কয়েকজন লিখেছেন, ‘আপনার স্ত্রী এবং সন্তানেরা মার্কিনদের স্বপ্ন চুরি করছে।’

এর আগে দ্য নিউইয়র্ক পোস্টের এক পডকাস্টে ভ্যান্স বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা যদি তাঁদের প্রতিবেশীদের দিকে তাকিয়ে বলেন, আমি এমন মানুষের পাশে বসবাস করতে চাই, যাঁদের সঙ্গে আমার কিছু মিল আছে। তাহলে সেটা যুক্তিসংগত ও গ্রহণযোগ্য হবে।’

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যের পরও বিতর্ক হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র আপন র স

এছাড়াও পড়ুন:

আল্লাহ সবকিছুর উত্তম বিচারক, বোনদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ডিপজল

হঠাৎ করেই ইন্ডাস্ট্রি ও এলাকাবাসীর কাছে ‘দানবীর’ হিসেবে পরিচিত অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বিরুদ্ধে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ এনেছেন সহোদর তিন বোন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডিপজল এটাকে ‘মিথ্যা অপবাদ’ দাবি করে লিখেছেন—“আল্লাহই সবকিছুর উত্তম বিচারক।”  

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডিপজল নাতিদীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে এই মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি তার বোনদের অভিযোগকে ‘মিথ্যা অপবাদ’ বলে দাবি করেন। অপরদিকে ভক্ত ও এলাকাবাসীরা বোনদের এমন দাবিকে দেখছেন ‘প্ররোচনা’ হিসেবে। 

আরো পড়ুন:

খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইলেন ডিপজল

শিল্পীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা বন্ধের আহ্বান ডিপজলের

ডিপজল তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বলেন, “সম্প্রতি আমার কিছু বোন আমাকে নিয়ে যে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দিয়েছে, তার বিষয়ে আমি আপনাদের সামনে কিছু বাস্তবতা তুলে ধরতে চাই। প্রথমেই পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই বক্তব্য দেওয়ার উদ্দেশ্য কাউকে অসম্মান করা নয়। বরং আমার প্রতি ছড়ানো ভুল ধারণা ও মিথ্যা অপবাদের বিষয়ে সত্য তুলে ধরা। মামলার আইনি জবাব আমি আইন অনুযায়ী দেব, ইনশাআল্লাহ।” 

ডিপজল তার এক বোনের অভিযোগ খণ্ডন করে আফসোসের স্বরে বলেন, “আমার বোনদের আমি সবসময় সম্মান, ভালোবাসা ও সাধ্যমতো সহযোগিতা করে এসেছি—এ কথা আমার এলাকার মানুষ ও আশেপাশের পরিচিত সবাই জানেন। একজন বোন ক্যামেরার সামনে কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, তার অসুস্থ সন্তানের খোঁজ কেউ নেয়নি। অথচ তার সন্তানের চিকিৎসার জন্য আল্লাহর দেওয়া সামর্থ্য অনুযায়ী, আমি আমার পক্ষ থেকে একটি বড় অংকের সহায়তা করেছি এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা ভারতে পর্যন্ত করেছি। আজ ক্যামেরার সামনে তিনি যেন সব ভুলে গেলেন! পর্দায় অভিনয় আমি করি, বাস্তব জীবনে নয়। যদি জানতাম কোনোদিন বাস্তব জীবনে এমন অভিনয়ের সম্মুখীন হতে হবে, তাহলে হয়তো প্রতিটি কাজের প্রমাণ রেখে দিতাম।” 

আরেক বোনের অভিযোগের বিষয়ে ডিপজল বলেন, “আরেক বোন বলেছেন, ১১ বছর ধরে নাকি আমার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। অথচ মাত্র দুই মাস আগেই তাকে ও তার সন্তানকে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ সাহায্য করা হয়েছে। আমার সাধ্যের মধ্যে সবসময়ই আমি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এত কিছু লিখে শেষ করা সম্ভব নয়।” 

প্রশ্ন তুলে ডিপজল বলেন, “৩৫ বছর পর আজ হঠাৎ তারা কেন এবং কার প্ররোচনায় এমন মিথ্যা বলছে—এ প্রশ্ন আমারও আছে। যদি সত্যিই কোনো দাবি থাকত, ভালোবাসার সম্পর্ক ধরে সরাসরি বললেই আমি তাদের ২/৩ গুণ বেশি দিয়ে দিতে প্রস্তুত ছিলাম। আমি ডিপজল—আমার সাধ্যের মধ্যে কাউকে ফিরিয়ে দেই না আল্লাহর রহমতে, আর তারা তো আমার আপন ভাই-বোন।” 

মনঃকষ্টের কথা উল্লেখ ডিপজল বলেন, “যে বোন পর্দা করেন বলে প্রতিটি অনুষ্ঠানে আমি আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করেছি, সেই বোনের মুখেই আজ এমন কথা শুনতে হলো—এটা সত্যিই কষ্টের।

মামলার সব কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীকে অপেক্ষা করার অনুরোধ জানিয়েছেন ডিপজল। আদালতেই সব সত্য প্রকাশ পাবে বলে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী এই অভিনেতা।

আইন অনুযায়ী বোনদের প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিপজল বলেন, “যদি আইন অনুযায়ী তারা মালিক হোন, তবে তাদের প্রাপ্য অংশ অবশ্যই তারা পাবেন। আমার প্রিয় বোনদের বলছি, তোমরা জানো আমি খুব অসুস্থ। জীবনে যতটুকু পেরেছি, আমি তোমাদের জন্য করেছি আল্লাহর রহমতে; যদি আল্লাহ আরো সময় দিতেন, হয়তো আরো করতাম। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এমন আচরণ সত্যিই কষ্টদায়ক। সম্মান দেওয়া ও সম্মান রক্ষা করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহই সবকিছুর উত্তম বিচারক।” 

এর আগে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ও নির্মাতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলসহ পরিবারের তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত রাখা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও জানমালের নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করেন একই পরিবারের চার বোন। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীতে গণমাধ্যমের সামনে তারা জানান, ৪০ বছর ধরে তারা বাবার সম্পত্তি থেকে প্রাপ্য অংশ পাচ্ছেন না, অথচ বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাসের মাধ্যমে শুধু সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ