রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ায় গ্যাসের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা। সোমবার বেলা দুইটার দিকে  কয়েক শ লোক ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেন।

এ সময় তাঁরা ‘গ্যাস চাই, গ্যাস চাই’ ,‘সিন্ডিকেটের কালো হাত, ভেঙে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে গ্যাস সরবরাহের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেন। এরপর ধীরে ধীরে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।

সড়কে তিন ঘণ্টার অবরোধে কাঁচপুর-মদনপুর থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, গুলিস্তান, ঢাকা মেডিকেল পর্যন্ত প্রায় ৮-৯ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজট তৈরি হয়। দীর্ঘ লাইনে আটকে পড়ে ঢাকা অভিমুখী এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার যানবাহন। বিপাকে পড়ে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স। ঢাকা মেডিকেলসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অনেকে যানজটে আটকে তীব্র দুর্ভোগে পড়েন।

বিক্ষোভকারীরা জানান, তিন মাস ধরে এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে গ্যাস নেই। ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৫৮ থেকে ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের শেখদী, দনিয়া, ইটালি মার্কেট, রসুলপুর, কুতুবখালী, পলাশপুর, জনতাবাগ, শ্যামপুর, মেরাজনগর, কদমতলীসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় চলছে গ্যাস–সংকট। তাঁদের দাবি, এলাকাজুড়ে দুই থেকে চার শতাধিক বহুতল ভবন। প্রায় তিন লাখ মানুষের বাস। গ্যাস না থাকায় বাসায় রান্না করা যায় না।

শুকনা খাবার আর হোটেলের খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে সবাইকে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।

ওয়ারী ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার মো.

আবদুল্লাহেল বাকী প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েক ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিলেন। পরে পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ নির্মাণে কোটি রুপির বেশি অনুদান

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদের জন্য রাখা অনুদান বাক্সগুলোতে জমা পড়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। এখন পর্যন্ত চারটি বাক্স ও অনলাইন অনুদান মিলিয়ে পাওয়া গেছে ১ কোটি ৩০ লাখ রুপির বেশি। বাকি সাতটি বাক্সের টাকা গণনা এখনো চলছে।

গত শনিবার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। অনুষ্ঠানস্থলে অনুদান সংগ্রহের জন্য ১১টি স্টিলের বাক্স রাখা হয়েছিল। হাজারো মানুষ সেদিন মসজিদ নির্মাণের জন্য মুক্তহস্তে দান করেন।

রোববার ১১টি বাক্সের মধ্যে চারটি খোলা হয়। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, সারা দিন গণনা শেষে এই চারটি বাক্স থেকে ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার রুপি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অনলাইন ও কিউআর কোড স্ক্যান করে পাওয়া গেছে আরও ৯৩ লাখ রুপি। গণনার কাজে মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে।

সোমবার বিকেল থেকে বাকি সাতটি বাক্স খোলা ও গণনার কাজ শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বাক্সগুলো থেকেও বড় অঙ্কের অর্থ পাওয়া যাবে।

এ বিষয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘এই বাবরি মসজিদ তৈরি করতে তিন বছর সময় লাগবে।’ এ জন্য অর্থের অভাব হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দূরদূরান্তের হাজারো ভক্ত এই বাবরি মসজিদের জন্য উদার হস্তে দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একজন ভক্ত একাই ৮০ কোটি রুপি অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।’

মসজিদটি নির্মাণ করা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা ও রেজিনগরের সংযোগস্থলে জাতীয় সড়কের পাশে। এর নির্মাণকাজ বন্ধ করতে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা হলেও আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করেননি। আইনি বাধা কেটে যাওয়ার পরই শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

জানা গেছে, মূল মসজিদটি তিন কাঠা জমির ওপর নির্মিত হবে। এ ছাড়া মসজিদ চত্বরের ২৫ কাঠা জমিতে একটি হাসপাতাল ও একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।

মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সৌদি আরব থেকে কয়েকজন আলেম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আসা প্রায় ৪০ হাজার মুসল্লির জন্য শাহি বিরিয়ানির আয়োজন করা হয়। মূল নির্মাণস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে ভার্চ্যুয়ালি এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর কিছুদিন আগেই মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দেন। এরপর গত শুক্রবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

রোববার হুমায়ুন কবীর বলেন, তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না। যদিও এর আগে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ১৭ ডিসেম্বর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ২২ ডিসেম্বর নতুন দল গড়বেন। এখন তিনি বলছেন, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ইতি টানা হয়েছে।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের অযোধ্যা শহরে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে ফেলে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সমর্থকেরা। ষোড়শ শতকে নির্মিত মসজিদটি ধ্বংস করার সময় সেখানে সেদিন বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ