আল্লাহ সবকিছুর উত্তম বিচারক, বোনদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ডিপজল
Published: 8th, December 2025 GMT
হঠাৎ করেই ইন্ডাস্ট্রি ও এলাকাবাসীর কাছে ‘দানবীর’ হিসেবে পরিচিত অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বিরুদ্ধে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ এনেছেন সহোদর তিন বোন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডিপজল এটাকে ‘মিথ্যা অপবাদ’ দাবি করে লিখেছেন—“আল্লাহই সবকিছুর উত্তম বিচারক।”
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডিপজল নাতিদীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে এই মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি তার বোনদের অভিযোগকে ‘মিথ্যা অপবাদ’ বলে দাবি করেন। অপরদিকে ভক্ত ও এলাকাবাসীরা বোনদের এমন দাবিকে দেখছেন ‘প্ররোচনা’ হিসেবে।
আরো পড়ুন:
খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইলেন ডিপজল
শিল্পীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা বন্ধের আহ্বান ডিপজলের
ডিপজল তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বলেন, “সম্প্রতি আমার কিছু বোন আমাকে নিয়ে যে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দিয়েছে, তার বিষয়ে আমি আপনাদের সামনে কিছু বাস্তবতা তুলে ধরতে চাই। প্রথমেই পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই বক্তব্য দেওয়ার উদ্দেশ্য কাউকে অসম্মান করা নয়। বরং আমার প্রতি ছড়ানো ভুল ধারণা ও মিথ্যা অপবাদের বিষয়ে সত্য তুলে ধরা। মামলার আইনি জবাব আমি আইন অনুযায়ী দেব, ইনশাআল্লাহ।”
ডিপজল তার এক বোনের অভিযোগ খণ্ডন করে আফসোসের স্বরে বলেন, “আমার বোনদের আমি সবসময় সম্মান, ভালোবাসা ও সাধ্যমতো সহযোগিতা করে এসেছি—এ কথা আমার এলাকার মানুষ ও আশেপাশের পরিচিত সবাই জানেন। একজন বোন ক্যামেরার সামনে কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, তার অসুস্থ সন্তানের খোঁজ কেউ নেয়নি। অথচ তার সন্তানের চিকিৎসার জন্য আল্লাহর দেওয়া সামর্থ্য অনুযায়ী, আমি আমার পক্ষ থেকে একটি বড় অংকের সহায়তা করেছি এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা ভারতে পর্যন্ত করেছি। আজ ক্যামেরার সামনে তিনি যেন সব ভুলে গেলেন! পর্দায় অভিনয় আমি করি, বাস্তব জীবনে নয়। যদি জানতাম কোনোদিন বাস্তব জীবনে এমন অভিনয়ের সম্মুখীন হতে হবে, তাহলে হয়তো প্রতিটি কাজের প্রমাণ রেখে দিতাম।”
আরেক বোনের অভিযোগের বিষয়ে ডিপজল বলেন, “আরেক বোন বলেছেন, ১১ বছর ধরে নাকি আমার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। অথচ মাত্র দুই মাস আগেই তাকে ও তার সন্তানকে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ সাহায্য করা হয়েছে। আমার সাধ্যের মধ্যে সবসময়ই আমি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এত কিছু লিখে শেষ করা সম্ভব নয়।”
প্রশ্ন তুলে ডিপজল বলেন, “৩৫ বছর পর আজ হঠাৎ তারা কেন এবং কার প্ররোচনায় এমন মিথ্যা বলছে—এ প্রশ্ন আমারও আছে। যদি সত্যিই কোনো দাবি থাকত, ভালোবাসার সম্পর্ক ধরে সরাসরি বললেই আমি তাদের ২/৩ গুণ বেশি দিয়ে দিতে প্রস্তুত ছিলাম। আমি ডিপজল—আমার সাধ্যের মধ্যে কাউকে ফিরিয়ে দেই না আল্লাহর রহমতে, আর তারা তো আমার আপন ভাই-বোন।”
মনঃকষ্টের কথা উল্লেখ ডিপজল বলেন, “যে বোন পর্দা করেন বলে প্রতিটি অনুষ্ঠানে আমি আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করেছি, সেই বোনের মুখেই আজ এমন কথা শুনতে হলো—এটা সত্যিই কষ্টের।
মামলার সব কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীকে অপেক্ষা করার অনুরোধ জানিয়েছেন ডিপজল। আদালতেই সব সত্য প্রকাশ পাবে বলে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী এই অভিনেতা।
আইন অনুযায়ী বোনদের প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিপজল বলেন, “যদি আইন অনুযায়ী তারা মালিক হোন, তবে তাদের প্রাপ্য অংশ অবশ্যই তারা পাবেন। আমার প্রিয় বোনদের বলছি, তোমরা জানো আমি খুব অসুস্থ। জীবনে যতটুকু পেরেছি, আমি তোমাদের জন্য করেছি আল্লাহর রহমতে; যদি আল্লাহ আরো সময় দিতেন, হয়তো আরো করতাম। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এমন আচরণ সত্যিই কষ্টদায়ক। সম্মান দেওয়া ও সম্মান রক্ষা করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহই সবকিছুর উত্তম বিচারক।”
এর আগে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ও নির্মাতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলসহ পরিবারের তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত রাখা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও জানমালের নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করেন একই পরিবারের চার বোন। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীতে গণমাধ্যমের সামনে তারা জানান, ৪০ বছর ধরে তারা বাবার সম্পত্তি থেকে প্রাপ্য অংশ পাচ্ছেন না, অথচ বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাসের মাধ্যমে শুধু সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ন ড পজল অন য য় র স মন ব নদ র আল ল হ অপব দ
এছাড়াও পড়ুন:
হানিফের বিরুদ্ধে করা মামলায় ‘ক্যামেরা ট্রায়ালে’ প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আজ সোমবার প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। ‘ক্যামেরা ট্রায়ালের’ মাধ্যমে এ জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এটিই প্রথম কোনো জবানবন্দি, যা ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে সম্পন্ন হলো।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ এই মামলার বিচার চলছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আজ এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ক্যামেরা ট্রায়ালে শুধু আইনজীবী, আসামি ও সাক্ষী ছাড়া কেউ উপস্থিত থাকেন না। সেভাবেই আজ এই সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, যাঁরা এই ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী হবেন, তাঁদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করার দায়িত্ব রাষ্ট্র ও আদালতের। সেই আঙ্গিকে কোনো সাক্ষীকে ভয়ভীতি যাতে না দেখানো যায়, তাঁর পরিচিতি যাতে উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, ভবিষ্যতে যাতে অন্য কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে হুমকি বোধ না করেন; সে জন্যই এভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
হানিফ ছাড়াও এ মামলার আসামি কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী ও কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।
গত ২ নভেম্বর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়। গণ-অভ্যুত্থানের সময় কুষ্টিয়া শহরে ছয়জনকে হত্যাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৫ নভেম্বর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। আজ এ মামলায় ‘ক্যামেরা ট্রায়ালের’ মাধ্যমে প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হলো।