দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য গবেষণার বিকল্প নেই। কিন্তু বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণা খাতে সীমিত বরাদ্দের কারণে প্রয়োজনীয় মানের গবেষণা পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানে আধুনিক ল্যাব, পর্যাপ্ত উপকরণ ও কম্পিউটারের অভাব শিক্ষার্থীদের গবেষণায় নিরুৎসাহিত করছে। অনেক প্রতিভাবান শিক্ষার্থী কেবল আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে গবেষণা কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ছেন।
রাজধানী ঢাকার কিছু প্রতিষ্ঠানে তুলনামূলকভাবে বরাদ্দ থাকলেও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলো তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করছে। অন্যান্য খাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বরাদ্দ থাকলেও শিক্ষা ও গবেষণা খাত দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষিত, যা দেশের উন্নয়নে পরোক্ষভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজেদের অর্থ ব্যয় করে গবেষণা চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবে মেধা পাচারের প্রবণতা বাড়ছে; মেধাবী শিক্ষার্থীরা উন্নত গবেষণাসুবিধা ও অর্থসহায়তার আশায় বিদেশে চলে যাচ্ছেন। ফলে দেশ ক্রমে মেধাশূন্য হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্বাধীনতার পর থেকেই গবেষণা খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল। উন্নত দেশগুলোর উদাহরণ দেখলে বোঝা যায়, তারা জাতীয় বাজেটের উল্লেখযোগ্য অংশ গবেষণায় বিনিয়োগ করে থাকে। বাংলাদেশেও গবেষণায় বাজেট–ঘাটতির অবসান ঘটিয়ে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য আলাদা ফান্ড গঠন এবং গবেষণা-সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি।
মো.
জাহাঙ্গীর ইসলাম শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভা সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে: এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি।
দলটি বলছে, ৫ আগস্ট-পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে গ্রহণ করার পরিবর্তে জামায়াত পুরনো সহিংস ও আধিপত্যবাদী রাজনীতির পথে ‘নতুন খেলোয়াড়’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চাচ্ছে, যা দেশের জন্য অশুভ সংকেত।
আরো পড়ুন:
কোটালীপাড়া জামায়াতের হিন্দু শাখার ৯ নেতাকর্মীর পদত্যাগ
জামায়াত দায়িত্ব পেলে ইসলামের ভিত্তিতে রাষ্ট্র চালাবে: এটিএম আজহারুল
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও মিডিয়া সেল সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে এনসিপি জানায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে উদ্দেশ্য করে ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যে অসত্য, মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর বিবৃতি দিয়েছে, এনসিপি তা প্রত্যাখ্যান করছে এবং এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
জামায়াতের এই বিবৃতি বাস্তবতাবিবর্জিত, রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত এবং জনমত বিভ্রান্ত করার স্পষ্ট অপচেষ্টা।
এতে বলা হয়েছে, ৬ ডিসেম্বর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ন্যাশনাল প্রফেশনালস অ্যালায়েন্স (এনপিএ)-এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেন সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার প্রমাণনির্ভর যে মন্তব্য করেন, তা সম্পূর্ণ তথ্যসম্মত ও দায়িত্বশীল। ২৭ নভেম্বর পাবনার ঈশ্বরদী থানায় নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলি চালানো তুষার মণ্ডল যে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী, তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে এবং অস্ত্র-গুলিসহ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এমন স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বাস্তবতা অস্বীকার করা সত্য গোপন ও দায় এড়ানোর নিন্দনীয় অপচেষ্টা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
এনসিপি মনে করে, জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে। ৫ আগস্ট-পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে গ্রহণ করার পরিবর্তে তারা পুরনো সহিংস ও আধিপত্যবাদী রাজনীতির পথে ‘নতুন খেলোয়াড়’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চাচ্ছে, যা দেশের জন্য অশুভ সংকেত।
এনসিপি পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছে, সহিংসতা, অস্ত্রনির্ভরতা ও ধর্মের অপব্যবহার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিপন্থী। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল আচরণ অপরিহার্য।
জাতীয় নাগরিক পার্টি জামায়াতে ইসলামীকে সত্য, শান্তি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পক্ষে সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ