কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে একটি বিলাসবহুল উড়োজাহাজ (বোয়িং জেট) উপহার হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটিকে তিনি এয়ারফোর্স ওয়ান (প্রেসিডেন্টের সরকারি উড়োজাহাজ) হিসেবে ব্যবহার করবেন এবং প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য রেখে দিতে চান। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টদের উপহার নেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম রয়েছে।

গতকাল রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি উঠে এসেছে।

এ নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন করেছে এবিসি নিউজ। প্রতিবেদনে উড়োজাহাজটিকে ‘উড়ন্ত প্রাসাদ’ অভিহিত করা হয়েছে। এবিসি নিউজ জানায়, বোয়িং ৭৪৭–৮ জাম্বো জেট নামের উড়োজাহাজটি সম্ভবত মার্কিন সরকারের ইতিহাসে পাওয়া সবচেয়ে ব্যয়বহুল উপহার হতে চলেছে।

তবে কাতার বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। দেশটি জানিয়েছে, উড়োজাহাজটিকে উপহার হিসেবে উল্লেখ করা প্রতিবেদনগুলো ‘সঠিক নয়’।

ওয়াশিংটনে কাতার দূতাবাসে কর্মরত জনসংযোগ কর্মকর্তা আলি আল–আনসারি বলেন, এয়ারফোর্স ওয়ান হিসেবে সাময়িক ব্যবহারের জন্য একটি উড়োজাহাজ সম্ভাব্য হস্তান্তরের বিষয়ে কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আল–আনসারি।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা কোনো রাজা, যুবরাজ বা বিদেশি রাষ্ট্র থেকে উপহার গ্রহণ করতে পারবেন না।

তবে ট্রাম্প তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর উড়োজাহাজটি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের জন্য গড়ে তোলা সংগ্রহশালায় হস্তান্তর করে বিধানটিকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বোয়িং ৭৪৭–৮ জাম্বো জেটটি বছর দশকের পুরোনো। এটির বাজারমূল্য ৪০ কোটি ডলার।

এবিসি ও নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলতি সপ্তাহে কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ সফরে যাচ্ছেন। এ সফর চলাকালে উড়োজাহাজের বিষয়ে পরিকল্পনা ঘোষণা করা হবে।

এদিকে এই উপহার গ্রহণের বিষয়ে নৈতিকতা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, এর মধ্য দিয়ে সরকারের দুর্নীতি ঠেকানোর জন্য তৈরি করা আইনকে অবজ্ঞা করা হবে।

ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিক লরা লুমার বলেছেন, কাতারের দেওয়া উড়োজাহাজ গ্রহণ করা হলে তা প্রশাসনের ওপর ‘কালিমা’ ফেলবে।

খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে লরা লুমার বলেন, ‘আমরা স্যুট পরা জিহাদিদের কাছ থেকে ৪০ কোটি ডলারের উপহার গ্রহণ করতে পারি না। কাতারিরা হামাস ও হিজবুল্লাহর মতো ইরানি ছায়া সংগঠনগুলোকে অর্থের জোগান দেয়। আর এসব সংগঠন মার্কিন সেনাদের হত্যা করেছে।’

তবে হোয়াইট হাউস ও আইন মন্ত্রণালয় মনে করছে, উপহারটি বৈধ এবং এটা কোনো ঘুষ নয়। কেননা, কোনো নির্দিষ্ট সুবিধা বা কাজের বিনিময়ে এটি নেওয়া হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এবিসি নিউজকে এমনটাই জানিয়েছে। সূত্রমতে, এটি অসাংবিধানিক নয়। কারণ, এটি প্রথমে মার্কিন বিমানবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরে প্রেসিডেন্টের সংগ্রহশালায় দেওয়া হবে। ফলে এটি ব্যক্তিগত উপহার হিসেবে বিবেচিত হবে না।

এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে এএফপির করা অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি হোয়াইট হাউস।

ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটি বলেছে, এ পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসকে ব্যক্তিগত আর্থিক লাভের জন্য ব্যবহার করছেন। কমিটি আরও বলেছে, শ্রমজীবী পরিবারগুলো যখন উচ্চমূল্যের চাপে অতিষ্ঠ, তখন ট্রাম্প নিজের ও তাঁর ধনী পৃষ্ঠপোষকদের সম্পদ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন।

ডেমোক্রেটিক পার্টির একাধিক আইনপ্রণেতা এ পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র উপহ র হ র জন য গ রহণ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবি প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন স্টাডিজ বিভাগের দশক পূর্তি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন স্টাডিজ বিভাগের এক দশক পূর্তি উৎসব উদযাপন করা হয়েছে।

সোমবার (১২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।

বিভাগীয় চেয়ারপার্সন ড. শিল্পী বেগমের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান।

আরো পড়ুন:

বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে ঢাবিতে শান্তি শোভাযাত্রা

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নিয়ে যা বলছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

এ উপলক্ষে আয়োজিত লেকচার সিরিজের উদ্বোধনী পর্বে ‘প্রকাশনার হালচাল’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুধাংশু শেখর রায়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান প্রিন্টিং এবং পাবলিকেশনের বিষয়গুলোকে শিক্ষা ও গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “প্রকাশনা কার্যক্রমের উন্নয়নে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসকে আরো কার্যকর করতে চাই। বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রেস বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রকাশনার মাধ্যমে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।” বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য তিনি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক ড. বিমল গুহকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ