খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষকদেরকে লাঞ্ছিত করা ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সোমবার শোকজ করেছে কুয়েট কর্তৃপক্ষ। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কুয়েট সিন্ডিকেটের সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তাদেরকে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করাসহ সাতটি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড.

আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার সমকালকে জানান, নোটিশ দেওয়া শিক্ষার্থীদেরকে আগামী ১৫ মে বিকেল ৫টার মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার ষষ্ঠ দিনেও ক্লাসে যাননি কুয়েটের শিক্ষকরা। শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন তারা। এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে শাস্তি কার্যকর করা না হলে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকেও বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষকরা।

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, তাদের দাবি পূরণ হলে তারা সাধারণ সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

নোটিশ পাওয়ার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী সমকালকে বলেন, যে ৩৭ জনকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে তার প্রথম ৭ জন ছাত্রদলের নেতাকর্মী, বাকিরা সাধারণ শিক্ষার্থী। সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করেছিল। তারা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেনি।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। এ অবস্থায় সেশনজট বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র ল ঞ ছ ত ল ঞ ছ ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

সৌদির কালোতালিকায় চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলস, ১০১৮ হজযাত্রীর ভোগান্তির শঙ্কা

সৌদি আরবের মক্কায় হজযাত্রীদের জন‍্য বাড়িভাড়া না করা এবং এক বাড়ি দেখিয়ে অন‍্য বাড়িতে হাজি রাখার অভিযোগে চ‍্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করেছে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। এটি ১৬টি হজ এজেন্সির সমন্বয়ে গঠিত একটি লিড এজেন্সি। এর অধীন ১৬টি হজ এজেন্সির ১ হাজার ১৮ জন হজযাত্রী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে ইতিমধ্যে মক্কায় পৌঁছে গেছেন।

গতকাল রোববার রাতে বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ভার্চ্যুয়াল সভায় দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাসান আল মনোয়ার এ তথ্য জানান। সৌদি সরকারের এই ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে চ‍্যালেঞ্জার ট্রাভেলসের লাইসেন্সের অনুকূলে মোনাজ্জেম বা প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তির পাসপোর্ট জব্দ, ভিসা বাতিল এবং সৌদি আরবে তার চলাচল সীমিত করে দিয়েছে। এর ফলে ১৬টি হজ এজেন্সির ১ হাজার ১৮ জন হজযাত্রী দুর্ভোগে পড়তে পারেন।

ভার্চ্যুয়াল সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সভায় সৌদি উপমন্ত্রী বাংলাদেশি হজযাত্রীদের বাড়িভাড়ায় কয়েকটি এজেন্সির অনিয়মের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, প্রায় ১৫ হাজার হজযাত্রীর বাড়িভাড়ার কাগজপত্রের সঙ্গে প্রকৃত বাড়ির কোনো মিল নেই। অনেক হজযাত্রীর বেলায় কাগজপত্রে বাড়িভাড়া দেখানো হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে বাড়িভাড়া হয়নি বা এক বাড়ি দেখিয়ে অন‍্য বাড়িতে হজযাত্রী রাখা হচ্ছে। এ কারণে ১৫ হাজার হজযাত্রীর মিনার কার্ড তাঁরা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

চ‍্যালেঞ্জার ট্রাভেলসের মালিক হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারোয়ার। তিনি দাবি করেন, চ‍্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়নি, কালোতালিকাভুক্ত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সৌদি উপমন্ত্রী। গোলাম সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো অনিয়মের জন্য চ‍্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করার কথা বলা হয়নি। সৌদি সরকারের আইন অনুযায়ী, লিড এজেন্সি হিসেবে অন্যের অনিয়ম বা অপরাধের দায় আমাদের ওপর পড়েছে। “ইউসূফ এয়ার” নামের আমাদের সহযোগী একটি হজ এজেন্সির নিবন্ধিত ৩৫ জন হজযাত্রীর বাড়িভাড়াসংক্রান্ত অনিয়মের কারণে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চ‍্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা এবং ১৫ হাজার হজযাত্রীর বাড়িভাড়ার কাগজপত্রে অসংগতির তথ্য জানার পর এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন‍্য সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ মিশনকে দায়িত্ব দিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মঞ্জুরুল হক (হজ অধিশাখা) প্রথম আলোকে বলেন, ‘চ‍্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা এই লিড এজেন্সির সহযোগী ১৬টি হজ এজেন্সির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিচ্ছি। একই সঙ্গে যে কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়ে প্রকৃত তথ্য-উপাত্তসহ কিছু বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই এর সমাধান হয়ে যাবে।’

প্রসঙ্গত, এ বছর ৭৫৩টি হজ এজেন্সির অধীন নিবন্ধিত ৮১ হাজার ৯০০ জন ব্যক্তি ৭০টি ‘লিড এজেন্সির’ মাধ্যমে হজে যাচ্ছেন। এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বেসরকারিভাবে ৮১ হাজার ৯০০ জন এবং সরকারিভাবে ৫ হাজার ২০০ জন হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। গত ২৯ এপ্রিল থেকে হজযাত্রা শুরু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ