যুবদল নেতার বিরুদ্ধে কিশোরীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ
Published: 12th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক আদিবাসী কিশোরীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে আবুল হাশেম নামে স্থানীয় এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিয়ে পুলিশে অভিযোগ দিতে বাধা দেওয়া হয়।
যুবদল নেতা আবুল কাশেম (৩৭) করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা মধ্যম টিলা এলাকার মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়ন যুবদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
আবুল কাশেমকে ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য নিশ্চিত করে করেরহাট ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক জামশেদ আলম ফারুক বলেন, তার বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, তার মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা স্বামী-স্ত্রী দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। রোববার কাজ থেকে বাড়ি ফিরতে কিছুটা দেরি হয়। তার মেয়ে বিকেল ৫টার পর প্রাইভেট পড়ে এসে বাড়িতে ফিরে রান্না করছিল। এ সময় আবুল কাশেম তাদের বাড়ির এসে তার মেয়ের কাছে পানি চান। পানি খাওয়ার পর আবুল কাশেম অতর্কিত ঘরে ঢুকে কিশোরীকে অর্থের লোভ দেখিয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এতে সে রাজি না হলে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার মেয়ে আবুল কাশেমের হাত থেকে ছুটে ঘরের বাইরে এসে চিৎকার করলে স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর লোকজন ছুটে আসে। এ সময় আবুল কাশেম মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার পর তারা জোরারগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে কয়লাবাজার এলাকায় একদল যুবক তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে অভিযোগ দিতে বাধা দেয়। এ ঘটনার বিচার করে দেওয়ার আশ্বাস দেয় তারা। তবে তিনি এ ঘটনায় মামলা করবেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে করেরহাট ইউনিয়ন যুবদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল কাশেম বলেন, তিনি ওই কিশোরীর বাবার কাছে টাকা পান। টাকার জন্য তাদের বাড়িতে গেলে কিশোরীর বাবার সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এরপর তাদের উঠান থেকে তিনি চলে আসেন। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার ইন্ধনে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বির মোহাম্মদ জানান, খবর শুনে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণে চাঁদা দাবি সন্ত্রাসীদের
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন প্রশাসনিক-একাডেমিক ভবনের কাজে চাঁদা দাবি করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে এ দুটি ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে বর্তমানে ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা প্রশাসনিক ভবন ও ১৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ চলছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভবন দুটির নির্মাণ চলছে। উভয় ভবনের নির্মাণকাজ পেয়েছে চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমই-আরবিজেবি। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সাতজনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাম্পাসে ঢুকে ঠিকাদারের কর্মচারীদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। পরে সন্ত্রাসীরা নির্মাণ শ্রমিকদের থাকার জন্য তৈরি করা টিনশেডের ঘরে ঢুকে তাদের ১০ থেকে ১২টি মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার আগে চাঁদা না দিলে নির্মাণকাজ বন্ধের হুমকি দেয়। চাঁদা না দিয়ে কাজ চলমান রাখলে পরবর্তী সময়ে ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর ঠিকাদারের লোকজন ও শ্রমিকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানায়।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া প্রায় ছয় মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ২৬ জুন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে সাত সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক ধরে হেঁটে ক্যাম্পাসে ঢুকছে। তাদের মধ্যে চারজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ক্যাম্পাসে ঢোকার মুখে চেয়ারে বসা নিরাপত্তা প্রহরী অস্ত্রধারীদের দেখে উঠে দাঁড়ান। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। অস্ত্রধারীরা শ্রমিকদের ঘরে ঢুকে কয়েক মিনিট অবস্থান করার পর একই পথে চলে যায়।
এ ব্যাপারে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাঙামাটি কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছে। পাশাপাশি অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকেও জানানো হয়েছে বিষয়টি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কাজে দুইবার চাঁদা দাবি করেছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভবনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মীর হোসেন জানান, চাঁদা না দেওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের কাউকেই চিনতে পারিনি। এরা কোনো দলের কিনা জানি না।
কোতোয়ালি থানার ওসি সাহেদ উদ্দীন জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আতিয়ার রহমান এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, এর আগে সিসিটিভি ফুটেজ না থাকায় কারা চাঁদা চাইতে এসেছিল জানা যায়নি। তবে এবার কারা এসেছে আমরা জানতে পেরেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।