নটর ডেমের শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে ভবন থেকে পড়ে নিহত
Published: 12th, May 2025 GMT
রাজধানীর নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম ধ্রুবব্রত দাস (১৮)। তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, আজ সোমবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে ধ্রুবব্রত দাস কলেজের ‘ফাদার টিম’ ভবনের পঞ্চম তলার বারান্দা থেকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিকেল চারটার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে আসা ধ্রুবব্রতর সহপাঠী নাফিজ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা হঠাৎ একটি শব্দ পাই। তারপর দেখি ধ্রুবব্রত রক্তাক্ত অবস্থায় নিচে পড়ে আছে। আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমাদের ধারণা, হয়তো ভবনের বারান্দা থেকে অসাবধানতাবশত সে নিচে পড়ে গেছে।’
ধ্রুবব্রত দাসের বাবা বাণীব্রত দাস প্রথম আলোকে বলেন, ছেলের এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা ছিল আজ। এ জন্য তাঁর সঙ্গে কলেজে এসেছিলেন। অভিভাবকদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেওয়ায় কলেজের মূল ফটকের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। কিছুক্ষণ পর দেখতে পান, সহপাঠীরা তাঁর ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশায় তুলছেন। ছেলে কীভাবে ভবন থেকে পড়ে গেলেন তিনি সেটি জানেন না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারল না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থী
স্কুলের ল্যাব সহকারীর ‘প্রতারণার’ কারণে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চলতি বছরের এইচএসসির বিএমটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তিন পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসা ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখার। বৃহস্পতিবার থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলো, উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কাওসার আলী, একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মো. রাজু আহমেদ, হাবিবগঞ্জ গ্রামের শাহদৎ হোসেনের ছেলে সাকিবুল হাসান। তারা সবাই ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিউম্যান রিসোর্স ট্রেডের শিক্ষার্থী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এটি ছিল তাদের প্রথম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা।
এ তিন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তারা যথাসময়ে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএম শাখায় ভর্তি হন। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী তারা অভ্যন্তরীণ সকল পরীক্ষাও দিয়েছেন। প্রথম বর্ষ সমাপনীর বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য তারা ২৬০০ টাকা করে এই প্রতিষ্ঠানের ল্যাব সহকারী মো; রাজু আহমেদের কাছে জমা দেন। কিন্তু রাজু ফরম পূরণ না করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গেলে তারা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণ হয়নি। আসেনি প্রবেশপত্র।
প্রবেশপত্র কেন আসেনি জানতে চাইলে তাদের আশ্বস্ত করে রাজু আহমেদ বলেন, পরীক্ষার আগে যথাসময়ে তাদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হবে। অবশেষে পরীক্ষার দিন গিয়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণই হয়নি। রাজু আহমেদ পালাতক। অভিযোগকারীরা জানান, তারা এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ও স্কুলের সভাপতি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাতের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে এই প্রতারণা এবং তাদের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাওয়ার জন্য রাজু আহমেদের শাস্তির দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তাঁকে আগে জানানো হয়নি। বর্তমানে রাজু আহমেদ পলাতক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, তার ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদ এর আগেও স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেবার কথা বলে অনেক অভিভাবকের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ভর্তি করে দিতে পারেননি। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি স্থগিত করা হয়। এ বছর আবারও দুর্নীতি ও প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্কুলের সভাপতিকে অনুরোধ করেছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি দ্রুত বিষয়টির তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন। প্রথমিকভাবে ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।