অ্যাপলের ইয়ারবাড ইয়ারপডস নিয়মিত ব্যবহার করেন অনেক অ্যাপল পণ্য ব্যবহারকারী। কেউ আবার পছন্দের ব্যক্তিদের উপহারও দেন ইয়ারপডস। তবে অ্যাপলের ‘ফাইন্ড মাই’নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইয়ারপডসের অবস্থান শনাক্ত করে ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান কিউআর কোড জেনারেটরের প্রযুক্তি–বিশেষজ্ঞ মার্ক পোরকার।

মার্ক পোরকার বলেন, ‘অফিস থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ইয়ারপডসের মাধ্যমে কর্মীদের অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব। যদি ডিভাইসটি খোলা অবস্থায় দেওয়া হয় বা প্যাকেজিং করা না থাকে, তবে তা আগে থেকেই অন্য কারও অ্যাপল আইডির সঙ্গে সংযুক্ত করা থাকতে পারে। নতুন বা পুরোনো প্রজন্মের যেকোনো ইয়ারপডস অ্যাপল আইডির সঙ্গে যুক্ত থাকলে সেটির অবস্থান জানা সম্ভব।’

ইয়ারপডসে সরাসরি জিপিএস বা সেলুলার সংযোগ না থাকলেও অ্যাপলের ‘ফাইন্ড মাই’নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর অবস্থান জানা যায়। আর তাই একবার কোনো ইয়ারপডস একটি নির্দিষ্ট অ্যাপল আইডির সঙ্গে যুক্ত হলে ‘ফাইন্ড মাই’ অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর অবস্থান জানা যায়। অতীতে এ পদ্ধতি গোপন নজরদারি ও ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে ব্যবহার হওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

নজরদারি এড়াতে ইয়ারপডস ব্যবহারের আগে ‘ফ্যাক্টরি রিসেট’ করার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। ফ্যাক্টরি রিসেটের জন্য ইয়ারপডস চার্জিং কেসে রাখার পর ৩০ সেকেন্ড ঢাকনা বন্ধ রাখতে হবে। এরপর ঢাকনা খোলার পর কেসের পেছনের ছোট বোতামটি ১৫ সেকেন্ড চেপে ধরে রাখতে হবে। কেসের সামনের বাতির রং প্রথমে অ্যাম্বার এবং পরে সাদা রঙে দেখা গেলে বুঝতে হবে রিসেট সম্পন্ন হয়েছে। রিসেটের পর অ্যাপল আইডির মাধ্যমে তা আবার সংযুক্ত করতে হবে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র অবস থ ন অ য পল র নজরদ র ক ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাজ্যের এমআই৬-এর কর্মকর্তার রাশিয়ার হয়ে গোয়েন্দাগিরি, ২০ বছরের তদন্তে কী পাওয়া গেল

স্নায়ুযুদ্ধের পর যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দাপ্রধানদের অত্যন্ত সংবেদনশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ একটি তদন্ত পরিচালনা করতে হয়েছিল। তাঁদের সন্দেহ ছিল, গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬-এর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা রাশিয়ার জন্য ‘ডাবল এজেন্ট’ (এমন একজন গুপ্তচর, যিনি একসঙ্গে দুটি বিপরীত পক্ষের জন্য কাজ করেন) হিসেবে কাজ করছেন।

এমআই৬-এর সহযোগী সংস্থা এমআই৫ সম্ভাব্য গুপ্তচরকে ধরতে ‘অপারেশন ওয়েডলক’ নামে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছিল। এ অভিযানে নজরদারি, পরিকল্পনা ও ডেস্ক বিভাগের অন্তত ৩৫ কর্মকর্তা অংশ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তৎপরতা চালিয়েছেন।

গার্ডিয়ানের সূত্রে জানা গেছে, নজরদারি দলের সদস্যরা একটি সফরে এক সপ্তাহের বেশি সময় মধ্যপ্রাচ্যে ছিলেন। তাঁরা সেখানে সিআইএর নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করছিলেন। অভিযানটি বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কারণ, কর্মকর্তারা ওই দেশের সরকারকে অবগত না করেই সেখানে গিয়েছিলেন, যেটা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে বিবেচিত হতে পারত।

এই তদন্ত কোনো না কোনোভাবে প্রায় ২০ বছর চলেছে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু আদৌ এমআই৬-এ কেউ রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করেছিল কি না, তা এমআই৫ প্রমাণ করতে পারেনি। ফলে এখনো আশঙ্কা রয়ে গেছে, কেউ হয়তো রাশিয়ার পক্ষে কাজ করে পালিয়ে যেতে পেরেছেন।

কিম ফিলবির প্রসঙ্গ টেনে গার্ডিয়ানকে একটি সূত্র জানায়, ‘আমরা ভেবেছিলাম, আমাদের হাতে আরেক ফিলবি ধরা পড়েছে।’ কিম ফিলবি কুখ্যাত ডাবল এজেন্ট ছিলেন। তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে কাজ করা কেমব্রিজ স্পাই রিংয়ের সদস্য ছিলেন।

গোপন গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬ যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রবিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের কাজ বিদেশে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা এবং গোয়েন্দাদের পরিচালনা করা। অন্যদিকে এমআই৫ যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা। তারা দেশের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর যেকোনো হুমকি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করে।

এমআই৫ ১৯৯০-এর দশকে এ তদন্ত শুরু করে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তা চালু রাখে বলে জানা যায়। তত দিনে যাঁকে ঘিরে ‘অপারেশন ওয়েডলক’ পরিচালিত হচ্ছিল, তিনি এমআই৬ থেকে বিদায় নিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর কাছ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য আসে। তাদের ধারণা, লন্ডনে কর্মরত ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা রাশিয়ার কাছে নিয়মিত গোপন তথ্য পাচার করছিলেন।

তদন্ত চলার এক পর্যায়ে রাশিয়ার গোপন গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির নেতৃত্বে ছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন।

তদন্তকারীরা ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে ওই কর্মকর্তার গতিবিধি অনুসরণ করেন। এ অনুসন্ধান প্রায়ই এমআই৫-এর এখতিয়ারের বাইরে চলে যাচ্ছিল। এজেন্টদের ভুয়া নাম আর সত্যিকারের পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। ধরা পড়লে কেউ সাহায্য করতে পারবে না বলে তাঁদের জানানো হয়েছিল।

এমআই৬–এ ডাবল এজেন্ট ঢুকে পড়ার বিষয়টি এতটাই গুরুত্ব পেয়েছিল যে গোয়েন্দাপ্রধানেরা তদন্ত চালানো ছাড়া অন্য কোনো পথ দেখেননি। ধারণা করা হয়, ওই কর্মকর্তা একা ছিলেন না। লন্ডনে তাঁর আরও দুজন সহযোগী ছিলেন। একটি সূত্র জানায়, ‘অপারেশন ওয়েডলক’ ছিল এমআই৫-এর অন্যতম ব্যতিক্রমী, দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল অভিযান।

এক গোয়েন্দা সংস্থার আরেকটিকে নজরদারি করাটা খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা। ফলে সন্দেহ থেকেই যায়, এমআই৬-এ এখনো হয়তো কেউ গুপ্তচর হিসেবে রয়ে গেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাজ্যের এমআই৬-এর কর্মকর্তার রাশিয়ার হয়ে গোয়েন্দাগিরি, ২০ বছরের তদন্তে কী পাওয়া গেল
  • মাদক পাচার ঠেকাতে বন্দরে নেই নজরদারি