সাম্যকে শেষবারের মতো দেখার অপেক্ষায় স্বজনেরা
Published: 14th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যকে শেষবারের মতো একনজর দেখার অপেক্ষায় স্বজনেরা। সাম্যের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচির ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল মধ্যপাড়া গ্রামে। তিনি ওই এলাকার ব্যবসায়ী মো. ফারহাদ হোসেনের ছোট ছেলে। ২০১৫ সালে মাকে হারান সাম্য।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সাম্যের অকাল মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান গ্রামবাসী। গণমাধ্যমকর্মীরা সকাল থেকেই ভিড় করলেও দুপুর তিনটা পর্যন্ত তার মরদেহ আসেনি। সন্ধ্যার পর মরদেহ আসার কথা রয়েছে। আজ বাদ এশা সড়াতৈল মাদ্রাসা ও ঈদগাহ মাঠে সাম্যের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে পাশের কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।
সাম্যের ছোট চাচা বলেন, সাম্য উল্লাপাড়া বিজ্ঞান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তার এই অকাল মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবা সেকেন্দার আলী পাকিস্তান আমলের দারোগা ছিলেন। আমাদের পরিবারের প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত। আমাদের বংশে উচ্ছৃঙ্খল কেউ নেই। এমনকি এলাকায় মারামারি বা হানাহানির সঙ্গেও আমরা কখনও জড়াই না। আর আমার মা হারা ভাতিজাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হলো। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মামুন বিশ্বাস বলেন, সাম্যদের পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকেন। ঈদ ও বিশেষ কোনো আয়োজনে তারা গ্রামে আসেন। সাম্য অনেক মেধাবী ছিলেন। এলাকার কারোর সঙ্গে তার কোনো ঝামেলার খবর শুনিনি। আর সেই সাম্য এভাবে ঝড়ে যাবে, আমরা কখনই ভাবিনি। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন সাম্য। তিনি ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। স্যার এএফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তিনি হল ছাত্রদলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য
এছাড়াও পড়ুন:
শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ
নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।
আরো পড়ুন:
ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু
মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক
কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।
এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।