দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে রাজশাহী নার্সিং কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকালে কলেজটির অধ্যক্ষ মোছা. মতিয়ারা খাতুন এক নোটিশে বন্ধের এ নির্দেশনা দেন। দুপুর ১২টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী নার্সিং কলেজে ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ইন নার্সিং শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে নোটিশে।

তবে এ নির্দেশনার পরও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা হল বা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাননি। তারা দুপুর থেকে দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন। তারা বিক্ষোভ মিছিল ও ক্যাম্পাসের ভেতর অবস্থান নিয়ে নানা শ্লোগান দিতেন থাকেন। বিকেলে তারা অবস্থান কর্মসূচি থেকে উঠে যান।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ওপর বারবার হামলা করা হয়। এতে বিএসসি নার্সিংয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। অথচ তাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হয়নি। এ অবস্থায় তাদের হল ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। তবে তারা হল ছাড়বেন না। যতক্ষণ হামলাকারীদের শাস্তি না হবে ততক্ষণ তারা আন্দোলনে থাকবেন। হামলার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মোসা.

মতিয়ারা খাতুন বলেন, ১৬ মে থেকে ভর্তি পরীক্ষা। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন কেউ হল ছাড়ছে না। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নার্সিং কলেজে বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের শিক্ষার্থীদের ওপর ডিপ্লোমা ইন নার্সিং শিক্ষার্থীরা হামলা চালায়। হামলা ও মারধরে ১০ জন আহত হন। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। পরে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র স কল জ

এছাড়াও পড়ুন:

মহিউদ্দিন রনিসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগে স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার দাবির আন্দোলনের সংগঠক মহিউদ্দির রনিসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় এ অভিযোগ করেন। 

শুক্রবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগের যাচাই চলছে। এরপর আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগে ১২ জনের নাম উল্লেখ আছে এবং অজ্ঞাত ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’’

অভিযুক্তরা হলেন- আন্দোলনের প্রধান নেতা মহিউদ্দিন রনি (৩০), রাকিন (২৫), সুনান (২৪), সিফাত (২৩), শামিম (২৫), আল মুসা (২৬), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেত্রী সিফা (২২), হাসপাতালে অনশন করে অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থী দাইয়ান (২১), কনটেন ক্রিয়েটর কাফি (৩০), এইচ এম আবুল খায়ের (৫০), হাসপাতালের দালাল নুরুন নাহার (৪০) ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. সিয়াম (৩৮)।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশের দাবিতে হাসপাতালের গেটের সামনে চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় অভিযুক্তরা চাপাতি, লোহার রড, এসএস পাইপ, হকিস্টিক, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় মহিউদ্দিন রনি লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচ্ছন্নতাকর্মী রফিকুল পাটোয়ারীর মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে।

এ ছাড়াও ২-১১ নম্বরসহ অজ্ঞাত অভিযুক্তরা হত্যার উদ্দেশ্য হাতে থাকা চাপাতি, লোহার রড, এসএস পাইপ, হকিস্টিক, লাঠি দিয়ে ২-১১ নম্বর সাক্ষীদের এলোপাথারী আঘাত করে। এতে অফিস সহায়ক পারভেজ, আয়া সেলিনা, অফিস সহায়ক রাব্বি, পরিচ্ছন্নতাকর্মী শামীস আহত হন। 

এ ছাড়াও তাদের হামলায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী হাসান, সাকিব, জাকারিয়া রুবেল, অফিস সহায়ক ফয়সাল রাব্বি, আয়া সুমরত মন্ডল, লিফট অপারেটর শাকিলসহ মানবন্ধনে অংশ নেওয়া আরো অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আহত হন। এমনকি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নারী নার্স এবং আয়াদের শ্লিলতাহানী করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, হাসপাতালের কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উপ-পরিচালক ডা. এসএম মনিরুজ্জামান শাহীনকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মশিউল মুনীর।

অপরদিকে ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে হামলার ঘটনা নিয়ে সদর রোড অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া মহিউদ্দির রনি। তিনি অভিযোগ করেন হাসপাতালের কর্মচারী নামধারীরা তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, শান্তিপূর্ণ অনশন কর্মসূচিতে হামলা করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উস্কানিতে এ হামলার ঘটনায় তাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। 

পলাশ//

সম্পর্কিত নিবন্ধ