যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কাতারের কাছ থেকে কি ট্রাম্প উড়োজাহাজ উপহার নিতে পারেন
Published: 16th, May 2025 GMT
কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে একটি বিলাসবহুল উড়োজাহাজ (বোয়িং জেট) উপহার হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা কোনো রাজা-বাদশাহ, যুবরাজ বা বিদেশি রাষ্ট্র থেকে উপহার গ্রহণ করতে পারবেন না। আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বিদেশি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উপহার নেওয়া সম্পর্কিত আইনগুলোর ব্যাপ্তি নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলছে। কারণ, এতে দুর্নীতি আর অযাচিত প্রভাবের আশঙ্কা থাকে। নিচে কিছু প্রাসঙ্গিক আইন ও উদাহরণ তুলে ধরা হলো—
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান কী বলছে
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দুটি ধারা অনুযায়ী, বিদেশি রাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বা অঙ্গরাজ্য সরকারের কাছ থেকে প্রেসিডেন্ট উপহার বা সুবিধা গ্রহণে করতে পারবেন না।
একটি ধারায় বলা আছে, কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত কর্মকর্তারা বিদেশি রাষ্ট্র, রাজা-বাদশাহ ও যুবরাজের কাছ থেকে কোনো উপহার নিতে পারবেন না। আরেকটি ধারা অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট তাঁর বেতনের বাইরে কোনো উপহার গ্রহণ করতে পারবেন না।
অবশ্য অতীতে কংগ্রেস বিদেশি রাষ্ট্রের কাছ থেকে উপহার নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। ১৮৭৭ সালে ফ্রান্সের দেওয়া স্ট্যাচু অব লিবার্টি উপহার হিসেবে গ্রহণের অনুমতি দিয়েছিল কংগ্রেস।
সংবিধানের বিদেশি উপহার নেওয়ার ধারায় সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ২০০৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করতে বাধা দেওয়া হয়নি। এমনকি পুরস্কারের ১৪ লাখ ডলারের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অনুমতি নেওয়া হয়নি।
মার্কিন বিচার বিভাগের অফিস অব লিগ্যাল কাউন্সেলের একটি মেমোতে বলা হয়েছে, নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করলে সংবিধান লঙ্ঘিত হবে না। কারণ, নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি বিদেশি রাষ্ট্র, রাজা-বাদশাহ বা যুবরাজ নয়। ওবামা সেই অর্থ দাতব্য কাজে দান করেছিলেন।
কাতারের দোহা থেকে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সংযুক্ত আরব আমিরাত যান ট্রাম্প। এ সময় তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজকে নিরাপত্তা দেয় যুদ্ধবিমান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব ন ন উপহ র ন র গ রহণ অন য য় র অন ম
এছাড়াও পড়ুন:
শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ
নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।
আরো পড়ুন:
ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু
মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক
কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।
এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।