‘তাণ্ডব’ নিয়ে শাকিবের সতর্ক সংকেত, ভিন্নভাবে হাজির জয়া
Published: 18th, May 2025 GMT
আসছে ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে রায়হার রাফী পরিচালিত ও শাকিব খান অভিনীত সিনেমা ‘তাণ্ডব’। এই সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের। এরই মধ্যে এলো সিনেমাটির ফোরকাস্ট। রোববার দুপুরে প্রকাশ পেয়েছে ‘তাণ্ডব’–এর ফোরকাস্ট।
১ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের টিজারে নতুন ঢংয়ের কিছু দৃশ্য, শাকিব খানের নতুন অবতার উত্তাল করেছে অনলাইন মাধ্যম। দেখা গেছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানকে। হঠাৎ করে অস্ত্র হাতে তাকে দেখার পর আলাদাই লাগতে পারে তাকে। পরিপাটি পোশাক আর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একরকম রহস্যই রেখে গেছেন জয়া আহসান।
টিজারে বড় অংশ জুড়ে আছে রহস্যময় মাঙ্কি মাস্ক। শাকিব খানসহ অনেককেই এই মাস্কটি পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কেন এমন মুখোশ ব্যবহার করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে সিনেমায়। কোনো প্রকার ইঙ্গিত দেননি পরিচালক।
রায়হান রাফী বলেন, ‘এটাকে আমরা ফোরকাস্ট বা আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছি। কারণ প্রকৃতিতে ‘তাণ্ডব’ উঠতে যাচ্ছে। ‘তাণ্ডব’–এর সঙ্গে ফোরকাস্ট বা পূর্বাভাস শব্দটাই সবচেয়ে মানায়।’
গত দুই কোরবানি ঈদে রায়হান রাফী পরিচালিত সিনেমা হয়েছে সুপারহিট। আসছে কোরবানি ঈদেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে মনে করছেন তিনি। রাফীর কথায়, ‘এবারের কাজটাও এমনভাবে করতে চেয়েছি যে দেশের সিনেমায় আগে কেউ দেখেনি। দর্শকদের ভালো কিছু দেয়ার প্রত্যয় সবসময় থাকে। এবারও দর্শকরা সেই নতুন কিছু পাবেন।’
‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রযোজনা করেছে এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড। সহ–প্রযোজনায় আছে দেশের জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি। সহযোগিতা করেছে দীপ্ত।
এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লি.
সিনেমার বাকি অভিনয়শিল্পীদের নাম শিগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রযোজকেরা। একে একে প্রকাশ পাবে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার আরও অনেক প্রচারণামূলক ভিডিও। সেগুলো দর্শকদের আরও চমকে দেবে বলে আশ্বস্ত করেছেন নির্মাতা রায়হান রাফী।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পর্কের নতুন রসায়ন...
২০০৭ সালে যখন মুক্তি পেয়েছিল অনুরাগ বসুর পরিচালনায় ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’। তখনও শহরের জীবন, সম্পর্কের টানাপোড়েন, একাকিত্ব আর জটিলতা নিয়ে এত স্পষ্টভাবে কেউ বলেননি। বছর গড়িয়েছে ১৮, শহরের পরিবেশ বদলেছে, বদলেছে মানুষের মন, বদলে গেছে ভালোবাসার সংজ্ঞাও। সম্পর্কের ভাঙা-গড়ার গল্প কি বদলেছে? সেই প্রশ্নকে নতুন করে ছুঁয়ে দেখতে যেন অনুরাগ ফিরলেন ‘মেট্রো ইন দিনো’ নিয়ে। ছবিটির ট্রেলার যেন অতীত ও বর্তমানের মাঝে এক উড়ন্ত সেতু। কোলাজে বাঁধা চারটি সম্পর্কের গল্প–নতুন, পুরোনো, গাঢ়, হালকা, বাস্তব আর কিছুটা রূপকথার মতো।
ব্যস্ত শহরের শ্বাস টেনে নিয়ে তাদের ছুঁয়ে যায় টানাপোড়েনের ট্র্যাক। চার জুটির চার ধরনের সম্পর্ক, অথচ এক সুতোয় বাঁধা। ট্রেলারেই তার ইঙ্গিত। ট্রেলারে প্রথমে নজর কাড়ে আদিত্য রায় কাপুর ও সারা আলি খানের জুটি। তারা শহরের নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি। চশমা চোখে, ছোট চুলে সারা যেন এক সহজ, বাস্তববাদী চরিত্র। তাঁর প্রেমে দ্বিধা আছে, আছে অনিশ্চয়তা, আবার একরকম তীব্র টানও। আদিত্যকে সেই অনিশ্চয়তার মাঝে পরিণত প্রেমিকের মতোই শান্ত ও সাবলীল মনে হয়। দু’জনের কেমিস্ট্রি ট্রেলারে যেমন মায়া তৈরি করে, তেমনি হাসিও জাগায়। এরপরে আসে আলি ফজল ও ফাতিমা সানা শেখের জুটি। অনুরাগ তাদের মাধ্যমে বর্তমান সময়ের ‘লাভ-সেক্স-ধোঁকা’ থিমটি তুলে ধরেছেন। তাদের গল্প যেন একঝাঁক সাহসী প্রজন্মের প্রতিচ্ছবি, যারা অনুভূতির চেয়ে অভিজ্ঞতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়, আবার ভালোবাসা হারিয়ে গেলে কাঁদতেও জানে। ফাতিমার চরিত্রে একঝলক দেখা গেছে দ্বন্দ্ব আর আকাঙ্ক্ষার জটিলতা, যা কিছুটা মনে করিয়ে দেয় অনুরাগের আগের ছবির কঙ্গনা রানাওয়াতকে।
তৃতীয় জুটিতে আছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী ও কঙ্কণা সেন শর্মা। দু’জনেই বাস্তব অভিনয়ের মানদণ্ড। মাঝবয়সী সম্পর্কের মাঝে কীভাবে গুমরে ওঠে অভিমান, অসম্পূর্ণতা আর স্মৃতির ছায়া, তা ফুটে উঠেছে তাদের চোখের ভাষায়। কঙ্কণাকে পর্দায় দেখলে মনে পড়ে যায় ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’তে তাঁর ইরফান খানের সঙ্গে সম্পর্কের অসাধারণ রসায়ন।
শেষে আসে অনুপম খের ও নীনা গুপ্তার ষাটোর্ধ্ব জুটি। বয়স যতই বাড়ুক, প্রেম তো থাকে একইরকম। হয়তো তা আর চিঠিতে লেখা হয় না, কিন্তু চোখে ভেসে ওঠে। এই জুটির মধ্যে রয়েছে গভীর সংলাপ, দীর্ঘশ্বাস, আর একরাশ অতীত। তাদের দৃশ্য যেন বলে–ভালোবাসা কখনোই বৃদ্ধ হয় না।
ছবির আরেক গুরুত্বপূর্ণ দিক–মিউজিক। প্রীতম আবারও অনুরাগের সঙ্গে। ট্রেলারে অরিজিৎ সিংয়ের কণ্ঠে যে গান শোনা গেছে, তা একবারেই বলে দেয়, মেট্রোর মতোই সুরেও চলবে অনুভূতির ট্রেন। প্রতিটি গানের কথা যেন গল্পের সংলাপ। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন ঋতু শর্মা ও রোহিত সরাফ, যারা গল্পের কিছু মোড়কে নীরব ভূমিকা রাখেন। তাদের চরিত্র এখনও পুরোপুরি উন্মোচন করা হয়নি, কিন্তু ট্রেলারে তাদের উপস্থিতি যেন এক রকম অপ্রত্যাশিত সংযোজন।
ছবির প্রেক্ষাপট কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি ও বেঙ্গালুরু। চার শহরের আলাদা স্বাদ। প্রেম সেখানে শুধু অনুভূতি নয়, বরং এক ধরনের টিকে থাকার উপায়। ভালোবাসা এখানে লাইট অ্যাকশনের মোড়কে আসে, কিছুটা কমেডি হয়ে হাসায়, আবার কিছুটা চোখ ভিজিয়েও দেয়।
তবে এই ছবির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে এসেছে সারা আলি খানের লুক। ছোট চুল, সাধারণ জামাকাপড়, চোখে চশমা–এই লুককে ঘিরে তুলনা চলছে কৃতি স্যানন থেকে ক্যাটরিনা কাইফ, এমনকি ‘হামসাকল’ সিনেমায় সাইফ আলি খানের নারীবেশ পর্যন্ত! কেউ বলছেন ‘জেরক্স কপি’, কেউ বলছেন ‘বাবাই বেশি সুন্দর!’ ট্রলের মাঝে সারা অবশ্য শান্ত, জানেন এসব থামবে না। বরং মায়ের দুঃখে তাঁর কষ্ট হয়। তবু এই বাস্তবচেতনায় তৈরি চরিত্রকে নিয়ে সারা বলেন, ‘এই চরিত্রটি গ্ল্যামারাস নয়, বরং অনেক বেশি বাস্তবিক। এরকম শহুরে মেয়ের চরিত্র আগে করিনি।’ অনুরাগ বসুকে নিয়ে আবেগঘন স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন তিনি–ওনার ‘মেট্রো’ দেখে ওনার প্রেমে পড়েছিলাম, আজ আমি নিজেই ওনার ছবির নায়িকা। এখন প্রশ্ন একটাই–এটি কি সিকুয়াল? নির্মাতারা কিছু না বললেও স্পষ্ট, গল্প আলাদা হলেও কাঠামো, আবেগ আর চরিত্র গঠনে ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’র ছায়া রয়েছে। একরকম নস্টালজিয়ার নতুন মোড়ক বলা চলে। ‘মেট্রো ইন দিনো’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার ৪ জুলাই।