নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন
Published: 19th, May 2025 GMT
হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৯ মে) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ পরিদর্শক বিল্লাল ভূঁইয়া তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
এদিকে, সকাল ৯টার দিকে নুসরাত ফারিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়ে। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঘিরে ভাটারা থানার এক হত্যাচেষ্টা মামলায় গতকাল দেশের বাইরে যাওয়ার সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের সংশ্লিষ্ট ২৮৩ জন ও অজ্ঞাতনামা তিন-চারশ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি। মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থ যোগান দাতা হিসেবে আসামি করা হয় নুসরাত ফারিয়াকে।
গত বছর ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী সরকারের পতনের পর সুবিধাভোগী বিনোদন জগতের তারকাদের অনেকেই বেশ বিপাকে পড়েন। এর মধ্যে কিছু তারকা আছেন, যারা সরাসরি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও শেখ হাসিনার সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করা কিংবা বিভিন্ন সময়ে তার প্রশংসা করার জন্য সমালোচিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা চরিত্রে অভিনয় করার পর এমন সমালোচনার শিকার হন নুসরাত ফারিয়া।
সম্প্রতি এ নিয়ে কথাও বলেছেন তিনি। আপনি কি শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করার কারণে অনুশোচনায় ভোগেন? এমন এক প্রশ্নের উত্তর ফারিয়া বলেন, “মুজিব সিনেমার জন্য ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল— এই ৫ বছর আমি একই লুকে নিজেকে মেইনটেইন করেছি। চুলে কোনো রঙ করিনি, কালো চুল নিয়ে ঘুরেছি এই চরিত্রটির জন্য। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ শারীরিক ওজনের মধ্যে থাকতে হয়েছে। ফলে সেই কাজটিকে নিয়ে যদি অনুশোচনা করি, তাহলে আমার পেশাকেই অপমান করা হবে।”
নুসরাত বলেন, “এই সিনেমার জন্য আমি যে পরিস্থিতি পার করেছি বা এখনো করছি, তা আমার ভাগ্যে লেখা ছিল বলেই মনে করি। এটা খণ্ডানোর ক্ষমতা আমার ছিল না। একটি দেশের সরকারি পর্যায় থেকে কোনো কাজের প্রস্তাব এলে তা নিজের অত পছন্দ না হলেও মানা করা যায় না।”
২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার আশিকী চলচ্চিত্র দিয়ে নুসরাত ফারিয়ার বড় পর্দায় অভিষেক হয়। এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নবীন অভিনয়শিল্পী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।
প্রথম চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি হিরো ৪২০, বাদশা – দ্য ডন, প্রেমী ও প্রেমী এবং বস ২: ব্যক টু রুল এর মতো আরো বেশ জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০২৩ সালে তিনি শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত মুজিব: একটি জাতির রূপকার চলচ্চিত্রে শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেন।
‘পটাকা’ শিরোনামে ২০১৮ সালে একটি গানের মাধ্যমে গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ফারিয়া। এছাড়া, ইউটিউবসহ সোশাল মিডিয়ার নানা মাধ্যমে তার গাওয়া ‘হাবিবি’, ‘আমি চাই থাকতে’ সহ আরো কিছু গান প্রকাশ পেয়েছে।
ঢাকা/এম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চর ত র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বাবরের শেষ সেঞ্চুরির পর ৪ অধিনায়ক বদল, ৩ কোচ বরখাস্ত
গত এক দশকে পাকিস্তানের সেরা ব্যাটারদের তালিকায় শীর্ষ নাম বাবর আজম। এক সময় বিরাট কোহলিও তাকে সব ফরম্যাটে বিশ্বের সেরা ব্যাটার হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালের আগস্টে নেপালের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর যেন সবকিছু বদলে গেল। এরপর থেকে দুই বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো সেঞ্চুরি নেই তার নামে। ফর্মে ভাটা পড়েছে, গড় কমেছে সব ফরম্যাটে। এমনকি এবার এশিয়া কাপ ২০২৫-এর দল ঘোষণায়ও জায়গা হয়নি বাবরের।
দুই বছরে পাকিস্তান ক্রিকেটে কত কিছুই না ঘটে গেছে। বাবরের শেষ শতক (২০২৩ এশিয়া কাপে নেপালের বিপক্ষে) থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের ক্রিকেটে যা যা ঘটেছে তা যেন এক অশান্ত অধ্যায়।
৪ অধিনায়ক পরিবর্তন: ২০২৩ সালের আগস্টে যখন বাবর সেঞ্চুরি করেছিলেন, তখন তিনিই ছিলেন সব ফরম্যাটের অধিনায়ক। এরপর ২০২৩ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিলেও ফল হয়নি ভালো। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নেতৃত্ব গেল শাহিন আফ্রিদির হাতে। নিউ জিল্যান্ড সিরিজ শেষে তাকেও সরিয়ে আবার বাবরকে দেওয়া হলো দায়িত্ব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতা অর্থাৎ গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিলো পাকিস্তান। বাবরকেও হারাতে হলো অধিনায়কত্ব। এবার দায়িত্ব গেল সালমান আলি আগার হাতে। এরপর ওয়ানডে ফরম্যাটেও বাবর হারালেন নেতৃত্ব, জায়গা পেলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
আরো পড়ুন:
বাবর আজমের অন্যরকম সেঞ্চুরি
কোহলিকে পেছনে ফেলে দুইয়ে বাবর
৩ কোচের বিদায়: কেবল অধিনায়ক নয়, কোচের পদও হয়েছে অস্থিরতার শিকার। ২০২৪ সালে বড় আশা নিয়ে গ্যারি কারস্টেন (রেড-বল) ও জেসন গিলেস্পিকে (হোয়াইট-বল) আনা হয়েছিল। শুরুতে মনে হচ্ছিল সঠিক পথে হাঁটছে পাকিস্তান। কিন্তু শিগগিরই ভাঙতে থাকে সম্পর্ক। কারস্টেন পদত্যাগ করেন নির্বাচনী ঝামেলার কারণে। আর কিছুদিন পরেই গিলেস্পিও অনুসরণ করেন একই পথ।
এরপর অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে আসেন আকিব জাভেদ। কিন্তু ফল আরও বাজে হলে তাকেও বিদায় জানায় পিসিবি। শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় মাইক হেসনের হাতে।
টানা ৩ টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়: বাবরের শেষ সেঞ্চুরির পর পাকিস্তানের আইসিসি টুর্নামেন্ট যাত্রা বলতে গেলে একটাই গল্প— ব্যর্থতা। ২০২৩ বিশ্বকাপ সম্ভাব্য ফেভারিট হিসেবে শুরু করলেও গ্রুপ পর্বেই থেমে যায় অভিযান। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই কাহিনি, গ্রুপেই বিদায়। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও একই পরিণতি, গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিতে হয়।
এক সময় যাকে ঘিরে ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনছিল পাকিস্তান ক্রিকেট, সেই বাবর আজমের সময়টা যেন থমকে গেছে। সেঞ্চুরিহীন দুই বছরে পাল্টে গেছে অধিনায়ক, কোচ, এমনকি দলের ভাগ্যও। এখন প্রশ্ন একটাই— এই দুঃসময় থেকে বাবর আজম কবে ঘুরে দাঁড়াবেন?
ঢাকা/আমিনুল