গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় একটি পোশাক তৈরি কারখানার ঈদের ছুটি বৃদ্ধি ও কয়েক কর্মকর্তার পদত্যাদের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। 

সোমবার  (১৯ মে) সকাল ৮ টা থেকে পূর্ব মৌচাক এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছিল। পরে পুলিশ ও যৌথবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কর্তৃপক্ষ কারখানাটিতে দুইদিনের সাধারন ছুটি ঘোষণা করেছে।

পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ব মৌচাক এলাকার জালো নিটিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা ঈদের ছুটি ১২ দিন এবং কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে গতকাল রবিবার সকালেও বিক্ষোভ করে। ওইদিন শ্রমিকরা কিছু সময় আন্দোলন করে ফিরে যায়। আজ (সোমবার) সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন কারখানার সামনে বন্ধের নোটিশ সাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

সেখানে লেখা রয়েছে, ‘জালো নিটিং লিমিটেডের সকল শ্রমিক, কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ১৯ মে থেকে ২০ মে মঙ্গলবার পযন্ত দুইদিন সবেতনে সাধারণ ছুটি হিসাবে কারখানা বন্ধ থাকবে। আগামী ২১ মে হতে কারখানার কার্যক্রম যথারীতি চলবে।’

কারখানা বন্ধের ওই নোটিশ দেখে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরে সকাল ৮টা থেকে শ্রমিকরা মৌচাক-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময়ে ওই সড়কে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়কে যাতায়াতকারীরা। খবর পেয়ে সকাল ৯ টার দিকে শিল্প, থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। এর পরেও শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে সকাল পৌনে ১০ টা থেকে ওই আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আব্দুস সেলিম বলেন, “শ্রমিকরা ছুটি বৃদ্ধি ও কয়েক কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং মৌচাক ফুলবাড়িয়া সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে। পরে তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

ঢাকা/রেজাউল/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ক ষ ভ কর কর মকর ত পর স থ ত অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামের জব্বারের বলীখেলা ও সাম্পানবাইচে যুক্ত হবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়

আগামী বছর থেকে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা ও সাম্পানবাইচে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। আজ সোমবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ দুই উৎসবে মন্ত্রণালয় থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে বলেও জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের দুটো উৎসব আমরা চিহ্নিত করেছি। একটা হচ্ছে জব্বারের বলীখেলা। সিডনির নাম বললে অপেরা হাউসের ছবি ভাসে। চট্টগ্রামের নাম বললে অনেক ছবি ভাসে, যার মধ্যে জব্বারের বলীখেলা একটি। পাশাপাশি আরেকটি হলো সাম্পানবাইচ। হলুদ ট্যাক্সি ছাড়া যেমন নিউইয়র্ক শহর চিন্তা করা যায় না, তেমনি সাম্পান ছাড়া চট্টগ্রাম চিন্তা করা যায় না। আগামী বছর থেকে জব্বারের বলীখেলা ও সাম্পানবাইচের সঙ্গে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় যুক্ত হবে।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘উৎসব বলতে শুধু উৎসব, তা নয়। আমাদের কালচারাল হেরিটেজের সঙ্গে যেসবের সংযোগ রয়েছে, সেগুলোর একটা তালিকা করার কাজ দিয়েছি। আপাতত শিল্পকলা একাডেমিকে দেওয়া হয়েছে (তালিকার কাজ)। এ তালিকা হওয়ার পর এগুলো আমাদের কালচারাল হেরিটেজ ক্যালেন্ডারে যুক্ত হবে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তার দেশের মানুষদের কাজ তুলে ধরা পৃথিবীর কাছে।’

চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মুসলিম ইনস্টিটিউট সম্পর্কে উত্তর দিতে চাই না। এটা এখনো নির্মাণাধীন। এটা শেষ হওয়ার পর আমরা বুঝতে পারব, কবে চালু করে দেওয়া যাবে। তবে আমার একটা সাধারণ মন্তব্য আছে। আমি বাইরে থেকে এক রকম জানতাম। ভেতরে এসে বুঝতে পারলাম, আমাদের সব মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নের দর্শন হচ্ছে শুধু দালান বানানো। দালানের ভেতরে কী হবে, এটা আর কোনো খবর নেই।’

শিল্পকলা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘আমাদের শিল্পকলাগুলোর কবে যে কে একটা কারিকুলাম বানিয়ে দিয়ে গেছে, সেটা এখনো চলছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী বিষয় বাংলাদেশের গান। আমরা এটাকে মূল্য দিই না। আমাদের সম্পদগুলো ব্যবহার করি নাই। বাংলাদেশের শিল্পকলাগুলো এগুলো নিয়ে কখনো ভাবে না। রক মিউজিকে সবচেয়ে বড় অবদান চট্টগ্রামের মিউজিশিয়ানদের। কেন চট্টগ্রাম শিল্পকলাকে রক মিউজিশিয়ানরা তাদের আখড়া ভাবতে পারল না, এটা শিল্পকলার ব্যর্থতা।’

বিভাগীয় শহর হলেও চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লায়, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্ট্রাকচারগুলো (গঠন) কিন্তু আমাদের এই মডার্ন (আধুনিক) সমাজের চাহিদা মেটানোর জন্য তৈরি করা হয়নি। আমরা যে অল্প কয়েক দিনের সরকার, আমাদের পক্ষে এটা রিস্ট্রাকচারিং (পুনর্গঠন) করা খুব কঠিন কাজ। এটার জন্য নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। এটি আমাদের অধীন সব বিভাগের প্রয়োজন।’

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস–সংলগ্ন জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের বিষয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এটি গত ১৬ বছর প্রায় অকার্যকর ছিল। এটির বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছে। এটি আসলে জাদুঘরে রূপান্তর হয়নি। কিউরেটরের (রক্ষণাবেক্ষণ) কাজ এখনো সঠিক নয়। এটার সঙ্গে কিউরেটর দল যেমন থাকা উচিত, আধুনিকায়ন যেমন হওয়া উচিত, পাশাপাশি এটার পেছনে একটি গবেষণা দল সংযুক্ত করা উচিত। একটি গবেষণা দল তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৫-২০ দিনের মধ্যে এটার অগ্রগতি জানতে পারবেন।

সভায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে উপদেষ্টা নগরের কে সি দে সড়ক এলাকায় চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন। একই দিন আগ্রাবাদ এলাকায় চট্টগ্রাম জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর এবং এম এম আলী সড়কে জেলা শিল্পকলা একাডেমি পরিদর্শনের কথা রয়েছে উপদেষ্টার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ