রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সদস্য জাকির হোসেন বেপারী, বরগুনা জেলার সাবেক জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য নাজমুল হাসান সোহাগ, বরগুনা জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিরাজ হোসেন, যাত্রাবাড়ী থানার আওয়ামী লীগ কর্মী শফিকুল ইসলাম শফিক, সুবাড্ডা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ কর্মী মহিউদ্দিন, বংশাল থানা ছাত্রলীগের সদস্য মো.

ফাইসাল হোসেন, কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আবু হোসেন, ঢাকা জেলার ছাত্রলীগ সমর্থক আর রহমান, কেরানীগঞ্জ থানার ছাত্রলীগ কর্মী জাহিদ হাসান, পল্টন থানার আওয়ামীলীগ কর্মী করিম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. লতিফ ঢালী, পল্টন থানা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, সবুজবাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান, ৬২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহকারী সেক্রেটারি রাসেল ওরফে পাংকু রাসেল ও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের সংগঠক, ধানমন্ডি ৩২ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার যুবলীগ নেতা পিন্টু মিত্র।

সোমবার (১৯ মে) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

আরো পড়ুন:

সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ

সাম্য হত্যা: শাহবাগ থানার সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ  

তিনি জানান, ১৮ মে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তান এলাকা থেকে ১ থেকে ১১ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি ওয়ারী বিভাগের একটি দল। একই দিনে ডিবি-মিরপুর বিভাগের একটি দল সন্ধ্যার দিকে মিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আ. লতিফ ঢালীকে গ্রেপ্তার করে।

রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মতিঝিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সুব্রত পালকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-রমনা বিভাগের একটি দল। রবিবার দিনগত রাত ২টার দিকে মিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-মিরপুর বিভাগের একটি দল। একই দিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে রাসেল ওরফে পাংকু রাসেলকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-ওয়ারী বিভাগের একটি দল।

এছাড়া রবিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে মুগদা এলাকা থেকে পিন্টু মিত্রকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-সাইবার বিভাগের একটি দল।

গ্রেপ্তার সবার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।

ঢাকা/এমআর/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ল গ র সদস য ব ভ গ র একট য বল গ র স ল গ কর ম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েটে নতুন মেরুকরণ, দুই গ্রুপে বিভক্ত শিক্ষার্থীরা

দুই সপ্তাহেও ক্লাসে ফেরেননি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা। লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তির দাবিতে আজ সোমবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। এই আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেয় শিক্ষার্থীদের একাংশ।

আজ দুপুর ১২টায় কুয়েটের শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় উপাচার্যের কক্ষে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। কিছু সময় পর তারা প্রশাসনিক ভবনের নিচে আসেন এবং বেলা ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষকদের আন্দোলনস্থলে এসে একাত্মতা প্রকাশ করেন ১৯ ব্যাচের প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থী শাফতি আশারি, জিহাদ, ইউসুফ ও শিহাব বলেন, ‘আর এক মাস একাডেমিক কার্যক্রম চালু থাকলে আমরা পাস করে বেরিয়ে যেতাম। কিন্তু তিন মাস ধরে অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছি। আমরা চাই, দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হোক।’

তারা বলেন, ‘যারা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছে, তাদের শাস্তি চাই। তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তার ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সঙ্গে আমরা একমত। তবে নিরপরাধ কেউ যেন শাস্তি না পায়।’

অন্যদিকে তিন মাস ধরে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মো. মহিরুজ্জামান উপল, সৈকত ও ঝলক জানান, তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ও শিক্ষকদের লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তি চান। কিন্তু অপসারিত উপাচার্যের সময়ে করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী নয়। নতুন করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা জানান, আপাতত তাদের কোনো কর্মসূচি নেই।

তারা আরও জানান, বিচার বিভাগীয় তদন্তে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ও শিক্ষকদের লাঞ্ছনাকারী হিসেবে দোষী সাব্যস্তদের পক্ষে কেউ দাঁড়াবে না।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন জানান, লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস-পরীক্ষা নেবেন না। গত ৪ মে থেকে তারা ক্লাস বর্জন ও গত রোববার থেকে প্রশাসনিক কাজ বর্জন করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচির কথা আগেই উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে জানিয়েছিলাম। তিনি শিক্ষকদের না জানিয়ে ঢাকায় গেছেন। একজন শিক্ষককে উপাচার্যের রুটিন কাজ চালানোর জন্য মৌখিকভাবে বলেছেন। মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে ফিরবেন।’

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম জানান, আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তারা প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বাইরে গিয়ে প্রশাসন দোষীদের বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে। এ কারণে কুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম সংকটের মধ্যে পড়েছে।

শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক পক্ষ শিক্ষকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। আর যারা বিভিন্ন দাবিতে গত তিন মাস আন্দোলন করেছে, তারা আপাতত চুপচাপ রয়েছে। কিছুটা চাপেও পড়েছে। এখন তারা কী করবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, সংকট নিরসনের জন্য কুয়েট কর্তৃপক্ষ সাধ্যমতো চেষ্টা করছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের জের ধরে কুয়েটে বন্ধ রয়েছে ক্লাস ও পরীক্ষা। তিন মাস অচলাবস্থা চলায় সেশনজট বেড়েছে। নতুন ব্যাচের ক্লাস এখনও শুরু হয়নি। ফলে বিপাকে পড়েছেন কুয়েটের ৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ