কুমিল্লায় হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্য প্রত্যাহরের দাবি বিএনপির
Published: 19th, May 2025 GMT
‘কুমিল্লায় বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায়’ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর এমন বক্তব্য দেওয়ার ৩ দিন পর এর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপি।
সোমবার বিকেলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। এর আগে গত শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে কুমিল্লায় আহত-শহীদ ও বীর সন্তানদের সম্মানে জুলাই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ ওই মন্তব্য করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) অধ্যক্ষ মো.
তিনি আরও বলেন, ‘হাসনাত আবদুল্লাহ কিংস পার্টিখ্যাত (রাজার পার্টি) এনসিপির মুখপাত্র। তার মতো ব্যক্তিদের দিয়ে পরিশীলিত রাজনীতি হবে না। তাকে (হাসনাত) রাজনীতিতে সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে এবং অন্য দল ও নেতাদের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।
অধ্যক্ষ মো. সেলিম সেলিম ভূঁইয়া বলেন, হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্যে বিএনপির কুমিল্লার নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্য প্রত্যাহার করা না হলে বিএনপির কুমিল্লার নেতাকর্মীদের শান্ত রাখা সম্ভব নয়। তিনি আগামী সাত দিনের মধ্যে তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে কুমিল্লায় কোনো অনুষ্ঠান হাসনাত আব্দুল্লাহকে করতে দেওয়া হবে না।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. সেলিম ভূঁইয়া বলেন, হাসনাত আবদুল্লাহকে ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হলো। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক এমপি আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি জাকারিয়া তাহের সুমন, সদস্য সচিব আশিক-উর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুসহ দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) সংসদীয় আসনের বাসিন্দা। তিনি ওই আসন থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে বিএনপির আল্টিমেটামের বিষয়ে হাসনাতের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কের কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্রমজীবী ভোটারদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য জোহরান মামদানি
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনের দলীয় বাছাইয়ে সবাইকে চমকে দিয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়ে প্রাথমিক জয়ী হন জোহরান মামদানি। গত ২৪ জুন এই দলীয় বাছাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার র্যাঙ্কড চয়েস পদ্ধতিতে (পছন্দের ক্রমানুযায়ী পাঁচজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়া) তৃতীয় ধাপে ৫৬ শতাংশ ভোট পেয়ে চূড়ান্ত জয় নিশ্চিত করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহরান। প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো পেয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোট।
জোহরানের এই সুষ্পষ্ট বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছে। তবে একই সঙ্গে ভোটের মাঠে তাঁর দুর্বলতা কোথায় থাকতে পারে, তা নিয়েও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
ভোটের প্রথম ধাপের ফলাফলে দেখা গেছে, ব্রাউনসভিল এবং ইস্ট ফ্ল্যাটবুশের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ–অধ্যুষিত এলাকায় খুব একটা ভালো করতে পারেননি জোহরান। এসব এলাকায় বেশ বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন অ্যান্ড্রু কুমো।
ব্রাউনসভিল ও ইস্ট ফ্ল্যাটবুশের ৬০ শতাংশের বেশি বাসিন্দা কৃষ্ণাঙ্গ। এসব এলাকায় দারিদ্র্যের হারও বেশি। নিউইয়র্ক নগরে সামগ্রিক দারিদ্র্যের হার যেখানে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, সেখানে ব্রাউনসভিলে এই হার ৩২ দশমিক ৪ এবং ইস্ট ফ্ল্যাটবুশে সেই হার ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত ব্যাপক আলোচিত এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি, সেসব এলাকার মধ্যে ৪৯ শতাংশের সমর্থন পেয়েছেন কুমো, আর মামদানির পক্ষে সমর্থন ছিল ৩৮ শতাংশ।
অন্যদিকে যেসব এলাকায় কৃষ্ণাঙ্গদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, সেখানে কুমোর পক্ষে সমর্থনের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ শতাংশে।
তবে এখানেই মামদানি অনেককেই চমকে দিয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এবার ২০ ও ৩০ বছর বয়সী তরুণ ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি, যা ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনকে ছাড়িয়ে গেছে।এসব পরিসংখ্যানের কারণে প্রশ্ন উঠেছে, নিউইয়র্ক নগরে বসবাসের জন্য সাশ্রয়ী শহরে পরিণত করার যে প্রতিশ্রুতি জোহরান দিয়েছিলেন, তা কি কোনো কাজেই আসেনি? নাকি এসব পরিসংখ্যানের পেছনে লুকিয়ে আছে আরও জটিল কোনো গল্প।
পরিচিত মুখ, কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা
নির্বাচনের প্রাথমিক ফল ঘোষণার আগেই কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল, নিম্ন আয়ের ও কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের সমর্থন আদায়ে কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন জোহরান।
মার্চ মাসে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায়, যেসব ভোটারের পরিবারের আয় ৫০ হাজার ডলারের নিচে, তাদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ প্রথম পছন্দ হিসেবে কুমোকে বেছে নিয়েছেন।
জরিপে দেখা যায়, মেয়র প্রার্থী নির্বাচনের দলীয় বাছাইয়ে নয়জন প্রার্থীর মধ্যে জোহরান ছিলেন অনেক পিছিয়ে। তখন মাত্র ১১ শতাংশ সমর্থন ছিল তাঁর প্রতি। কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে তাঁর অবস্থান ছিল আরও নিচে—মাত্র ৮ শতাংশ। অথচ জরিপে কুমো পেয়েছেন ৫০ শতাংশ ভোট।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিষয়ের কারণে কুমো সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন। রাজনৈতিক পরামর্শক জেরি স্কারনিক বলেন, ‘কুমো এই নির্বাচনের আগেই পরিচিত মুখ ছিলেন। শুধু দুবারের গভর্নরই নন, বরং সাবেক গভর্নর মারিও কুমোর ছেলে এবং প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রশাসনেও কাজ করেছেন তিনি।’
আরও পড়ুনজোহরান মামদানি: প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতার দোটানায় নিউইয়র্কের নতুন স্বপ্ন০২ জুলাই ২০২৫ডেমোক্র্যাট প্রাইমারি নির্বাচনে জয়ের খবরে সমর্থকদের সঙ্গে উল্লাস করছেন জোহরান মামদানি। ২৫ জুন ২০২৫