বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে চলছে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি। এতে বন্ধ রয়েছে নগর ভবনের সব ধরনের কার্যক্রম ও সেবা।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে নগর ভবনের সামনের সড়কে বসে অবরোধ করেছেন ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা। নগর ভবনের প্রধান ফটকের সামনে একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে জাতীয় সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান বাজানো হচ্ছে।

সড়কে অবস্থানের কারণে বঙ্গবাজার থেকে গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজার পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এসব সড়কে চলাচলকারী মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

মঙ্গলবার আন্দোলনকারীরা ইশরাক হোসেনকে দ্রুত মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর জন্য এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

ইশরাক হোসেনকে সমর্থন দিতে আসা বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, জনতার মেয়র ইশরাক ভাইকে অতি দ্রুত শপথ দিতে হবে। তার আগ পর্যন্ত নগর ভবন অচল থাকবে। এই দাবি শিগগিরই মেনে না নেওয়া হলে, তারা কঠিন থেকে কঠিন কর্মসূচি হাতে নেবেন।

গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া অবস্থান কর্মসূচির কারণে নগর ভবন কার্যত অচল। সেখানে কোনো ধরনের দাপ্তরিক কাজ হচ্ছে না। দুর্ভোগে পড়েছেন সেবা নিতে আসা লোকজন। সিটি করপোরেশন নগরবাসীকে ২৮ ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। এসব নাগরিক সেবা এখন বন্ধ রয়েছে।

পুরান ঢাকার বাসিন্দা আসমা বেগম সমকালকে বলেন, ‘একটা কাজের জন্য তিন দিন ধরে ঘুরছি। ফটক বন্ধ, কারও সঙ্গে দেখা করতেও দিচ্ছে না।’

এদিকে স্থানীয় সরকার বিভাগের অফিস নগর ভবনে থাকায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কার্যালয়ে আসতে পারছেন না। গত ডিসেম্বরে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক কাজ চলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ভবনে।

ঢাকার দয়াগঞ্জ থেকে আসা ছাত্রদল কর্মী সুমন হাসান বলেন, ‘ইশরাক হোসেন মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া নিয়ে সরকার বিশেষ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অন্যায় করছে। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সব নাটের গুরু। আমরা ইশরাক ভাইকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’

লালবাগ এলাকার ব্যবসায়ী আদিলুর রহমান বলেন, ‘ইশরাককে ষড়যন্ত্র করে নির্বাচনে হারানো হয়েছিল। এতদিন পরে হলেও কোর্ট তাকে মেয়র ঘোষণা করেছে। যে কয়দিন মেয়াদ আছে ওই কয়দিন আমরা ইশরাককে মেয়রের চেয়ারে দেখতে চাই।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নগর ভবন ইশর ক হ স ন ন গর ক স ব স থ ন য় সরক র ইশর ক হ স ন নগর ভবন র ভবন

এছাড়াও পড়ুন:

হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত, তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার

হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আলী আহমেদ।

গতকাল সোমবার বিকেল থেকে কলেজের ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী নতুন ও পুরোনো দুটি ছাত্র হল খুলে দেওয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন।

হল খুলে দেওয়া নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিষয়ে শিক্ষার্থী আলী আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে আজ একটি সভা হয়েছে। সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, এর আলোকে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে যাচ্ছি। আমাদের মূল দাবি ছিল, দীর্ঘদিন ধরে হল যে বন্ধ রয়েছে, সেটা যাতে চালু করা হয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হচ্ছে ঈদের আগেই হল উদ্বোধন হবে। ঈদের বন্ধে হলের বাকি কাজ করা হবে। পয়লা জুলাই শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবেন।’

আলী আহমেদ আরও বলেন, ‘হল যাতে চালু হয় সেটিই চেয়েছিলাম। সেটি যেন নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়। অবশেষে কলেজ প্রশাসন থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যাঁরা আবেদন (হলে থাকতে) করেছিলেন, তাঁরা খোঁজ নেবেন। আর কলেজ প্রশাসন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেই সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হলে আবারও কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুরে কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্রদের আবাসিক সিট বরাদ্দ ও শিক্ষার্থীদের বসবাসের উপযোগীকরণের বিষয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সভা হয়। সভায় ৫টি সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তগুলো হলো—ছাত্রদের দাবিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ে ছাত্রাবাস চালু, আগামী ৩০ মের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষে কলেজ কর্তৃপক্ষের নিকট ‘শহীদ মামুন ছাত্রাবাস’ হস্তান্তর, শহীদ মামুন ছাত্রাবাসে আসন বরাদ্দের তালিকা ২৫ মে প্রকাশ, আসনপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা আগামী ৪ জুনের মধ্যে নির্ধারিত হোস্টেল ফি অনলাইনে জমা দেবেন, পয়লা জুন শহীদ মামুন ছাত্রাবাসের উদ্বোধন এবং পয়লা জুলাই থেকে আবাসিক ব্যবস্থা চালু এবং আক্কাছুর রহমান আঁখি ছাত্রাবাস শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে কার্যাদেশ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ছাত্রদের জন্য চালুর সিদ্ধান্ত হয়।

জরুরি সভায় কলেজের অধ্যক্ষ ছদরুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক, কলেজের নিরাপত্তা কমিটি, শৃঙ্খলা কমিটি ও হোস্টেল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এবং সব হোস্টেলের পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনহল খুলে দেওয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে তিতুমীর কলেজের ১০–১৫ শিক্ষার্থী১৯ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ