জাবি ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির মধ্যে সমঝোতা
Published: 20th, May 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সির্টির মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণায় পারষ্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তিপত্রে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো.
আরো পড়ুন:
জাবিতে আবাসিক হলের পাশে একাডেমিক ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ
জাবি ও ঢাবির দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ
চুক্তির আওতায় দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা, যৌথ সেমিনার, কর্মশালা ও অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে করে উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “এই সমঝোতা চুক্তি দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো জোরদার করবে। এতে গবেষণা ও শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতির সম্ভাবনা অনেকগুণ বাড়বে।”
অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, জাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এমআর কবির, ফ্যাকাল্টি অব গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের ডিন অধ্যাপক মো. কবিরুল ইসলাম, এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মিজানুর রহমান, মানবিক ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক লিজা শারমীন, অধ্যাপক আলেয়া প্রমুখ।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইউন ভ র স
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই শহীদদের সনদ সম্ভাব্য, যোদ্ধাদের সনদ একটু কঠিন: উপদেষ্টা শারমীন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে শহীদ শিক্ষার্থী নাফিসা হোসেন মারওয়ার বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, জুলাই আন্দোলনে আমি নিজেও মাঠে ছিলাম। আমরা দায়িত্ব নিয়েছি এক বছর হলো। এতদিনের মধ্যে আমরা তাদের কাছে যেতে পারিনি। আমরা যতটুকু অনুদান দিতে পেরেছি শহীদ নাফিসার বাবা তা পেয়েছেন। এখানে আর একজন শহীদের বাবা আছেন তিনিও অনুদান পেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকে, আমরা সময়মতো শহীদদের পারিবারের কাছে পৌঁছাতে পারছি না। অনেক দেরি হলেও আপ্রাণ চেষ্টা করছি সবার কাছে পৌঁছানোর। নাফিসার বাবা ও জুলাই কন্যাদের দাবি হচ্ছে জুলাই সনদ। এখানে শহীদদের সনদ সম্ভাব্য কিন্তু যোদ্ধাদের সনদ একটু কঠিন কারণ যোদ্ধাদের সংখ্যা অনেক।
শুক্রবার আড়াইটায় উপদেষ্টা গাজীপুরের টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকায় শহীদ নাফিসার বাড়িতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদ নাফিসার বাবা আবুল হোসেন। এসময় তিনি বলেন, বেঁচে থাকতে মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচার দেখে যেতে চাই। খুনিদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।
নাফিসার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার এবং স্থানীয়রা। মারা যাওয়ার এক বছর পরও তার স্মৃতি আঁকড়ে কাঁদছে তার পরিবার। এ সময় উপদেষ্টাকে পেয়ে সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে নাফিসার মা কুলসুম বেগম পারিবারিক সমস্যার কারণে দুই মেয়েকে নিয়ে সাভারের দক্ষিণ বক্তারপুরে কোর্টবাড়ি এলাকায় চলে আসেন। এরপর তিনি মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিদেশে পাড়ি জমান। নাফিসাকে ভর্তি করা হয় সাভারের বেসরকারি ল্যাবরেটরি কলেজে। পরে নাফিসার বাবা আবুল হোসেন নাফিসাকে টঙ্গীতে নিয়ে যান। তিনি নাফিসাকে সাহাজউদ্দিন সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। তবে নাফিসা অধিকাংশ সময়ে সাভারে মামা হযরত আলীর বাসায় থাকতেন। গত ২৮ জুলাই ধামরাইয়ে বড় মামার বাসায় আসেন। পরে ৩০ জুলাই ছোট মামা হযরত আলীর বাসায় যান। এরপর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে সাভারে আন্দোলনে অংশ নিতেন।
আগস্টের ৩ তারিখ থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কদের সঙ্গে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন নাফিসা। ৫ আগস্ট সকালে মামাকে জানিয়েছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গাবতলীতে যাবেন।
বিষয়টি ভেবে মামা হযরত আলী আন্দোলনে যেতে নিষেধ করছিলেন। কিন্তু নাফিস নিষেধ শোনেননি। কাউকে কিছু না বলেই বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর মামা নাফিসার মুঠোফোনে কল দিলে জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আছেন। তখন মামা তাকে রেডিও কলোনি হয়ে বাসায় ফিরতে বলেন। বেলা ১১টার দিকে আবার কল দিলে আর ফোন ধরেননি নাফিসা।
বেলা আড়াইটার দিকে নাফিসার ছোট বোন সাফা হোসেন কল দিলে অপরিচিত একজন কল ধরে ‘নাফিসা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন’ জানিয়ে ল্যাবজোন হাসপাতালে যেতে বলেন। বিষয়টি জানতে পেরে হযরত আলী ল্যাবজোন হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে নাফিসাকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখতে পান। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকেরা নাফিসাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আন্দোলনকারীরাসহ লাশ বাসায় নেওয়ার পথে মুক্তির মোড় এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ ছররা গুলি ছোড়ে। এতে হযরত আলীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যাম্বুলেন্সে বিকেল চারটার দিকে লাশ তার মামার বাসায় নেওয়া হয়।
রাত নয়টার দিকে সাভারে জানাজা শেষে নাফিসার মায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নানির বাসায় নাফিসার ছোট ভাইয়ের কবরের পাশে তাকে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়। তবে নাফিসার বাবা টঙ্গীর এরশাদনগরে লাশ নিয়ে নিজ বাড়ির একটি কবরস্থানে দাফন করেন।