ভারতীয় সেনা বিভাগের প্রথম ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ বলেছিলেন যে, ‘‘যদি কোনো ব্যক্তি বলেন যে সে মরতে ভয় পায় না, তাহলে হয় সে মরতে ভয় পাচ্ছে, নয়তো সে একজন গোর্খা সেনা।’’- গোর্খা সেনারা এতোটাই সাহসী যে তারা যেকোনো ঝুঁকি নিতে পারে।

কথিত আছে, গোর্খারা প্রাকৃতিকভাবেই যোদ্ধা। যুদ্ধের সময় তাদের আক্রমণাত্মক প্রকৃতি ও শৈলির জন্যই পরিচিত। এরা আত্মবিশ্বাস ও সাহসে পরিপূর্ণ। 

নেপালের একটি জেলার নাম গোর্খা। এটা যোদ্ধাদের জন্যই প্রসিদ্ধ। ভারতীয় সেনা বিভাগের গোর্খা সেনাদের নেওয়া হয় উত্তর ভারত আর নেপালের পাহাড়ে বসবাসকারী গুরুং, রায়, সাগর ও লিম্বু নামক আদিবাসী থেকে। 

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হয়নি: বিক্রম মিশ্রি

রাশিয়া-ইউক্রেন ‘অবিলম্বে’ যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করবে: ট্রাম্প

প্রত্যেক গোর্খা সেনার কাছে ১৮ ইঞ্চি ধারালো চাকু থাকে। যাকে তারা কুকরি বলে। এই সেনাদের প্রধান হাতিয়ার হলো চাকু বা কুকরি। ১৮১৫ সালের ২৪ এপ্রিল গোর্খার রেজিমেন্টের প্রথম সেনা দল ‘নাসিরি রেজিমেন্ট’ তৈরি হয়। গোর্খা রেজিমেন্টের ভরসাতেই ব্রিটিশ সেনাদল হিটলারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করতে নেমেছিল। 

যখন ভারত ব্রিটিশ সম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সম্রাজ্যের পক্ষ থেকে নেপালের দুই লাখ গোর্খা সেনা অংশগ্রহণ করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ২০ হাজার গোর্খা সেনার মৃত্যু হয়েছিল। ইংরেজরা ১৮৫৭ সাল থেকেই নিজেদের রেজিমেন্টে গোর্খা সেনা নিযুক্ত করা শুরু করে।  ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ইতিহাসও রয়েছে এই সেনাদের। 

ভারতের প্রথম স্বতন্ত্র সংগ্রামে এরা ব্রিটিশ সেনাদের হয়ে লড়াই করেছিল। কেননা ওই সময় পর্যন্ত তারা ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর অধীনে কাজ করতো। ১৯৪৭ সালে যখন ভারত স্বাধীন হলো তখন ব্রিটেন, ভারত ও নেপালের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী দশটি গোর্খা রেজিমেন্ট ব্রিটিশ সেনা বিভাগ ও স্বাধীন ভারতীয় সেনাবিভাগের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। 

স্বাধীন ভারতীয় সেনাবিভাগে ৭টি গোর্খা রেজিমেন্ট যুক্ত হয়। এখন এই ৭টি রেজিমেন্টের ৪৬টি ব্যাটেলিয়নে প্রায় ৪২ হাজার গোর্খা সেনা আছে। এদের প্রতীক হলো এক জোড়া বাঁকানো কুকরি। এই সেনারা ছুরিকে সব সময় তাদের ব্যক্তিগত অস্ত্র হিসেবে বহন করে। 

দশরা উৎসব এই গোর্খা সেনাদের কাছে একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এই অনুষ্ঠানে প্রাচীন নিয়ম অনুযায়ী মহিষ বলি দেওয়া হয়। মহিষের মাথাকে কুকরির এক কোপে কেটে ফেলা হয়। মহিষ বলি দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় রেজিমেন্টের সবচেয়ে তরুণ সদস্যকে। 

ভারতীয় রেজিমেন্টকে গোর্খা রেজিমেন্ট দুইজন মার্শাল আর্ট দিয়েছে একজন হলেন শ্যাম মিনেকশ অন্যজন হলেন জেনারেল দলবির সিং সোহাগ। ভারতীয় সেনা গোর্খা রেজিমেন্ট পাকিস্তানী সেনা ও চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পারদর্শীতা দেখানোর উপহার স্বরূপ গোর্খা রেজিমেন্টকে ৩টি পরমবীর চক্র, ৩৩টি মহাবীর চক্র এবং ৮৪টি বীর চক্র দিয়ে সম্মান জ্ঞাপন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর ১২০০ থেকে ১৩০০ নেপালি গোর্খা ভারতের সেনা বিভাগে যোগ দেয়। গোর্খা সেনাদের উচ্চতা ৫ ফুট দুই ইঞ্চি থেকে ৫ ফুট চার ইঞ্চি। গোর্খারা শুধুমাত্র ভারতীয় সেনাবাহীনিতে কাজ করে না তারা ব্রিটেন, সিঙ্গাপুরের সেনাবাহীনিতেও কাজ করে। এজন্য এদেরকে ভাড়াটে সেনাও বলা হয়।  

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

কান চলচ্চিত্র বিশ্ব নারী অ্যাজেন্ডা : সমতা এখন আর গল্প নয়, বাস্তবতা

কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হল ‘ওয়ার্ল্ড ওমেন কান অ্যাজেন্ডা’। যেখানে সমতার নতুন এক বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরল  ওয়ার্ল্ড ওমেন ফাউন্ডেশন।  এখানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ব্রাজিলের সংস্কৃতি মন্ত্রী ও কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মার্গারেথ মেনেজেস।

কানের প্রথম দিনেই চালু হয় ‘Equality Moonshot’— এর মত একটি বৈপ্লবিক উদ্যোগ। এটির লক্ষ্য: গল্প, মিডিয়া, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে সমতার শক্তিশালী ভিত্তি নির্মাণ করা।  আয়োজক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই ১.৫ বিলিয়নের বেশি মিডিয়া ইমপ্রেশন অর্জন করেছে।

উদ্বোধনী দিনে ওয়ার্ল্ড ওমেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও রূপা ড্যাশ, ফরাসি অভিনেত্রী মারিয়ান বোরগো এবং কাউন্টেস কিয়ারা মোডিকা ডোনা দালে রোজের নেতৃত্বে শুরু হয় আলোচনা পর্ব। তারা পিতৃতন্ত্রকে “বিটা ভার্সন” বলে আখ্যা দিয়ে নারী-নেতৃত্বাধীন সংস্কৃতিকে "ভার্সনসন ২.০ বলে অভিহিত করেন। যাকে একটি োর্বজনীন নতুন অপারেটিং সিস্টেম।

নারী পরিচালকদের গল্পের একটি সেশন ছিল এতে। এই সেশনে অংশ নেন পরিচালক রুসুদান গ্লুরজিদজে ও আনকা মিরুনা লাজারেস্কু। আলোচনা হয়, কীভাবে নারী পরিচালকদের গল্প এখন শুধু সিনেমা নয়, বরং সংস্কৃতির নতুন কণ্ঠস্বর হয়ে উঠছে। তথ্য বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে নারী পরিচালিত ছবির আর্থিক রিটার্ন ১৭% পর্যন্ত বাড়তে পারে।

এই আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ব নারী ফাউন্ডেশন প্রমাণ করেছে—গল্প এখন শুধু বিনোদন নয়, এটি নীতি, অর্থনীতি এবং সুস্থতার কাঠামো তৈরির একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। বিশ্ব পরিবর্তনের পথে কান চলচ্চিত্র উৎসব এখন আর শুধু সিনেমার উৎসব নয়—এটি হয়ে উঠেছে ভবিষ্যতের নকশা রচনার কেন্দ্রবিন্দুও।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাজ্যের উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেলেন মেহজাবীন
  • পাঁচ মিনিটের করতালিতে মুগ্ধ স্কারলেট
  • ৫৫ বছর পর কানে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’
  • ভেতরে যদি আনন্দ না থাকে তাহলে বেঁচে থাকা অর্থহীন
  • কানে পা রেখেই রূপের দ্যুতি ছড়ালেন জাহ্নবী
  • ‘রুটস অফ এ্যালিগ্যান্স’ থিমে সারা’র বাহারি ঈদ পোশাক
  • ইবিতে ছাত্রশিবিরের ৩ দিনব্যাপী বিজ্ঞান উৎসব শুরু
  • কান উৎসবে বিশ্ব নারী অ্যাজেন্ডা: সমতা এখন আর গল্প নয়, বাস্তবতা
  • কান চলচ্চিত্র বিশ্ব নারী অ্যাজেন্ডা : সমতা এখন আর গল্প নয়, বাস্তবতা