ফতুল্লার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী চুন্নু গ্রেপ্তার
Published: 21st, May 2025 GMT
ফতুল্লায় চাঞ্চল্যকর গৃহবধু লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) হত্যা মামলায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু (৫০) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। বুধবার (২১ মে) দুুপরে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নয়া মাটি (কুতুবপুর) এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত চুন্নু ওই এলাকার মৃত তালেব হোসেনের ছেলে।
র্যাব জানায়, গত ২ জানুয়ারি জেলার ফতুল্লা থানাধীন পশ্চিম দেওভোগ নুর মসজিদ রোড এলাকায় লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) হত্যার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে নিহত লামিয়া আক্তার ফিজার পিতা মোহাম্মদ আলী (৪৬) বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-৯, তারিখ ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ইং ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
এ ঘটনার সাথে জড়িত আসামিদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার নয়া মাটি (কুতুবপুর) এলাকায় তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় বিস্ফোরক আইন, হত্যা চেষ্টা, মাদক, চুরিসহ ১৪ টি মামলা রয়েছে।
ঘটনার বিবরণে র্যাব জানায়, ২০২০ সালের ১৪ আগষ্ট নিহত লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) এর সাথে আসামী আসাদুজ্জামান ওরফে মুন্না এর নিকট ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ভিকটিমের স্বামী পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। ভিকটিম ১নং আসামী তার স্বামীকে বাধা নিষেধ করায় তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করত। তারপরও ভিকটিম সংসার করে আসছিল।
সংসার করাবস্থায় দাম্পত্য জীবনে ভিকটিমের গর্ভে একটি পূত্র সন্তান জন্য লাভ করে। নাম মোরসালিন বয়স ২ বৎসর। সন্তান হওয়ার পর ১নং আসামী পরকীয়া চালিয়ে আসছিল। ভিকটিম অন্যান্য আসামীদের নিকট পরকীয়ার বিষয়টি জানিয়ে বিচার চাইলে তারা বিচার না করে বরং ভিকটিমকে গালিগালাজ করত।
বিষয়টি ভিকটিম তার পরিবারকে জানানোর পর পারিবারিক ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস মিমাংশা হয়। তারপরও ১নং আসামী সংশোধন না হয়ে বরং ভিকটিমকে সময় না দিয়ে অধিক রাত্রে বাসায় ফিরত। এই নিয়ে তাদের মধ্যে মন মালিন্য চলে আসছিল।
ভিকটিম তার সন্তানের ভবিষ্যত এর দিক বিবেচনা করে মারধরের বিষয়টি গোপন রাখত। অনুমান ০১ সপ্তাহ পূর্বে ভিকটিম তার স্বামীকে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার কারনে অন্যান্য আসামিদের ইন্ধনে ১নং আসামী ভিকটিমকে মারধর করে। আসামিরা ভিকটিমকে হুমকি দিত যে, মারধরের ঘটনা ভিকটিমের পরিবারকে জানালে জীবনের তরে শেষ করে ফেলবে। যে কারনে ভিকটিম ভয়ে সমস্ত ঘটনা গোপন রাখত।
চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ভিকটিম ফিজা তার পিতার বাসায় আসার কথা ছিল কিন্তু না আসায় তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পওে বিকাল অনুমান ৪.
এ সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন সাড়ে ৫টার দিকে ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব লামাপাড়া নয়ামাটি মার্কাস মসজিদ সংলগ্ন ১নং আসামির বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় ১নং আসামীর রুমে জানালার গ্রিলের সাথে ভিকটিম গলায় ওড়না ও গামছা দ্বারা বাধা পা মাটিতে ডান হাতের আঙ্গুলে এবং বাম হাতের বাহু সহ গলায় লালচে দাগসহ মৃত অবস্থায় ঘাড় বেকে ঝুলছে।
পুলিশ সংবাদ পেয়ে আসামিদের বাড়িতে আসে এবং ভিকটিমের লাশের সূরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে মৃত দেহের ময়না তদন্ত করার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ ম রধর পরক য়
এছাড়াও পড়ুন:
মন ছুঁয়ে গেল আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’
টিকিট বুকিং আগেই ছিল। দিনের শেষ শো। এডমন্ডসন পার্কের ইডি স্কয়ারের ইভেন্ট সিনেমা হলে পরিবার নিয়ে পৌঁছালাম। সিনেমার নাম ‘সিতারে জমিন পর’—মন বলছিল, বিশেষ কিছু অপেক্ষা করছে। পাশে আমার মেয়ে, ছোট ভাইবোনেরা। মনে মনে ভাবছিলাম, এক হিন্দি ছবি কী-ই বা নতুন দেখাবে! কিন্তু ছবির শেষে আমরা সবাই আসনেই বসে রইলাম—নিঃশব্দ। আচ্ছন্ন আমরা সবাই। বুঝলাম ‘সিতারে জমিন পর’ কোনো সাধারণ সিনেমা নয়—এ যেন এক আত্মানুসন্ধানের গল্প। ‘তারে জমিন পর’ ছবির আবেগঘন ভিত্তির ওপর দাঁড়ানো এই ছবির সিকুয়েলও ঠিক ততটাই আবেগময়, তবে ভিন্ন বাস্তবতায়। বিশেষভাবে চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে ছবির গল্প ভাবায়, কাঁদায় আর বিবেকেও প্রশ্ন তোলে—‘স্বাভাবিক’ বা ‘নরমাল’ বলতে আমরা কী বুঝি?
জীবনের গল্প
ছবির কেন্দ্রে আমির খানের চরিত্র গুলশান অরোরা। একজন বাস্কেটবল কোচ, যিনি জেদি, রাগী, কিন্তু ভেতরে লুকিয়ে আছে তাঁর গভীর মানসিক ক্ষত, অতীতের দগদগে স্মৃতি আর সমাজের চাপিয়ে দেওয়া ‘স্ট্রং পুরুষ’ হয়ে ওঠার অমানবিক চাপ। এই কোচ গড়ে তোলেন একদল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন খেলোয়াড় নিয়ে তৈরি দল। যেখানে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জীবন নিজের ভেতরেই এক একটি যুদ্ধক্ষেত্র। তাঁরা শুধু খেলেন না—জীবনের ব্যাখ্যাও নতুন করে শেখান। ছবির এক অসাধারণ মুহূর্তে, একটি ছোট্ট মেয়ে কোচকে শেখায় ‘সরি’ বলা কত সহজ, তখন বুকের কোথাও কাঁপুনি অনুভব করি। মনে হয়, এ কেবল সিনেমা নয়—আমাদের মধ্যেই ঘটে যাওয়া গল্প।