অনুমতি না নিয়ে চেয়ারম্যান পদে আ.লীগ নেতা, ক্ষোভ
Published: 21st, May 2025 GMT
বিয়ানীবাজারের মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আলতাফ হোসেন। ইউপি সদস্যদের সাধারণ সভা আহ্বান না করে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন শুরু করায় ইউনিয়নজুড়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
আলতাফ হোসেন মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর ছোট ভাই সরোয়ার হোসেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
জানা গেছে, গত সোমবার স্থানীয় সরকার, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় থেকে মাথিউরা ইউপির আগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনা কাউকে না জানিয়ে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন শুরু করেন আলতাফ হোসেন। নিয়ম অনুযায়ী, চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব নেওয়ার আগে জেলা প্রশাসক বা উপজেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নেননি তিনি।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে একজন আওয়ামী লীগ নেতা দায়িত্ব নেওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে আলতাফের ভাই উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় প্রকাশ্যে তাঁর বিরোধিতা করার সাহস পাচ্ছেন না তারা।
মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো.
প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আলতাফ হোসেন দাবি করেন, ইউএনও তাঁকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন আর্থিক বিষয় ছাড়া জনবান্ধব কার্যক্রমের পরিচালনার জন্য তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো কারণে ইউপি চেয়ারম্যান অপরাসিত হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ দায়িত্ব পালন করবেন। এ নীতিমালা অনুসরণ করে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। আলাদা করে কারও সম্মতির নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
আলতাফ হোসেন স্বঘোষিতভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ায় ক্ষোভ জানান প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফয়জুল হক নজমুল। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি না নিয়ে আলতাফ হোসেন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এ বিষয়ে নিয়ম মাফিক, ইউপি সদস্যদের নিয়ে কোনো সাধারণ সভা হয়নি। তিনি জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান নির্ধারণ হয়েছিল ২০২২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। সে সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আলতাফ হোসেন প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমান তিনি এ সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন।
আলতাফ হোসেনকে মৌখিকভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইউএনও গোলাম মুস্তফা মুন্না। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে মাথিউরা ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্তের পর তিনি মৌখিকভাবে কাউকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেননি। আলতাফ হোসেন চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসলে সেটির কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কে হবেন সেটি নির্ধারণ করবেন সিলেটের জেলা প্রশাসক। আলতাফ হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
সিলেট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তিনি এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আলত ফ হ স ন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক