বিয়ানীবাজারের মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আলতাফ হোসেন। ইউপি সদস্যদের সাধারণ সভা আহ্বান না করে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন শুরু করায় ইউনিয়নজুড়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। 
আলতাফ হোসেন মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর ছোট ভাই সরোয়ার হোসেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। 
জানা গেছে, গত সোমবার স্থানীয় সরকার, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় থেকে মাথিউরা ইউপির আগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনা কাউকে না জানিয়ে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন শুরু করেন আলতাফ হোসেন। নিয়ম অনুযায়ী, চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব নেওয়ার আগে জেলা প্রশাসক বা উপজেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নেননি তিনি। 
এদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে একজন আওয়ামী লীগ নেতা দায়িত্ব নেওয়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে আলতাফের ভাই উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় প্রকাশ্যে তাঁর বিরোধিতা করার সাহস পাচ্ছেন না তারা। 
মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো.

তাজ উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে ইউপি সদস্যরা আলতাফ হোসেনকে সমর্থন দিয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন। এ ছাড়া ইউএনওর কাছ থেকেও এ ব্যাপারে তিনি (আলতাফ) মৌখিক অনুমতি নিয়েছেন তাঁকে বলা হয়েছে। করণীয় জানতে মঙ্গলবার তিনি ইউএনওর কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।  ইউএনও সরকারি কাজে ঢাকা অবস্থান করায় তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে পারেননি। 
প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আলতাফ হোসেন দাবি করেন, ইউএনও তাঁকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন আর্থিক বিষয় ছাড়া জনবান্ধব কার্যক্রমের পরিচালনার জন্য তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো কারণে ইউপি চেয়ারম্যান অপরাসিত হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ দায়িত্ব পালন করবেন। এ নীতিমালা অনুসরণ করে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। আলাদা করে কারও সম্মতির নেওয়ার প্রয়োজন নেই। 
আলতাফ হোসেন স্বঘোষিতভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ায় ক্ষোভ জানান প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফয়জুল হক নজমুল। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি না নিয়ে আলতাফ হোসেন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এ বিষয়ে নিয়ম মাফিক, ইউপি সদস্যদের নিয়ে কোনো সাধারণ সভা হয়নি। তিনি জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান নির্ধারণ হয়েছিল ২০২২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। সে সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আলতাফ হোসেন প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমান তিনি এ সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন।
আলতাফ হোসেনকে মৌখিকভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইউএনও গোলাম মুস্তফা মুন্না। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে মাথিউরা ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্তের পর তিনি মৌখিকভাবে কাউকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেননি। আলতাফ হোসেন চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসলে সেটির কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কে হবেন সেটি নির্ধারণ করবেন সিলেটের জেলা প্রশাসক। আলতাফ হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। 
সিলেট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তিনি এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আলত ফ হ স ন সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

শেরপুরে বেশি দামে সার বিক্রি: ২ ব্যবসায়ীকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা

শেরপুরে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করায় দুই সার ব্যবসায়ীকে প্রায় সোয়া লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেরপুর পৌর শহরের আখের মাহমুদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় এক বিএডিসি সার ডিলারকে ১ লাখ টাকা ও লাইসেন্সবিহীন সার বিক্রি করায় আরেক ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আরো পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে মহাসড়কে ১০০০ স্থাপনা উচ্ছেদ

ঝিনাইদহে ২৫০টি অবৈধ জাল জব্দ, বাঁধ উচ্ছেদ

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া আদালত পরিচালনা করেন। তিনি জরিমানার তথ্য জানান।  

ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া বলেন, ‘‘সার বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই অসাধু ব্যাবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। কৃষকের উপর জুলুম মেনে নেওয়া হবে না।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের বিভিন্ন সোর্স এ সব অসাধু ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর রাখছেন। যার বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’’ জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

অভিযানকালে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে কৃত্রিম সার সংকট দেখিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করছেন। বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের আখের মাহমুদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে বেশি দামে সার বিক্রির প্রমাণ পেয়ে বিএডিসি সার ডিলার মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। একইসঙ্গে লাইসেন্সবিহীন সার বিক্রয় করায় একই বাজারের কীটনাশক বিক্রেতা শিশির এন্টারপ্রাইজকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসলিমা খানম নীলু বলেন, ‘‘আমন মৌসুসে সারের দাম ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষায় আমরা নিয়মিত অভিযান করছি। আমরা যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি, সেখানে অভিযান পরিচালনা করছি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রির সুযোগ নেই।’’

ঢাকা/তারিকুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাবনায় পুলিশ দেখে পালালেন শিকারিরা, উদ্ধার ৪৫টি ঘুঘু অবমুক্ত
  • শেরপুরে বেশি দামে সার বিক্রি: ২ ব্যবসায়ীকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা