ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমাতে মানুষকে নয়, বরং মশাকেই ম্যালেরিয়ার ওষুধ দেওয়ার পদ্ধতি বের করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু গবেষক। খবর- বিবিসি

প্রতি বছর অন্তত ছয় লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ায় মারা যায়, যারা মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। নারী মশা মানুষের রক্ত পান করার সময় ছড়ায় এই রোগটি। বর্তমানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমানোর জন্য কীটনাশক দিয়ে মশা নিধন ছাড়া আর তেমন কোনো উপায় নেই। অনেক বছর ধরে কীটনাশক ব্যবহার করছে মানুষ, এর ফলে অনেক দেশের মশার ওপর কীটনাশক আর কাজ করে না। 

কিন্তু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক দেখেন, ম্যালেরিয়া ছড়ানো মশার ওপর একজোড়া ওষুধ প্রয়োগ করতে পারলে মশাগুলোর শরীর থেকে ম্যালেরিয়া চলে যায়, ফলে ওই মশারা মানুষকে কামড়ালেও আর ম্যালেরিয়া ছড়ায় না। মশার শরীরে থাকা ম্যালেরিয়ার পরজীবীগুলো মেরে ফেলতে ওষুধ দুটি শতভাগ কার্যকর। 

কিন্তু গবেষণাগারের বাইরে মশার শরীরে এই ওষুধ প্রয়োগের কী উপায়? যেহেতু মশা থেকে বাঁচতে মানুষ মশারি ব্যবহার করে, তাই মশারি ব্যবহার করেই এই ওষুধ দেওয়া হবে। মশারিতে মাখিয়ে দেওয়া হবে ওই দুটি ওষুধ। মশা যখন মশারিতে বসবে, তখন পা বেয়ে মশার শরীরে প্রবেশ করবে ওই ওষুধ।  

মশারিতে বসার পর মশা যদি কোনো কারণে নাও মরে, তাতেও ক্ষতি নেই। কারণ ওষুধের কার্যকারিতা এতই বেশি যে তার শরীর থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল হয়ে যাবে। 
এই পদ্ধতিতে ম্যালেরিয়া ঠেকানোর একটি উপকারিতা হলো, একবার ওষুধ প্রয়োগের পর ওই মশারিটি ব্যবহার করা যাবে এক বছর পর্যন্ত। ফলে এই পদ্ধতিটি বেশ সহজলভ্য ও সস্তা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। 

গবেষণাগারে এই পদ্ধতিটির কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। এর পরের ধাপ হিসেবে ইথিওপিয়ায় এই ম্যালেরিয়ারোধী মশারি ব্যবহার করে দেখা হবে নিয়মিত ব্যবহারে তার কার্যকারিতা কেমন। সব মিলিয়ে এ ধরনের মশারি সাধারণ মানুষের হাতে আসতে পারে আরও ছয় বছর পর। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্নমত

ইসরায়েল গত সপ্তাহে ইরানে নজিরবিহীন হামলা শুরুর সময় দাবি করেছিল, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে। যেকোনো সময় এ অস্ত্র তৈরি করে ফেলবে তারা। ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকাতেই দেশটিতে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

তবে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। মার্কিন গোয়েন্দা পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির মতো অবস্থায় নেই। শুধু তাই নয়, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে তেহরানের অন্তত তিন বছর লাগবে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এসব তথ্য দিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দা পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ট্রাম্প প্রশাসনের চারজন কর্মকর্তা।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অবশ্য এ বিষয়ে বলেন, ইরান বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার ঠিক আগের ধাপে রয়েছে। যদি তারা একটি (পারমাণবিক অস্ত্র) তৈরি করতে চায়, তাহলে এর জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই তাদের কাছে রয়েছে।

সেই চার কর্মকর্তার একজনের মতে, ইরানে টানা পাঁচ দিন ধরে ইসরায়েলের বিমান হামলার পর মার্কিন গোয়েন্দারা এখন ধারণা করছেন, ইসরায়েল সম্ভবত ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতাকে মাত্র কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দিতে পেরেছে।

অপর এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে হয়। এ জন্য দরকার পড়ে সেন্ট্রিফিউজের। ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় সেই সেন্ট্রিফিউজ আছে। ইসরায়েলের হামলায় নাতাঞ্জের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু দেশটির সুরক্ষিত আরেকটি পারমাণবিক স্থাপনা ফরদো এখনো অক্ষত।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় অস্ত্র না দিলে ও আকাশপথে হামলা চালাতে সহায়তা না করলে ফরদোর ক্ষতি করার মতো সক্ষমতা ইসরায়েলের নেই।

ইরানের ফরদো পারমাণবিক কেন্দ্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ