‘চায়ের দেশ’ ‘আমের শহর’—এসব অভিধা দেশে প্রচলিত আছে। এর পাশাপাশি ‘লিচুর গ্রাম’ হিসেবে ক্রমেই পরিচিত হয়ে উঠছে মঙ্গলবাড়িয়া। এই গ্রামের লিচুর সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে। 

কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে পাকুন্দিয়া উপজেলার একটি গ্রাম মঙ্গলবাড়িয়া। এ গ্রামের নামেই লিচুর নাম- ‘মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু’। লিচু চাষ করেই দেশখ‌্যাত এই গ্রাম। 

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের অধিকাংশ মানুষ লিচু চাষ করে এখন স্বাবলম্বী। লিচু চাষে ভাগ্য ফিরেছে তাদের। প্রতি মৌসুমেই মঙ্গলবাড়িয়ায় লিচু বিক্রি হয় কয়েক কোটি টাকার। এ মৌসুমে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির আশা করছেন মঙ্গলবাড়িয়ার চাষি ও কৃষি বিভাগ। 

ঠিক কত বছর আগে এবং কীভাবে এ গ্রামে লিচু চাষ শুরু হয়েছিল, তার সঠিক কোনো তথ‌্য কারো জানা নেই। ধারণা করা হয়, প্রায় ২০০ বছর আগে এ গ্রামেরই একজন চীন থেকে লিচুর চারা এনে তার বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেন। তারপর একে একে পুরো গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় ছড়িয়ে যায় এ লিচু। প্রথমে নিজেদের খাওয়ার জন্য গাছ রাখলেও কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবেই হচ্ছে লিচু চাষ। তাই, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের নামেই লিচুর নামকরণ করা হয়েছে। এখন এই লিচুর জন‌্যই বিখ‌্যাত হয়ে উঠেছে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রাম। এ গ্রামের লিচু চাষ দেখে উদ্বুব্ধ হয়ে এ বছর পাশের আরো তিনটি গ্রাম—কুমারপুর, নারান্দী এবং হোসেন্দীতেও কৃষি বিভাগের পরামর্শে লিচু চাষ শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রবেশকালে পাকা সড়কের দুই পাশেই দেখা যায় সারি সারি লিচু গাছ। হাজার হাজার লিচু থোকায় থোকায় ঝুলছে গাছগুলোতে। লাল টকটকে পাকা লিচু দেখলে যে কারো খেতে লোভ জাগবে। টসটসে রসালো, সুমিষ্ট স্বাদ, সুন্দর গন্ধ ও গাঢ় লাল রঙের কারণে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর খ্যাতি ছাড়িয়ে পড়েছে মধ‌্যপ্রাচ‌্যেও। বছরের পর বছর ধরে মঙ্গলবাড়িয়ার সুস্বাদু লিচু ফলপ্রেমীদের তৃপ্তি মিটিয়ে আসছে।

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের মো.

হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে লিচু চাষ করছেন। এ বছর তার বাগানে ৩০ থেকে ৩৫টি গাছে থোকায় থোকায় লিচু ধরেছে। তিনি জানান, আমরা কয়েক প্রজন্ম ধরে লিচু চাষ করছি। আমাদের বাড়িতে ১৫০ বছরের পুরনো গাছও আছে। এমন তিনটি গাছ থেকেই প্রায় ২ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়। এ বছর নতুন আরো একটি বাগানে লিচুর ব্যাপক ফলন হয়েছে। আশা করছি, সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হবে। সেখান থেকে ভালো লাভও হবে।
 
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রথম বাণিজ‌্যিকভাবে লিচু চাষের উদ‌্যোগ নেন তৌহিদুল ইসলাম। তার হাত ধরেই গ্রামের প্রতিটি আঙিনায় লিচুর চাষ শুরু হয়। 

তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রথম প্রথম লিচু চাষ করে ভালো ফলন পেলেও যাতায়াত ব‌্যবস্থা ভাল না থাকায় ভাল দাম ও প্রচার পেতে প্রচুর কষ্ট করতে হয়েছে এখানকার চাষিদের। ধীরে ধীরে এ অঞ্চলের লিচু সারা দেশে ব‌্যাপক সাড়া ফেলে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এখানকার চাষিদের। লিচু চাষে ভাগ্য বদলেছে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের হাজারও মানুষের। 

প্রতি মৌসুমে লিচু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের চাষিরা। বর্তমানে এ গ্রামের বেশিরভাগ কৃষকের উপার্জনের মূল উৎস লিচু। অনেক কৃষকেরই আছে শতাধিক লিচু গাছ। লিচু চাষ এ এলাকার কৃষকদের জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে। লিচু বিক্রির টাকাতেই সারা বছরের ব্যয় নির্বাহ করেন তারা। লিচু বাগানগুলোতে কর্মসংস্থান হয়েছে শত শত শ্রমিকের।

কথা হয় কিছু নবীন উদ্যোক্তার সঙ্গে। তারা জানান, বাপ-দাদাদের দেখানো পথে হাঁটছে এ অঞ্চলের নতুন প্রজন্ম। লেখাপড়ার পাশাপাশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন লিচু চাষে। কম পরিশ্রমে লাভ বেশি। তাই, দিন দিন লিচু চাষ বাড়ছে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে। লিচু চাষে খরচ খুবই কম। সে তুলনায় লাভ অনেক বেশি।

তারা মনে করেন, শুধু লিচুর মাধ‌্যমে দেশের বাইরেও মঙ্গলবাড়িয়ার সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে। একসময় তাদের হাত ধরেই আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে এখানকার লিচু চাষ। পাল্টাবে অর্থনৈতিক চিত্র। মঙ্গলবাড়িয়া লিচুর জন‌্য হয়ে উঠবে একটি মডেল গ্রাম। 

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে ২০ দিন ধরে চলছে লিচু আহরণের কাজ। আরো কিছুদিন তা চলবে। বেশিরভাগ গাছেই লিচু পেকে গাঢ় লাল রঙের হয়েছে। বিক্রি হয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ লিচু। কিছু গাছে লিচুর রং গাঢ় সবুজ থেকে লাল হতে শুরু করেছে। শেষ সময়ে চাষিরাও নিয়মিত লিচুগাছ পরিচর্যায় ব‌্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর ফলন ভাল হলেও তীব্র খরায় প্রথমে আকারে কিছুটা ছোট ছিল। শেষে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আকার বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। পাইকার বা খুচরা ক্রেতা আসলেই গাছ বুঝে দর-দাম কষে বিক্রি হচ্ছে লিচু। রাস্তার দুই ধারে লিচু গাছগুলোর সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে লাল রঙের রসালো পাকা লিচুগুলো দেখলে মনে হয়, প্রকৃতি যেন অপরূপ সৌন্দর্য‌্য দিয়ে ঢেলে সাজিয়েছে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামকে।

অনেকে ঘুরতে আসেন লিচুর গ্রাম খ্যাত মঙ্গলবাড়িয়ায়। তারা সারি সারি লিচুর গাছ দেখে বিমোহিত হন। কেউ ছবি তোলেন বা ভিডিও করেন। তাদের বেশিরভাগই পছন্দমতো লিচু কিনে নিয়ে যান। মঙ্গলবাড়িয়া গ্রাম এখন দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর স্বাদ নিতে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই সকাল-বিকেল ভিড় করছেন লিচু বাগানে। এ সময়ে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে যেন ঈদের আমেজ থাকে। গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে ভিড় করেন আত্মীয়-স্বজনরাও।

ইউটিউবে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর ভিডিও দেখেছেন রেজিয়া পারভীন। তারপর নরসিংদীর বেলাবো থেকে ঘুরতে এসে প্রথমে গাছপাকা লিচু খেয়েছেন, তার পর বাড়ির সবার জন্য কিনেছেন ১ হাজার লিচু। 

রেজিয়া পারভীন বলেন, অনেক ভিডিও দেখছি এ গ্রামের। বলা যায়, একপ্রকার ভাইরাল লিচুর গ্রাম। এসেও তা-ই দেখলাম। বিকেলে প্রচুর মানুষজন আসছে, ছবি তুলছে, লিচু কিনছে, খাচ্ছে ও নিয়ে যাচ্ছে। প্রথমে দাম একটু বেশি মনে হয়েছে। খাওয়ার পরে মনে হয়েছে, স্বাদ অনুযায়ী দাম ঠিকই আছে। লিচুর আকৃতি অনুযায়ী ২০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার লিচু এখানে পাওয়া যাচ্ছে।

বিক্রেতা মানিক মিয়া জানিয়েছেন, সারা দেশেই মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর খ‌্যাতি আছে। তাই, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন শত শত পাইকার ও খুচরা ক্রেতা। আকারভেদে প্রতি ১০০ লিচু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। প্রবাসী বাঙালিরাও এ লিচুর স্বাদ নিচ্ছেন বহু বছর ধরে। একবার যারা এ লিচুর স্বাদ পেয়েছেন, তারা প্রতি মৌসুমেই এখানে চলে আসেন।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-ই-আলম জানিয়েছেন, মঙ্গলবাড়িয়া ও আশপাশের তিনটি গ্রামে ৮ হাজারের বেশি ছোট-বড় লিচু গাছ আছে। স্থানীয়ভাবে এ জাতের লিচু খুবই ভাল। গাছে মুকুল ধরা থেকে শুরু করে ফল আহরণ এবং বিক্রির সময়টুকু পর্যন্ত যাবতীয় তদারকি করে থাকেন স্থানীয় কৃষি অফিসাররা। যেসব কৃষক অন্যান্য ফসলে লাভবান হতে পারেননি, তারা এখন লিচু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি তরুণ উদ‌্যোক্তাও তৈরি হয়েছে, যারা পড়াশোনার পাশাপাশি লিচু চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

ঢাকা/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ষ কর করছ ন এ বছর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

বাণিজ্যবিরোধ: ভারত কেন ট্রাম্পের নিশানায়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের বাণিজ্যনীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর হোয়াইট হাউসের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই এ আক্রমণের মাত্রা বেড়েছে।  

ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করছে এবং এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাম্প যখন বিশ্বের বহু দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছিলেন, তখনই ভারতকে উদ্দেশ করে তাঁর এমন কঠোর অবস্থান সামনে উঠে আসে।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

‘ভারতের শুল্ক বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ’, গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প। জবাবে ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের বক্তব্য ‘লক্ষ্য করেছে’ এবং এর ‘প্রভাব মূল্যায়ন’ করবে।

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্যবিরোধ: পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়ে

আজ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ধার্য করা ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ঘোষিত সম্ভাব্য শুল্ক থেকে মাত্র ১ শতাংশ কম।

এ হার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে  চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ শুল্ক ভারতের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা আরও জটিল করে তুলতে পারে। একাধিক দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ১২তম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ভারত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়া অনেক কোম্পানির নতুন গন্তব্য হয়েছে দেশটি। মে মাসে অ্যাপলের সিইও টিম কুক জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য আইফোন এখন ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে; যাতে উচ্চ শুল্ক এড়ানো যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ওটিআর) তথ্যমতে, গত বছর ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১২৯ বিলিয়ন (১২ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার। ভারতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও কৃষিপণ্য।

ট্রাম্প কেন ভারতকে নিশানা করছেন

সম্প্রতি ট্রাম্প একাধিকবার বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভারতের ‘অতি উচ্চ’ শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যও রয়েছে।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘বছরের পর বছর আমরা ভারতের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক অত্যন্ত বেশি।’

এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে ভারত কিছু পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করেছে।

ওটিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পণ্যবাণিজ্যে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন (৪ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের ঘাটতি দেখেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তুলনামূলকভাবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রায় ২৯৫ বিলিয়ন (২৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের বাণিজ্যঘাটতিতে ছিল।

আরও পড়ুনভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা, ইরানের পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ ৩১ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্প আরও ক্ষুব্ধ যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।

‘এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা’, বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন ট্রাম্প।

ভারতের প্রতিক্রিয়া

এ সপ্তাহে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারত সরকার ট্রাম্পের ওই বক্তব্যে তুলনামূলকভাবে মৃদু, তবে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ভারতের ওপর ধার্য করা শুল্কহার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম।

বুধবার দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক মাস ধরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।’

আগস্টের শেষ দিকে দুই দেশের মধ্যে আরেক দফা বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’৩০ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কী বলছেন অর্থনীতিবিদেরা১৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ