আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। একই নির্দেশনায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরও বন্ধ করা হয়েছে।

বিবিসির তথ্য, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বৃহস্পতিবার এক্স পোস্টে লিখেছেন, আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ায় হার্ভার্ডের ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম সার্টিফিকেশন’ বাতিল করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।

প্রশাসন মনে করছে,‘‘হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশনা আমেরিকার অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা হবে।”

আরো পড়ুন:

ওয়াশিংটনে বন্দুক হামলায় নিহত ২ দূতাবাস কর্মীর নাম জানাল ইসরায়েল

যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষায় ‘গোল্ডেন ডোম’ নির্মাণের ঘোষণা ট্রাম্পের

প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে হার্ভার্ড।  শুধু তাই না ট্রাম্প প্রশাসনের এই নির্দেশনাকে দেশের জন্য গুরুতর হুমকি মনে করছে। 

হার্ভার্ডের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘১৪০টিরও বেশি দেশের শিক্ষার্থী এবং পণ্ডিতদের সুযোগ দেওয়া হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও এই জাতিকে অমিতভাবে সমৃদ্ধ করতে হার্ভার্ডের যে ক্ষমতা, সেটি ধরে রাখতে আমরা পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

হার্ভার্ডের ওপর ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ এনেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সবশেষ গত সোমবার ইহুদি শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ ও জাতিগত হয়রানির অভিযোগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ৬ কোটি ডলারের ফেডারেল অনুদান বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব সেবা মন্ত্রণালয় (এইচএইচএস)।

রয়টার্স জানিয়েছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও কথিত ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ক্যাম্পাসে এই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পরেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তায় পড়েছেন হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী। 

সারাহ ডেভিস নামের অস্ট্রেলিয়ান এক শিক্ষার্থী বিবিসি নিউজআওয়ারকে বলেন, ‘‘আমাদের অনেকেরই স্নাতক হওয়ার মাত্র পাঁচ দিন আগে খবরটি এলো। এখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে এবং এখানে কাজ করতে পারব কি না, সেটি অনিশ্চিত হয়ে গেছে।”

অনেক শিক্ষার্থী এখনও বিশ্বাসই করতে পারছেন না এই নির্দেশনা তারা এই সিদ্ধান্তকে অমানবিক বলে উল্লেখ করছেন।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ