রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে দীর্ঘ ১৩ বছরের এক অসাধারণ যাত্রার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল যাদুকর লুকা মদ্রিচ এবার আলবিদা জানাতে যাচ্ছেন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুকে। ক্লাব ও খেলোয়াড়—উভয়ের পক্ষ থেকেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে যে, চলতি মৌসুম শেষে আর রিয়ালের হয়ে খেলবেন না এই মিডফিল্ড জিনিয়াস।
আগামীকাল শনিবার (২৪ মে) লা লিগার শেষ ম্যাচে রিয়াল সোসিয়েদাদের মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ। এই ম্যাচেই শেষবারের মতো বার্নাব্যুর গ্যালারিকে বিদায়ী অভিনন্দন জানাবেন মদ্রিচ। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত ক্লাব বিশ্বকাপের পরই সম্পূর্ণভাবে পর্দা নামবে তার রিয়াল অধ্যায়ে।
২০১৮ সালে ব্যালন ডি’অর জয়ের মাধ্যমে মেসি-রোনালদো আধিপত্যের যুগে নিজের একক প্রতিভায় দাগ কাটেন মদ্রিচ। ফুটবলবিশ্বে তখন বিস্ময় জাগিয়েছিলেন এই মধ্যমাঠের কারিগর।
আরো পড়ুন:
বার্সেলোনার হোঁচট, রিয়ালের জয়ে পিচিচির দৌড়ে এগিয়ে এমবাপ্পে
কোচ হিসেবে রিয়ালে ফিরলেন জাবি আলোনসো
বিদায়বার্তায় আবেগঘন কণ্ঠে ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, “এই ক্লাব, এর সভাপতি, আমার কোচ এবং প্রতিটি সতীর্থকে জানাই হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা। বার্নাব্যুতে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আমার জীবনের অমূল্য স্মৃতি হয়ে থাকবে।’’
রিয়াল মাদ্রিদও এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মদ্রিচের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছে। ক্লাবটি বলেছে, “২০১২ সালে টটেনহ্যাম থেকে যোগ দেওয়ার পর থেকে লুকা মদ্রিচ ক্লাব ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়ে পরিণত হয়েছেন।”
গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রিয়ালের মাঝমাঠে ছন্দের সুর বয়ে এনেছেন মদ্রিচ। ক্লাবের হয়ে ৫৯০টি ম্যাচে অংশ নিয়ে করেছেন ৪৩টি গোল, সঙ্গে ৯৫টি অ্যাসিস্ট। এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি ঘরে তুলেছেন মোট ২৮টি শিরোপা— যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৬টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ৬টি ক্লাব বিশ্বকাপ, ৫টি উয়েফা সুপার কাপ, ৪টি লা লিগা ট্রফি, ২টি কোপা দেল রে ও ৫টি স্প্যানিশ সুপার কাপ।
আজ যখন বিদায়ের ঘোষণা এলো, তখন বার্নাব্যুর প্রতিটি কোণ যেন স্মরণ করছে তার নিখুঁত পাস, নির্মোহ খেলোয়াড়ত্ব আর লড়াকু মানসিকতাকে। সময় বলে দিচ্ছে— একজন মদ্রিচের জায়গা হয় না আরেকজন মদ্রিচ দিয়ে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
আরো পড়ুন:
৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া
মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।
তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।
বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ