ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নারী চিকিৎসকের ৯ শিশুসন্তান নিহত
Published: 24th, May 2025 GMT
ইসরায়েলের হামলায় গাজার এক নারী চিকিৎসকের ১০ শিশুসন্তানের মধ্যে ৯ জন নিহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ওই চিকিৎসকের বাড়িতে হামলা চালানো হলে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় ওই চিকিৎসকের স্বামী ও এক সন্তান গুরুতর আহত হয়েছেন।
ওই চিকিৎসকের নাম আলা আল-নাজ্জার। তিনি দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে কাজ করেন। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল শুক্রবার জানিয়েছেন, হামলার পর নাজ্জারের বাসা থেকে নয়টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আলবোরশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন, চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারকে তাঁর কর্মস্থলে দিয়ে বাসায় ফেরেন তাঁর স্বামী হামদি। এরপর কয়েক মিনিটের মধ্যে তাঁদের বাসায় হামলা চালানো হয়।
ওই চিকিৎসকের আত্মীয় ইউসেফ আল-নাজ্জার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। আমাদের মাফ করুন। সব দেশ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সব মানুষ, হামাস—সবার কাছে বলছি, আমাদের ওপর দয়া দেখান। বারবার ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে যেতে আর ক্ষুধায় আমরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।’
আরও পড়ুনগাজায় নৃশংসতার পর ইউরোপ কি ইসরায়েলকে পরিত্যাগ করছে২ ঘণ্টা আগেএদিকে আজ শনিবারও গাজায় নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আজ দুপুর থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাটিতে ইসরায়েলে হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত হন। এর মধ্যে দক্ষিণ গাজায় ত্রাণের ময়দা বহনকারী একটি ট্রাকে হামলা চালানো হলে নিহত হন পাঁচ ফিলিস্তিনি। আর উত্তর গাজার জাবালিয়ায় একটি পরিবারের বাড়িতে হামলার পর প্রায় ৫০ জন নিহত বা নিখোঁজ রয়েছেন।
আরও পড়ুনযে শিশুদের আত্মারা তাড়িয়ে বেড়াবে ইসরায়েলকে৪ ঘণ্টা আগেগাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১৯ মাস ধরে চলমান ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৫৩ হাজার ৯০১ জন নিহত হয়েছেন। এই সময়ে আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৫৯৩ জন। আর উপত্যকাটির জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৬১ হাজার ৭০০ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া ব্যক্তিদের মৃত ধরে এ হিসাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুনজেরুজালেমে প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো মাজার দখল করে বাড়িতে রূপান্তর করেছেন এক ইসরায়েলি২৩ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ন হত
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস