পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় পায়রা বন্দর নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত ছ-আনিপাড়া রাখাইন পল্লিবাসীর উপযুক্ত পুনর্বাসন দাবি করেছে উচ্ছেদ হওয়া ছয়টি পরিবার। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়। 

নাগরিক সংগঠন ‘নাগরিক উদ্যোগ’ এবং উচ্ছেদকৃত ছয়টি রাখাইন পরিবার যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন ছ-আনীপাড়া রাখাইন পল্লীবাসীর পক্ষে চিংদামো রাখাইন। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কোষাধ্যক্ষ মেইনথিন প্রমীলা, মানবাধিকার কর্মী দিপায়ন খীসা, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন এবং উচ্ছেদকৃত ছয়টি রাখাইন পরিবারের প্রতিনিধিরা। 

সভায় বলা হয়, পায়রা বন্দর নির্মাণের জন্য দ্বিতীয় দফায় জমি অধিগ্রহণের সময় ছয়টি রাখাইন পরিবারের ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বসতভিটা অধিগ্রহণ করা হয়। পরিবারগুলোর সঙ্গে পূর্ব কোনো আলোচনা ছাড়াই তাদের বসতবাড়ি অধিগ্রহণ করা হয়। অধিগ্রহণের পর শুধুমাত্র গাছপালা ও বসতবাড়ির ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা দেওয়া হলেও ভোগদখলকৃত জমির ক্ষতিপূরণ এখনো পরিবারগুলো পায়নি। 

বক্তারা বলেন, পরবর্তীতে পরিবারগুলোর দাবি ও আলোচনার প্রেক্ষিতে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ছ-আনীপাড়া রাখাইন পল্লির ছয়টি পরিবারকে কলাপাড়া উপজেলায় উপযুক্ত স্থানে পুনর্বাসনের জন্য লিখিত নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, দীর্ঘ ৩৭ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও কার্যকর কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। একইসঙ্গে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত প্রতিমাসে পরিবার প্রতি পাঁচ হাজার টাকা বাসাভাড়া দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, মাত্র ছয়মাস পর এই ভাতা বন্ধ করে দেয়। 

সভায় ছ-আনীপাড়া রাখাইন পল্লিবাসীর পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হচ্ছে- রাখাইনদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে কলাপাড়া উপজেলায় কোনো বিদ্যমান রাখাইন পল্লির সন্নিকটে আমাদের পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতিমাসে পরিবার প্রতি পাঁচ হাজার টাকা বাসা ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে।

অন্যান্য রাখাইন পল্লির বেদখলকৃত শ্মশানগুলো পুনরুদ্ধার করে, সেগুলোর যথাযথ সংস্কারের মাধ্যমে রাখাইন জনগোষ্ঠীর কাছে হস্তান্তর করতে হবে। রাখাইনদের ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থানগুলো নিজস্ব সংরক্ষিত এলাকা কোনোভাবেই অধিগ্রহণ করা যাবে না। রাখাইন এলাকায় রাখাইন জনগোষ্ঠীর সম্মতি ছাড়া জমিতে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কল প ড় পর ব র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরে বালতি থেকে ককটেল ছুড়তে ছুড়তে সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ

একদল তরুণ ও যুবক বালতি হাতে দৌড়াচ্ছেন। কিছু একটা তুলছেন আর ছুড়ে মারছেন। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হচ্ছে। ধোঁয়ায় চারদিক আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে।

শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামে এভাবে ৬০-৭০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আজ রোববার সকালে বিবদমান দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।

এর আগে এ বছরের ৫ এপ্রিল ঠিক একইভাবে বিলাসপুর এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।

জাজিরা থানা সূত্র জানায়, জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন ব্যাপারী এবং একই এলাকার তাইজুল ইসলাম ছৈয়ালের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ আছে। দুজনই বিলাসপুরের চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। নাসির উদ্দিন বিলাসপুরের চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী এবং তাইজুল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল জলিল মাতবরের সমর্থক।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, আজ ওই দুই পক্ষের লোকজন গ্রামের দুটি স্থানে অবস্থান নিয়ে একে অপরের ওপর ককটেল ছুড়ে মারেন। তাঁরা দুই পক্ষের সমর্থকদের বসতবাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন অন্তত ৬০-৭০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। ওই ঘটনায় দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

দুই পক্ষের সমর্থকদের বসতবাড়িতেও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুরে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরে বালতি থেকে ককটেল ছুড়তে ছুড়তে সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ