বাংলাদেশের মানচিত্র শেয়ার করে বিতর্কিত মন্তব্য আসামের মুখ্যমন্ত্রীর
Published: 26th, May 2025 GMT
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বাংলাদেশের মানচিত্র নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন।
রবিবার (২৫ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ বাংলাদেশের মানচিত্রের ছবি পোস্ট করে তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের নিজস্ব দুটি ‘চিকেন নেক’ রয়েছে, যেগুলো ভারতের শিলিগুড়ির চেয়ে আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
এমনকি রংপুর আর চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেও হুমকি দিয়েছেন তিনি। খবর এনডিটিভির।
আরো পড়ুন:
আসামে অবৈধ বাংলাদেশি সন্দেহে দেড় শতাধিক আটক, জনতার বিক্ষোভ
মুকুল দেবের সংসার কেন ভেঙেছিল?
খবরে বলা হয়েছে, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রবিবার বাংলাদেশের উদ্দেশে ‘কড়া প্রতিক্রিয়া’ জানিয়ে বলেন, “যারা ভারতের ‘চিকেন নেক’ করিডোর নিয়ে বারবার হুমকি দেন, তাদের মনে রাখা উচিত- বাংলাদেশের নিজস্বও দুটি ‘চিকেন নেক’ রয়েছে, যেগুলো নিরাপত্তার দিক থেকে আরো বেশি স্পর্শকাতর।”
“যার প্রথমটি উত্তর বাংলাদেশ করিডোর (প্রথম ‘চিকেন নেক’)। এ করিডোরটি ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ। ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের সঙ্গে সংযুক্ত দক্ষিণ-পশ্চিম গারো হিলস পর্যন্ত বিস্তৃত।”
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দাবি, এ পথ বাধাগ্রস্ত হলে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
“আর দ্বিতীয় করিডোরটি (চট্টগ্রাম করিডোর বা দ্বিতীয় ‘চিকেন নেক’) আরো ছোট- মাত্র ২৮ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে রাজনৈতিক রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করে।”
হিমন্তের দাবি, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অর্থনৈতিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে রাজনৈতিক রাজধানী ঢাকাও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
তার মতে, তিনি শুধু ভৌগোলিক বাস্তবতা তুলে ধরেছেন, যেগুলো অনেকে ভুলে যেতে পারেন।’
মূলত ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরকেই বলা হয় ‘চিকেন নেক’। এটি মাত্র ২০ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে অবস্থিত। এই করিডোর দিয়েই ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যে রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ করা হয়। করিডোরটির উত্তরে নেপাল ও ভুটান, আর দক্ষিণে বাংলাদেশ।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী ‘চিকেন নেক’কে কার্যকরভাবে এড়িয়ে উত্তর-পূর্বকে ভারতের বাকি অংশের সাথে সংযুক্ত করার বিকল্প সড়ক পথ অনুসন্ধানকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ড র মন ত র হ মন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ইস্তাম্বুলের অলৌকিক রাত: ছয় মিনিটের ম্যাজিকে লিভারপুলের অসম্ভবকে সম্ভব করার গল্প
চ্যাম্পিয়নস লিগ তো বটেই, অনেকের কাছে ম্যাচটি ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসেই অন্যতম সেরা। বলা হচ্ছে, ২০০৪–০৫ মৌসুমে লিভারপুল–এসি মিলানের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের কথা। অবিশ্বাস্য সে ম্যাচটিকে ফুটবল বিশ্ব মনে রেখেছে, ‘মিরাকল অব ইস্তাম্বুল’ নামে। ইস্তাম্বুলে সেদিন ম্যাচের ৪৪ মিনিটের মধ্যে ৩–০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল লিভারপুল। কিন্তু বিরতির পর ভোজবাজির মতো বদলে যায় সব। ৫৪ থেকে ৬০—এই ছয় মিনিটের মধ্যে ৩ গোল করে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচে সমতা ফেরায় লিভারপুল। এরপর টাইব্রেকারে গিয়ে রাফায়েল বেনিতেজের দল ফাইনাল জিতে নেয় ৩–২ গোলে। সেদিন ৩ গোলে পিছিয়ে পড়েও কীভাবে লিভারপুল প্রত্যাবর্তনের অবিশ্বাস্য গল্প লিখেছিল, তা উঠে এসেছে দলটির তখনকার অধিনায়ক কিংবদন্তি স্টিভেন জেরার্ডের ‘জেরার্ড মাই অটোবায়োগ্রাফি’ বইয়ে। আজ আরও একটা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল সামনে রেখে লিভারপুলের সেই রূপকথার মতো প্রত্যাবর্তনের গল্প।দ্বিতীয়ার্ধে যা ঘটেছিল, কী লিখেছেন জেরার্ড
অবিশ্বাস্য! লিভারপুল ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে। কাকা ও ক্রেসপোয় বিধ্বস্ত। আমাদের সমর্থকেরা গাইছে ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’।
সব খেলোয়াড় একে অন্যের দিকে বিস্ময় আর গর্ব নিয়ে তাকালাম। আমি চিৎকার করে বললাম, ‘তারা এখনো আমাদের ওপর থেকে বিশ্বাস হারায়নি। তাই আমরাও হাল ছাড়তে পারি না। চলো তাদের উল্লাস করার মতো কিছু দেওয়া যাক। তারা অনেক টাকা খরচ করেছে। তারা আমাদের নামে ধরে গান গাইছে আর আমরা ৩ গোল খেয়ে স্তব্ধ হয়ে গেছি। যদি আমরা একটা গোল দিতে পারি, তারা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে আমাদের পাশে থাকবে। সেটা আমাদের আরও একটা দেওয়ার জন্য সাহস দেবে। চলো এগিয়ে যাই।’
অধিনায়ক হিসেবে ঘুরে দাঁড়ানোয় নেতৃত্ব দেওয়াটা আমার দায়িত্ব ছিল। যখন টানেল দিয়ে ঝড়ের মতো ছুটে আসছিলাম, চোখ ছিল মিলান খেলোয়াড়দের দিকে। ওদের বিভ্রান্ত মনে হলো। কারণ, ওরা যখন মাঠে ফিরছিল, শুধুই লিভারপুল সমর্থকদের চিৎকার শোনা যাচ্ছিল। এমনকি আমাদের প্রতি সমর্থনের গর্জন শুনে আমি নিজেও ধাক্কা খেয়েছিলাম। মিলানের সমর্থকেরাও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল।
লিভারপুলের হাতে ছিল মাত্র ৪৫ মিনিট—তিনটা গোল করতে হবে। খেলা আবার শুরু হতেই আমি দলকে চিৎকার করে বললাম, ‘ঝাঁপিয়ে পড়ো!’
সঙ্গে সঙ্গে আমরা এটাও টের পেলাম যে চ্যালেঞ্জটা কত বিশাল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই শেভচেঙ্কো একটা ফ্রি-কিক নিল, তবে জার্জি (ডুডেক) সেটা হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ফিরিয়ে দিল। আমি যেটাকে বলি ‘ক্যামেরা সেভ’, মানে টেলিভিশনে ভালো দেখায় এমন সেভ। ওটা কোনো দুর্দান্ত ফ্রি-কিক ছিল না। যেকোনো গোলকিপারই ওটা ঠেকাতে পারত।
লিভারপুল কিংবদন্তি স্টিভেন জেরার্ড